April 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, March 9th, 2022, 8:40 pm

বর্তমানে ডিজেল বিক্রিতে লিটারপ্রতি ২০ টাকা লোকসান গুনছে বিপিসি

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিশ্ববাজারে ঊর্ধ্বমুখি জ্বালানি তেলের দামে বর্তমানে বাংলাদেম পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) লিটারপ্রতি ডিজেল বিক্রিতে ২০ টাকা লোকসান গুনছে। দেশে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকে কমবেশি ৬০ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে ১৫ লাখ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল (অপরিশোধিত জ্বালানি তেল) ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করা হয়। বাকি ৪৫ লাখ টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে বিপিসি। আন্তর্জাতিক বাজারে পরিশোধিত ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি কমবেশি ৮০ ডলার হলে বিপিসিকে কোনো লোকসান দিতে হয় না। কিন্তু বর্তমানে ওই ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩৪ ডলারে উঠেছে। তবে বর্তমানে বিপিসি বিপুল ভর্তুকি দিলেও সরকার এ পর্যায়ে ডিজেলের দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে না। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জ্বালানি ও পরিবহন ব্যবস্থায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলসহ সব ধরনের জ্বালানির দাম বেড়েছে। দেশে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল ব্যবহার হয় তার ৭৩ শতাংশেরও বেশি ডিজেল। সড়ক ও নৌপরিবহন, কৃষির সেচপাম্প এবং বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ নানা ক্ষেত্রে ডিজেলের ব্যবহার রয়েছে। বাজারে বর্তমানে ৮০ টাকা লিটারে ডিজেল বিক্রি করে সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও যমুনা অয়েল কোম্পানি।
সূত্র জানায়, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলের দামের সঙ্গে ব্যারেলপ্রতি দুই ডলার ৮৩ সেন্ট প্রিমিয়াম, লিটারপ্রতি প্রায় ১৯ টাকা আমদানি কর (ভ্যাট-ট্যাক্স মিলে), বন্দর ব্যয়, কোম্পানি কমিশন, পরিবহন ব্যয়, অপারেশন ও হ্যান্ডলিং লস, অন্যান্য লস মিলিয়ে ডিজেলের বিক্রয় মূল্য হিসাব করা হয়। তবে এখনো অপারেশন ও হ্যান্ডলিং লসের তথ্য সুনির্দিষ্ট না করার কারণে কী পরিমাণ ভর্তুকি কিংবা লোকসান হয় বিপিসির কাছে ওই হিসাব নেই। জ্বালানি তেলের দাম ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই বাড়তে থাকে। বিশেষ করে ওই সময় থেকে ডিজেলে ভর্তুকি বেড়ে যায়। ফলে ওই বছরের ৪ নভেম্বর থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে পরিশোধিত ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারের কাছাকাছি ছিল। অবশ্য পরে গত বছরের নভেম্বরে ডিজেলের দরপতন হয়। নভেম্বর মাসের শেষ দিকে ৮৩-৮৫ ডলারের মধ্যে ছিল প্রতি ব্যারেল ডিজেলের দাম। পরে আবারো জ্বালানিটির দাম বাড়ে। আর ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বাড়তে থাকে। গত সপ্তাহে ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩৪ ডলার পর্যন্ত ওঠে।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম হু হু করে বাড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে থেকে দাম বাড়লেও যুদ্ধ শুরুর পর বেশি বেড়েছে। তাতে জ্বালানি বিক্রিতে বেড়েছে ভর্তুকির পরিমাণও। তার মধ্যে আবার বিপিসির সরবরাহ করা জ্বালানির মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ডিজেল। যে কারণে লোকসানের পরিমাণও বেশি। যুদ্ধ পরিস্থিতি শেষ না হলে জ্বালানির দাম কমার তেমন আশা নেই।
এদিকে এ বিষয়ে বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) মণিলাল দাশ জানান, এখন ডিজেলের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে হিসাব করে দেখা গেছে, প্রতি লিটার ডিজেল বিক্রিতে বর্তমানে বিপিসিকে ২০ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অপারেশন) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ডিজেলের দাম নিয়ন্ত্রণ করে বিপিসি। তবে এখন পর্যন্ত দাম বাড়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়নি।