November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, October 20th, 2023, 8:18 pm

বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণে আরও কড়া পদক্ষেপ চায় ইইউ

অনলাইন ডেস্ক :

সাম্প্রতিককালে শরণার্থীদের ঢল ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে বিশাল মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। ইউরোপের মানুষের মনে অনিশ্চয়তার সুযোগ নিয়ে ‘লাগামহীন’ অভিবাসনের জুজু দেখিয়ে মাথাচাড়া দিচ্ছে চরম দক্ষিণপন্থি শক্তি। মধ্যপ্রাচ্য সংকট বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলছে। র‌্যাডিকাল ভাবধারার বহিরাগত মানুষের কার্যকলাপ নিয়ে বিব্রত একাধিক সদস্য দেশের সরকার। তাই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবার আগে ইইউ কড়া পদক্ষেপ নিয়ে জনসাধারণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছে। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এমনই কিছু উদ্যোগের কথা শোনা গেল। ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইউরোপে শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহের ওপর জোর দিচ্ছে ইইউ।

নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে, এমন ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চায় সদস্য দেশগুলোর সরকার। বিশেষ করে কট্টর ইসলামপন্থিদের কার্যকলাপ গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিবাসন সংক্রান্ত কমিশনর ইলভা ইয়োহান্সসন বলেন, ইইউ-কে সন্ত্রাসবাদীদের হুমকি থেকে নিরাপদ রাখা অবশ্য প্রয়োজনীয় কর্তব্য। তার মতে, যে সব মানুষ নিরাপত্তার ঝুঁকি হয়ে উঠছে, তাদের আরও অনেক দ্রুত ফেরত পাঠানো প্রয়োজন। হিংসাত্মক ইহুদি-বিদ্বেষ বা হিংসাত্মক ইসলাম-বিদ্বেষ দূর করাও জরুরি, বলেন ইয়োহান্সসন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে তিউনিশিয়া থেকে আসা এক ব্যক্তি গুলি চালিয়ে সুইডেনের দুই ফুটবল সমর্থককে হত্যা করেছেন। রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হবার পর সেই ব্যক্তি বেআইনিভাবে সে দেশে থেকে গিয়েছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন অভিবাসন ও রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত নিয়মকানুন চূড়ান্ত করে অবিলম্বে কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল দার্মান্যাঁ। তার মতে, বহিরাগতদের ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে কোনো রকম সারল্য দেখালে চলবে না।

চলতি বছর এই অভিন্ন নীতি চালু হলে অপরাধের রেকর্ডধারী বিদেশিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া অনেক সহজ হবে বলে প্রবক্তরা আশা করছেন। ইউরোপীয় শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত নীতির পাশাপাশি শরণার্থীদের ঢল কমাতে আফ্রিকার উত্তরের দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তির ওপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে আদম ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমাতে এমন সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ বলে ইউরোপের অনেক দেশ মনে করছে। তবে অভিন্ন নীতির সমালোচকদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত মানবাধিকারকে প্রাধান্য দিয়ে বেআইনি অনুপ্রবেশ কমাতে তেমন উদ্যোগ নেওয়া হবে না।

বহিরাগত ও কট্টরপন্থিদের নিয়ে চলমান বিতর্কের জের ধরে ইউরোপের মধ্যে সীমানাহীন আদানপ্রদান ও অন্যান্য কিছু মৌলিক অধিকার সঙ্কুচিত হতে পারে বলে কিছু মহল আশঙ্কা করছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ইউরোপের চিরায়ত মূল্যবোধ কতটা খর্ব করা উচিত, সে বিষয়েও বিতর্ক শোনা যাচ্ছে। শেঙেন এলাকার একাধিক দেশ সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ চালু করায় সেই প্রশ্ন বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে।