May 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, November 30th, 2023, 8:01 pm

বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা সক্রিয়, মার্কিন শ্রম নীতি নিয়ে খুব উদ্বেগ নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম অন অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এমপাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ডস গ্লোবালি’ নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

কারণ বাংলাদেশি পণ্যগুলো তার গুণমান, প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ও সময়মতো পৌঁছে দেওয়ার কারণে মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার পায়।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা খুবই স্মার্ট ও সক্রিয়। আমাদের গতিশীল বেসরকারি খাতের ওপর আমার আস্থা আছে। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মোমেন বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির একটি প্রধান বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আমাদের বেসরকারি খাত তৈরি পোশাক রপ্তানি করে এবং মার্কিন বেসরকারি খাত বাংলাদেশি পণ্য কেনে।’

তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের পণ্য কেনে কারণ আমাদের পণ্যগুলো উচ্চ মানসম্পন্ন, দামে সস্তা ও সময়মতো পৌঁছে দেওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, এমনকি আপনি মার্কিন স্টোরগুলোতে অনেক চীনা পণ্যও পাবেন।

অন্যদিকে, ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস বলেছে, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম অন অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এমপাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ডস গ্লোবালি’ শিরোনামের স্মারকলিপি নিয়ে বাংলাদেশের ‘শঙ্কিত হওয়ার’ অনেক কারণ রয়েছে।

সম্প্রতি চালু হওয়া এই মার্কিন উদ্যোগ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে দূতাবাস এক চিঠিতে জানিয়েছে, ‘স্মারকলিপিতে শ্রম অধিকার সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তার পেছনে রাজনীতি রয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন উপায়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের চেষ্টা করবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্মারকলিপিটি ১৬ নভেম্বর প্রকাশ করা হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ‘যারা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের, শ্রম অধিকার রক্ষাকারী ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে হুমকি দেয়, ভয় দেখায় এবং হামলা করে তাদের জবাবদিহি করা হবে। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য জরিমানা ও ভিসা বিধিনিষেধের’ মতো পদক্ষেপগুলো কার্যকর করতে তারা কাজ করবে।

ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের চিঠিতে বলা হয়েছে ‘স্মারকলিপিটি’ বাংলাদেশের জন্য একটি সংকেত। কারণ শ্রম সমস্যার অজুহাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এতে বর্ণিত যেকোনো ব্যবস্থা নিতে পারে। ‘স্মারকলিপিটি বাংলাদেশের পোশাক খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনা করা উচিত।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্র পুরো শ্রম খাতের জন্য উদ্যোগ নিলে তারা অবশ্যই স্বাগত জানাবে।

মোমেন বলেন, ‘তারা যদি একটি ভালো নীতি গ্রহণ করে তাহলে সেটা হবে একটি মহৎ উদ্যোগ। আমি আশা করি যুক্তরাষ্ট্র ধনী দেশ হওয়ায় জলবায়ু ও অভিবাসন বিষয়ে ভালো উদ্যোগ নেবে।’

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি ইতিবাচক কর্মসূচি নিয়ে আসে, আমরা অবশ্যই এটাকে স্বাগত জানাব।’ বাংলাদেশ দেখতে চায় সব শ্রমিক ভালোভাবে জীবনযাপন করছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেন জানান, তিনি চিঠির বিষয়ে জানেন না।

কিছু লোকের মধ্যে দেশপ্রেমের অভাব রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মোমেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাধাগ্রস্ত করে এমন কোনো প্রচেষ্টা বাংলাদেশ দেখতে চায় না।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ছুটি থেকে ফেরার পর এটি রুটিন বৈঠক।

তিনি বলেন, ‘আমরা খুশি যে তিনি ফিরে এসেছেন। নতুন কিছু নয়। শুধু রুটিন মিটিং।’

রাষ্ট্রদূত হাস বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।

বৈঠকের পর ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস জানায়, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি নিয়ে আলোচনার জন্য রাষ্ট্রদূত হাস এবং পররাষ্ট্র সচিব মোমেন একটি রুটিন বৈঠক করেছেন।

বেলা ১১টায় বৈঠক শুরু হয়ে ৩০ মিনিট চলে।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানও উপস্থিত ছিলেন।

হাস ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বৈঠকস্থলের বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি।

ছুটি কাটিয়ে সোমবার ঢাকায় ফিরেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

—-ইউএনবি