অনলাইন ডেস্ক :
পশ্চিম বলকান অঞ্চলের ছয়টি দেশের সঙ্গে শীর্ষ সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আশার আলো দিচ্ছে। সংস্কার ও পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে এই দেশগুলোর জোটে যোগদানের সম্ভাবনা আরো বাড়ানোর ডাক দিল ব্রাসেলস। ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংকট সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে দোড়গোড়ার সংকট ও সংঘাত উপেক্ষা করছে না, গত সোমবার বলকান অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক তা আবার স্পষ্ট করে দিল। বহু বছরের বিলম্বের পর ইইউ বলকান অঞ্চলের পশ্চিমের ছয়টি দেশকে যত দ্রুত সম্ভব রাষ্ট্রজোটের সদস্য হিসেবে স্বাগত জানানোর ইচ্ছে প্রকাশ করছে। তবে তার আগে আরো সংস্কার চালিয়ে নিজেদের মধ্যে সাধারণ বাজার চালু করতে উৎসাহ দিলেন ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লায়েন।
আলবেনিয়া, বসনিয়া, কসোভো, মন্টেনেগ্রো, নর্থ ম্যাসিডোনিয়া ও সার্বিয়া সেই পথে এগোলে ইইউর পূর্ণ সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন। বলকানের পশ্চিমাঞ্চলের দেশগুলোকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের উপযুক্ত করে তুলতে ব্রাসেলসও নিজস্ব উদ্যোগ নিচ্ছে। ২০২০ সালে ইইউ কমিশন এই অঞ্চলের জন্য তিন হাজার কোটি ইউরো অঙ্কের যে অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা চালু করেছিল, তার আওতায় এখনো পর্যন্ত দুই হাজার ৬০০ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে ইইউ কমিশন জানিয়েছে। ইইউর অভ্যন্তরীণ বাজারের আংশিক নাগাল পেতেও এই অঞ্চলকে সুযোগ দিতে চায় ইইউ।
জার্মানির উদ্যোগে তথাকথিত ‘বার্লিন প্রসেস’ নামের শীর্ষ সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসও উপস্থিত ছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে এই উদ্যোগ চলছে। ইউরোপীয় সরকার পরিষদের প্রেসিডেন্ট শার্ল মিশেলও এই সম্মেলনে যোগ দেন। শলৎস বলেন, ‘বার্লিন প্রসেস’ বলকান অঞ্চলের পশ্চিমের দেশগুলোকে ইইউতে সম্পৃক্ত করার সবচেয়ে সেরা হাতিয়ার। তিনিও সাধারণ আঞ্চলিক বাজার গড়ে তুলতে ছয়টি দেশকে উৎসাহ দেন। গত বছর সার্বিয়া, আলবেনিয়া ও নর্থ ম্যাসিডোনিয়া পরস্পরের নাগরিকদের অবাধ প্রবেশ ও কাজের অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। ইইউতে যোগদানের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক উত্তেজনা এই দেশগুলোর পথে অন্যতম অন্তরায় হয়ে উঠছে।
বিশেষ করে সার্বিয়া ও কসোভোর মধ্যে সংকট ও সংঘাত মিটিয়ে ফেলার জন্য চাপ বাড়ছে। বৃহত্তর স্বার্থে সেটাই একমাত্র পথ হওয়া উচিত বলে ইইউ মনে করছে। সম্প্রতি কসোভোর উত্তরে এক পুলিশ অফিসার ও তিন সার্বীয় বন্দুকধারীর হত্যাকান্ড পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলেছে। জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস বলেন, বহুকালের সংকট মিটিয়ে ফেলার সময় এসে গেছে। ব্রাসেলসের উদ্যোগে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়ায় দুই দেশকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট।
সার্বিয়ার মতিগতি নিয়েও সংশয় দেখা যাচ্ছে। ইইউ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের বদলে সে দেশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুচিচ বেইজিং সফরে গিয়ে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামে যোগ দিচ্ছেন। সেখানে তার চীনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনা ব্রনাবিচ অবশ্য টিরানার সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার পর থেকে মস্কোর প্রতি সার্বিয়ার সরকারের নরম অবস্থান নিয়ে ইউরোপে অস্বস্তির কারণ হয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু