বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করে স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে শিশুদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আর আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু আমাদের অনুসরণ করার জন্য তিনি তার আদর্শ রেখে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের শিশুদের অবশ্যই মানবিক গুণাবলী নিয়ে বেড়ে উঠতে হবে এবং খেলাধুলা ও শরীরচর্চার মাধ্যমে নিজেদেরকে বুদ্ধিমানভাবে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক শিশুকে খেলাধুলা ও শরীরচর্চা করতে হবে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে, শিক্ষক ও অভিভাবকদের আনুগত্য করতে হবে, এই নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে এবং মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন হতে হবে।’
শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উপলক্ষে এক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুদের চোখ সমৃদ্ধির স্বপ্নে রঙিন’।
প্রধানমন্ত্রী শিশুদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বা ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে বলেছেন।
শিশুদের জাতির ভবিষ্যৎ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের দেশের সক্ষম নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই তার সরকারের লক্ষ্য।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের একটি কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, তার সরকার এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলবে যেখানে কোনও শিশু ক্ষুধার্ত থাকবে না এবং দেশে সকলের বসবাসের উপযোগী শিক্ষা ও বাসস্থান থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী এই বছরের থিম বাছাই করার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আজকের শিশুরাই হবে ভবিষ্যতের স্মার্ট মানুষ, যারা বাংলাদেশকে সঠিকভাবে গড়ে তুলবে।’
শিশু প্রতিনিধি স্নেহা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল।
এছাড়া অপর দুই শিশু রুবাবা তোহা জামান ও এএল শরফুদ্দিনের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে শিশুদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন স্বপ্নীল বিশ্বাস।
মঞ্চে ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।
‘বঙ্গবন্ধু ও শিশু অধিকার’- শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমানের লেখা ‘শিশুদের শেখ মুজিব’- নামে একটি সচিত্র বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসন বিভিন্ন বিভাগে শিশুদের মধ্যে একটি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে, বঙ্গবন্ধুর বই ‘অসমাপ্ত স্মৃতি’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের ওপর কুইজ এবং আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
প্রতিযোগিতার ৩২ জন বিজয়ী প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।
এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও শিশু দিবস উপলক্ষে ১০০ জন অসচ্ছল শিক্ষার্থী আর্থিক অনুদান হিসেবে আড়াই হাজার টাকা পেয়েছেন।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২