জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসন থেকে শেরে বাংলার নাতি এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে সাম্প্রতিক নানা ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নানা দ্বিধা বিভক্তির মধ্যে ফাইয়াজুল হক রাজুকে ঘিরে তৃণমূল আওয়ামী লীগে আশার সঞ্চার হয়েছে। ফাইয়াজুল হক রাজু’র দাদা শেরে বাংলা ছিলেন উপমহাদেশ জুড়ে, আর বাবা একে ফায়জুল হক ছিলেন এই আসনের চার বারের এমপি ও মন্ত্রী। তাই দলীয় মোড়কের বাইরেও রাজুর গ্রহণযোগ্যতাকে অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেছনে তৃণমূল আওয়ামীলীগ নেতারা।
সরেজমিনে ঘুরে এবং স্থানীয় অনেক প্রবীণদের সাথে বললে তারা শেরে বাংলার স্মৃতিচারণ করেন। বঙ্গবন্ধু ও শেরে বাংলার মধ্যে যে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ছিল তা নিয়ে এখানের মানুষ গর্ববোধ করেন। শেরে বাংলার লাহোর প্রস্তাব থেকে বঙ্গবন্ধু ছয়দফা এখানের জনসাধারণের মধ্যে গভীরভাবে গেঁথে আছে। এ আসনের সাধারণ মানুষ রাজনীতির এ দুই কিংবদন্তিকে এক অভিন্ন চেতনার বাতিঘর হিসেবে ভাবেন, বঙ্গবন্ধু ও শেরে বাংলা একে অপরের সঙ্গে যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল- তা নিয়ে তারা আজো গল্প করেন।
পৌর আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা বলেন, তৃণমূল আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ যারা হয়ত রাজনৈতিক সমীকরণ বা ভৌগলিক কারনে হয়ত সামনে আসতে পারেন না তবে ভেতরে ভেতরে নির্মোহ রাজনীতির জন্য রাজু ভাইয়ের প্রতি মৌন সমর্থন তৈরি হয়েছে তা অকল্পনীয়। একটা দীর্ঘ সময় তিনি বানারীপাড়া-উজিরপুরের তৃণমূলকে দিয়েছেন, কোরাম করেননি, যার ফলে গ্রহণযোগ্যতাও বেড়েছে। গণমাধ্যমে তাঁর নিয়মিত উপস্থিতি রাজনৈতিক বিশ্লেষণের বিচক্ষণতাও তৃণমূলকে উজ্জীবিত করে।
‘ একথা বলা যায় উপমহাদেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের জীবন মান উন্নয়ন ও মুক্তি সংগ্রামে আমার পরিবার যুক্ত আছে এক শতাব্দিরও বেশি সময় ধরে’ বলেন এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু। নিজের রাজনৈতিক যাত্রা নিয়ে রাজু বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত। শেরে বাংলার নাতি বলে বিএনপি জামাত ছেড়ে কথা বলেনি, পোহাতে হয়েছে সে যন্ত্রণা। সেনা সমর্থিত সরকারের চাপ টলাতে পারেনি এক বিন্দু। আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনার সঙ্গে আছি শেরে বাংলার আদর্শিক প্রজ্ঞা নিয়ে, আর মননে রেখেছি বঙ্গবন্ধুকে।
দাদা বাবার দীর্ঘ রাজনৈতিক ভূমিকার বাইরেও বানারীপাড়া উজিরপুরের তৃণমূল আওয়ামী লীগে তার স্বচ্ছ রাজনীতি সমাদৃত। শেরে বাংলার নাতির প্রতি এ অঞ্চলের মানুষের দলমত নির্বিশেষে এক ভিন্ন আবেগ আছে জানেন রাজু। তিনি বলেন, কিছুটা বাড়তি চাপও থাকে। আমার কোনো কোরাম নেই, ফোরাম নেই, এ অঞ্চলের প্রতিটি ইঞ্চি কনার সঙ্গে আমার নাড়ির সম্পর্ক।
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে রাজু বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছরের যে যাত্রা তা সাংবিধানিক কাঠামোতে গেলে তখনই কেবল সবটুকু দিয়ে মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন সম্ভব। আমার প্রতি মানুষের এত এত প্রত্যাশা থেকে পালানোর পথ নেই। আমার ও আমার অঞ্চলের মানুষের বিশ্বাস, দল এবার তাদের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিবে।
উল্লেখ্য, বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মাঝি হতে ২০ জন প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ২০১৪ ও ২০১৮ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ফাইয়াজুল হক রাজুর নাম শোনা গিয়েছিল।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি