অনলাইন ডেস্ক :
আগের টেস্টে নিজেদের ভালো করার অভিজ্ঞতা আছে। চলতি টেস্টে নিউ জিল্যান্ডকে দেখেও করণীয় স্পষ্ট হয়েছে। তবু মূল কাজটি ঠিকঠাক করতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্সের কাছে সবচেয়ে বড় সমস্যা মনে হয়েছে সেটিই, যথেষ্ট পরিমাণে বল ছাড়তে পারেনি ব্যাটসম্যানরা। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বলের পর বল ছেড়ে ১৭৬.২ ওভার টিকে ছিল বাংলাদেশ। ওই ব্যাটিং পারফরম্যান্স দলকে এগিয়ে নেয় জয়ের পথে। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চে ছাড়ার বলও খেলতে গিয়ে ব্যাটসম্যানরা ডেকে আনে বিপদ। তাতে ইনিংস শেষ ¯্রফে ৪১.২ ওভারেই। ম্যাচের প্রথম দিনে মেঘলা আকাশের নিচে সবুজ উইকেটে ব্যাটিংয়ে নেমে কিছুটা পরীক্ষা দিতে হয় কিউই ব্যাটসম্যানদেরও। তবে টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াং শুরুর বিপজ্জনক সময়টা কাটিয়ে দেন অনেক বল ছেড়ে দিয়ে। থিতু হওয়ার পর তারা খেলেন দারুণ সব শট। বাংলাদেশের উইকেট পতনের শুরুই হয় ছাড়ার বল খেলতে গিয়ে। বাইরের বলে ব্যাট পেতে দিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন সাদমান ইসলাম। এরপর মোহাম্মদ নাইম শেখ, লিটন দাসরাও হয়ে যান একই পথের পথিক। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ১২৬ রানে অলআউট হওয়ার ব্যাখ্যায় সেটিই তুলে ধরলেন বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ প্রিন্স। “কিউইদের প্রথম দিনের ব্যাটিং থেকে আমরা যদি শিক্ষা নেই, তারা অফ স্টাম্পের বাইরে প্রচুর বল ছেড়েছে। নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের অবশ্য এটা সহজাতভাবেই আসে, তারা বাউন্সি উইকেটে খেলে অভ্যস্ত। আমাদের ছেলেরা বেশি অভ্যস্ত বল খেলতে (ছেড়ে না দিয়ে)।” “মাউন্টে (আগের টেস্টে) আমরা বল খুব ভালো ছেড়েছি এবং ব্যাকফুটে সত্যিই ভালো খেলেছি। আমরা তেমনভাবে কিছু বল ছাড়তে পারতাম। আশা করি, কালকে আমরা শুরুটা ভালো করতে পারব। অফ স্টাম্পের বাইরে কিছু বল ছেড়ে দিতে পারি আমরা, যেন তারা আমাদের শরীর সোজা বল করতে বাধ্য হয়।” দুই দলের দুইরকম ব্যাটিংয়ের সঙ্গে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে দুই দলের বোলিংও। বাংলাদেশের তিন পেসার প্রথম দিনের উইকেটেও খুব বেশি সুইং পাননি, ধারাবাহিক হতে পারেননি, আদর্শ লেংথে বল করতে পারেননি। কিন্তু নিউ জিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি শুরু থেকেই নিখুঁত লেংথে বল করার পাশাপাশি আদায় করে নেন দারুণ সুইং। বোল্টের শিকার ৫ উইকেট, সাউদির ৩টি। বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ বললেন উইকেটের চ্যালেঞ্জের কথাও। “আমাদের ব্যাটিং লাইন-আপের জন্য দিনটি কঠিন ছিল। নিউ জিল্যান্ড শুরুটা ভালো করে, সুইং আদায় করে নেয় তারা। পিচে কিছুটা খোঁদলের মতোও হয়ে যায়। কালকেই পিচ একটু নরম হতে শুরু করেছিল। গতি বেড়ে যায়। তবে কালকের নরম ভাবের কারণেই কিছু ক্ষত রয়ে যায়।” “পিচ যখন শক্ত ও গতিময় হয়ে ওঠে এবং সেই খোঁদলে বল পড়ে, তখন তা খেলা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। সঙ্গে সুইং তো ছিলই। কিউইরা দারুণ বোলিং করে আমাদের কাজ কঠিন করে তুলেছে।” তবে পরে পিচ খানিকটা সহজ হয়ে আসে বলেও মনে করেন প্রিন্স। কঠিন সময়টায় আরেকটু লড়াই করে উইকেটে পড়ে না থাকায় তাই আফসোস করলেন ব্যাটিং কোচ। “চা বিরতির দিকে আমরা বুঝে উঠতে পারি, উইকেট এখনও ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো। শট খেলতে পারলে প্রতিদান মেলে, আউটফিল্ডও ভালো। কিছু বল তো ব্যাটের কানার বাইরে দিয়ে যাবেই, এই কন্ডিশনে তা স্বাভাবিক। আরেকটু টিকে থাকতে পারলে জুটি গড়ে তুলতে পারতাম আমরা।” এই ইনিংসের ভুল থেকে শিক্ষা আর আগের টেস্টের অভিজ্ঞতার ভরসায় দল দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করবে, আশা প্রিন্সের। “গত সপ্তাহে অসাধারণ করেছি আমরা। দারুণ বোলিং আক্রমণের সামনে ১৭৩ ওভার (১৭৬.২) ব্যাটিং করেছি। এটা বলাই যায় যে আমরা জানতাম, নিউ জিল্যান্ড এই টেস্টে আরও বেশি তাড়না দেখাবে। দুটি ম্যাচের যদি তুলনা করেন, তাহলে দেখা যাবে যে এখানে লড়াই করে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন, এমনকি এক নম্বর দলের জন্যও।” “গত সপ্তাহে আমরা নিজেদের এগিয়ে রাখতে পেরেছিলাম। এই ম্যাচে এখনও পর্যন্ত, ওরা কালকে ভালো শুরু করে ধরে রাখে এবং পরে বোলিংয়েও ভালো শুরু করে। আমাদের জন্য খেলায় ফেরা কঠিন করে তোলে ওরা। তবে আমরা চেষ্টা করব আরেকটি দিন লড়াই করে টিকে থাকার।”
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা