অনলাইন ডেস্ক :
সংকটকালে বিশ্বনেতার ভূমিকায় অবতীর্ন হতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। সেই সঙ্গে নিজের স্বপ্নের কথাও তুলে ধরেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে ভার্চুয়ালি বক্তৃতায় গত বুধবার এ আকুতি জানান জেলেনস্কি। বাইডেনকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনি একটি মহান জাতির নেতা। আমি আপনাকে বিশ্বের নেতা হিসেবে দেখতে চাই। বিশ্বনেতা বলতে বোঝাতে চাচ্ছি শান্তির নেতা। বক্তব্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পার্ল হারবারে হামলা এবং ৯/১১ হামলার সঙ্গে রুশ অভিযানের তুলনা করেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, শয়তান আপনার শহরগুলোকে, স্বাধীন অঞ্চলগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্র বানাতে চেয়েছিল। আপনাদের ইতিহাসের এমন অনেক অধ্যায় আছে যা আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে। পার্ল হারবারের ঘাঁটিতে জাপানি হামলার পরেই সক্রিয়ভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল আমেরিকা। আর ২০০১ সালে নিউ ইউর্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার পর আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পেন্টাগনের লড়াইকে নতুন মাত্রা দিয়েছিল। বক্তব্যের একপর্যায়ে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের বিখ্যাত ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’ ভাষণটির অনুকরণে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, আমার একটি স্বপ্ন আছে। এই শব্দগুলো আপনাদের প্রত্যেকেরই জানা। আজ আমি বলতে পারি, আমার একটি প্রয়োজন আছে। আমাদের আকাশ রক্ষা করা প্রয়োজন। আমি আপনার সিদ্ধান্ত জানতে চাই, আপনার সাহায্য চাই। এর অর্থ ঠিক একই; “আমার একটি স্বপ্ন আছে” লাইনটি শুনে আপনি যা অনুভব করেন ঠিক এমনই। জেলেন্সকি যখন বক্তব্য রাখছেন তখন ইউক্রেনে রুশ অভিযানের তৃতীয় সপ্তাহ চলছে। জাতিসংঘের হিসাবে, রুশ হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৭০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। জেলেনস্কি বলেন, আমি বয়স এখন ৪৫। যখন শুনেছি ১০০-র বেশি শিশুর শ্বাসপ্রশ্বাস থেমে গেছে, তখন থেকে আমার বয়সও থেমে গেছে। সংকট নিরসনে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোকে নিয়ে নতুন একটি জোট গঠনের প্রস্তাব দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। জেলনেস্কি বলেন, ইউনাইটেড ফর পিস নামে একটি অ্যাসোসিয়েশন গঠনের প্রস্তাব করছি। এটা এমন একটা জোট হবে, যেখানে দায়িত্বশীল সদস্যগুলোর অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ করার শক্তি এবং চেতনা থাকবে। এ জোট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আক্রান্ত সদস্যকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগীতা করবে। ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। প্রতিবাদে নিন্দা আর নানা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলো। কিয়েভে সামরিক সহায়তাও পাঠাচ্ছে মিত্র দেশগুলো। কিন্তু শক্তিশালী রুশ সেনাবাহিনীকে কিছুতেই আটকানো যাচ্ছে না। কূটনৈতিক আলোচনায়ও মিলছে না সমাধান। এ অবস্থায় ইউক্রেনে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণার আর্জি জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলনেস্কি। তবে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়াতে চাচ্ছে না কেউ। তাই জেলেনস্কির আর্জি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে দেয় আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট-ন্যাটো।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু