April 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, November 3rd, 2022, 8:31 pm

বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশ: আগেভাগেই উপস্থিত নেতাকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আগামীকাল শনিবার বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে গণপরিবহন বন্ধের শঙ্কায় দুদিন আগেই বিভিন্ন জেলা থেকে বরিশাল নগরীতে আসেন শতশত নেতাকর্মী। তাদের মধ্যে কেউ আবাসিক হোটেলে উঠেছেন, কেউ বা উঠেছেন স্বজনদের বাড়িতে। এদিকে, বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশে জনস্রোত ঠেকাতে ভীতি ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন দলীয় নেতারা। পরিবেশ নষ্ট করতে ও ভীতি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে গত বুধবার বিকেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে নগরজুড়ে মহড়া দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া বিএনপির এই গণসমাবেশের আগে গত বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। ভীতি ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই এ তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে দাবি বিএনপি নেতাদের। গণসমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক (বরিশাল বিভাগ) সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন বলেন, ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে নানা অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। গণসমাবেশ সফল করতে লিফলেট বিতরণকালে বরিশালের বানারীপাড়া, উজিরপুর ও বাকেরগঞ্জে হামলা চালানো হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত। এতে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। তবে গণসমাবেশের জনস্রোত বাধা বা ভীতি ছড়িয়ে ঠেকানো সম্ভব না। তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে ভোলা ও ঝালকাঠিসহ বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক নেতাকর্মী বরিশাল নগরীতে এসেছেন। বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, ৫ নভেম্বর বরিশালে বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা চাঙা হয়ে উঠেছেন। এরইমধ্যে গণসমাবেশ আয়োজনে নানা প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা বিভাগের ছয় জেলার নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বৈঠক করছেন। নগরীসহ গ্রামগঞ্জের লোকজনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা গেছে। সমাবেশ আয়োজনের প্রায় সব প্রস্তুতি শেষের দিকে। নগরীর বেলসপার্কে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। তিনি বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ভীত হয়ে সরকারি দল বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে ৫ নভেম্বর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। যে জনউৎসাহ দেখা দিয়েছে, সেটা কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না। এ বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, গণসমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা গেছে। তবে এসবের মধ্যে নগরীর সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করতে ও ভীতি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শতাধিক মোটরসাইকেল নগরজুড়ে মহড়া দিয়েছে। যদিও আমরা তাদের এসব পরোয়া করি না। এতে কোনো কাজ হবে না। গণতন্ত্র উদ্ধারের এ আন্দোলনে বিএনপি এখন ভয়ডরহীন। তিনি বলেন, বিকেলে নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া তারা কাউকে হয়রানি করবে না। আমরা আশা করবো, পুলিশ কথা রাখবে। মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, বাধা-প্রতিবন্ধকতা আসলেও তা উপেক্ষা করে ৫ নভেম্বর গণসমাবেশে মানুষের ঢল নামবে। স্মরণকালের বড় সমাবেশ হবে বরিশালে। সমাবেশ কেন্দ্র করে গণপরিবহন বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, এটা আমরা আগেই ধারণা করেছিলাম। এরপর তিন চাকার যান বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আশঙ্কা করছি ৪ ও ৫ নভেম্বর ট্রাক-লঞ্চ এমনকী খেয়াঘাটও বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। বিষয়টি মাথায় নিয়েই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সেভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গাড়ি, লঞ্চ, ফেরি কোনো কিছুই না চললে প্রয়োজনে হেঁটে, নদী সাঁতরে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা গণসমাবেশে যোগ দেবেন। বাধার কারণে গণসমাবেশে জনসমাগম আরও বাড়বে। এরইমধ্যে ভোলার লালমোহন, চরফ্যাশন ও ঝালকাঠি থেকে অনেক নেতাকর্মী নগরীতে এসেছেন। বরিশাল মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ডের বিএনপি নেতাদের নগরীর বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মী, সমর্থক বা লোকজনের মেহমানদারি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এক একজনের বাসায় ২০-২৫ জনকে রেখে তাদের খাওয়া-দাওয়াসহ সব ধরনের ব্যবস্থার আয়োজন থাকছে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল নিয়ে নগরীতে মহড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্না দাবি করেন, ঢাকায় যুবলীগের সম্মেলন সফল করার জন্য তারা নেতাকর্মীদের সংগঠিত করছেন। সেই প্রচারের অংশ হিসেবে মিছিল করেছেন। এছাড়া আবাসিক হোটেলে তল্লাশি চালানোর বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সগীর হোসেন বলেন, নগরীর আবাসিক হোটেলে গণভাবে তল্লাশি চালানোর কথা ঠিক নয়। নগরীর হেমায়েত উদ্দিন সড়কের কয়েকটি আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কাজের অভিযোগ ছিল। তাই সেখানকার কয়েকটি আবাসিক হোটেলে পুলিশ তল্লাশি চালায়।