March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, August 4th, 2021, 1:13 pm

বহুমাত্রিক চরিত্রে সফল নিশো

অনলাইন ডেস্ক :

বহুমাত্রিক চরিত্রে সর্বোচ্চ সফল অভিনেতা হিসেবে ধরা হয় হুমায়ূন ফরীদিকে। আর সেই ফরীদিকে দূর সীমানাপ্রাচীর বানিয়ে ম্যারাথন গতিতে এগিয়ে চলছেন এই প্রজন্মের অভিনেতা আফরান নিশো। সাম্প্রতিককালে টিভিতে ও ওয়েবে এতোটা বহুমাত্রিকরূপে সচরাচর দেখা মেলে না, অন্য অভিনেতাদের। সেই বিচারে অনেকদিন ধরেই অন্যান্যের চেয়ে অনেকটা পথ এগিয়ে আছেন আফরান নিশো। কিন্তু লক্ষ্য-ফরীদি এখনও বহুদূর…। তবে সদ্য সমাপ্ত ঈদে সেই দূরত্ব অনেকটাই অতিক্রম করেছেন নিশো। গোটা ঈদে মাত্র ১০টি নাটকে কাজ করেছেন তিনি। যার সবগুলোই সর্বোচ্চ আলোচনার তালিকায় রেখেছেন দর্শকরা। যার প্রতিচ্ছবি মেলে নাটক ঘরানার ফেসবুক গ্রুপগুলোতে। হিসাব কষে দেখা গেছে, এবারের ঈদের শীর্ষ অভিনেতা তিনিই। সমালোচকদের চোখে এবার নিশোর প্রশংসিত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘চিরকাল আজ’, ‘কায়কোবাদ’, ‘পুনর্জন্ম’ প্রভৃতি। ৩টি নাটকই নির্মাণ করেছেন ভিকি জাহেদ। আবার কাজল আরেফিন অমির ‘আপন’ সব ধরনের দর্শকের ভালো লেগেছে। আর ভিউ? ভিউয়ের বিচারেও এবার সেরা নিশো। তার অভিনীত মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘হ্যালো শুনছেন’ এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভিউ পাওয়া নাটক। নাটকটি ৪ মিলিয়নের বেশি দর্শক এরইমধ্যে দেখে ফেলেছে। আবার সবচাইতে দ্রুত গতির ভিউয়ের নাটকও তার। জাকারিয়া সৌখিনের ‘এক মুঠো প্রেম’ ইউটিউবে প্রকাশের মাত্র ১২ ঘণ্টায় মিলিয়ন ভিউ পার করেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দ্রুত ভিউ পাওয়া নাটকটিও তার- ‘হ্যালো শুনছেন’। এই নাটকটি ১৬ ঘণ্টায় মিলিয়ন পার করেছে। আফরান নিশো এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি প্রতিনিয়ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। চেষ্টা করে যাচ্ছি ভালো কিছুর আশায়। এভাবে নিয়মিত শিখছিও। সুতরাং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এভাবেই চেষ্টা করে যেতে যাই, শিখে যেতে চাই। যেতে চাই আমার গুরুর কাছাকাছি।’ এবারের ঈদে ভার্সেটাইল সত্তার সর্বোচ্চ উদাহরণ দেখা গেছে নিশোর অভিনয়ে। যেমন- ‘পুনর্জন্ম’ নাটকে উম্মাদ স্বামী, ‘কায়কোবাদ’ নাটকে কাঠমিস্ত্রি, ‘হ্যালো শুনছেন’ নাটকে চাকরী খুঁজে বেড়ানো অদ্ভুত যুবক, ‘শুষ্কং কাষ্ঠং’ নাটকে রস-কষহীন স্বামী, আবার ‘এক মুঠো প্রেম’ নাটকে কবি! এরকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে তার অভিনয় গ্রাফে। নিজের এই বৈচিত্র্যময় অভিনয় প্রসঙ্গে নিশো বলেন, ‘যারা ভার্সেটাইল অভিনেতা, তাদের কাছ থেকে আমি নিয়মিত শিখি। সবাই জানেন, হুমায়ূন ফরীদি ভাইকে আমি শুরু থেকেই গুরু মানি। তাই আমিও তার মতো ভার্সেটাইল অভিনেতা হতে চেয়েছি। তাছাড়া নিয়মিত একই চরিত্রে বারবার অভিনয় না করে, বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে আমার ভালো লাগে। নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে যখন একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করি, তখনই নিজেকে সার্থক মনে হয়।’এবারের ঈদে আফরান নিশোর সবচাইতে ভালো গেলেও গেল এক দশকে এবারই সবচেয়ে কম নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। লকডাউনের কারণে বেশি নাটকে অভিনয় করতে পারেননি। মাত্র ১০টি নাটকে অভিনয় করেছেন। যেখানে তার সমসাময়িক অভিনেতারা প্রায় দ্বিগুণ-তিনগুণ নাটকে অভিনয় করেছেন, সেখানে তিনি এত অল্প নাটকে অভিনয় করেও এতটা সফলতার কারণ কী? ফেসবুকে বাংলা নাটক সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলোতে দর্শকের প্রতিক্রিয়া থেকেই এর উত্তর পাওয়া যায়। কারণটি হচ্ছে- বৈচিত্র্যময় অভিনয়, প্রতিটি চরিত্রই একেবারে সত্যিকারভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা এবং গল্প নির্বাচন। এ বিষয়ে নিশো বলেন, ‘কোভিড ও লকডাউনের কারণে আসলে গত এক-দেড় বছর ধরেই কাজ কম করা হচ্ছে। সরকার যখনই লকডাউন দিয়েছে, আমি শুটিং থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। আসলে আমি কখনোই সংখ্যা বিচার করে কাজ করতে চাইনি। একজন শিল্পী যখন বড় হয়, তার কিছুটা হলেও চাহিদা তৈরি হয়, তখন ইন্ডাস্ট্রির চাপে অনেক কাজ হয়তো করতে হয়। কিন্তু বরাবরই আমি কম কাজে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। ¯্রােতের বিপরীত আমার ভালো লাগে। তাই নায়ক নাকি ভিলেন সেটা আমার কাছে মুখ্য থাকে না, আমি খুঁজি চরিত্রের গভীরতা- যেখানে নেমে সাঁতরানো যায়।’ বলা যায়, নিশো তার গুরুর মতোই রহস্য আর বৈচিত্র্য ছড়িয়ে হেঁটে চলেছেন একাই; ফরীদি লক্ষ্যে।