April 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, December 13th, 2022, 9:52 pm

বাজার নিয়ন্ত্রণে বেসরকারিভাবে আরো চাল আমদানিতে শুল্কছাড়ের মেয়াদ ৩ মাস বৃদ্ধি

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বেসরকারিভাবে আরো চাল আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেজন্য কম শুল্ক সুবিধার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আরো ৩ মাস। ফলে ব্যবসায়ীরা আগামী ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সেদ্ধ চাল ও আতপ চালে আমদানি শুল্ক অব্যাহতি এবং ৫ শতাংশ হারে রেগুলেটরি ডিউটির সুবিধা পাবে। যদিও ওই সুবিধা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ইতোমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। খাদ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি বছরের জুনের শেষ দিকে প্রথম দফায় বেসরকারিভাবে চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের মধ্যে আমদানির আগ্রহ না থাকায় সরকার শুল্ক কমায়। বর্তমানে চাল আমদানিতে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর, ৫ শতাংশ অগ্রিম কর এবং ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক রয়েছে। কিন্তু ডলার সঙ্কটসহ নানা ইস্যুতে ব্যাংকগুলো এখনো এলসি খুলতে তেমন আগ্রহী হচ্ছে না। আমদানিকারকদের দাবি, চাল আমদানিতে এলসি খোলা আরো সহজ করা প্রয়োজন। বর্তমানে সরকারিভাবে ভারত, মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম থেকে ৫ লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশি চাল চলে এসেছে। এ পয়ন্ত দেশে ২ লাখ ৬৯ হাজার টন চাল এসেছে। বৈশ্বিক সংকটের কারণে সারাবিশ্বে খাদ্যপণ্যের সঙ্কট দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে দেশের প্রধান খাদ্যশস্য চাল আমদানি বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু বেসরকারি খাতে সেভাবে আমদানি বাড়েনি। এখন নতুন ছাড়ের আওতায় চাল আমদানি করতে হলে প্রত্যেক চালানের জন্য অবশ্যই খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে। আশা করা হচ্ছে সরকারি এই উদ্যোগের ফলে বেসরকারি খাতে চাল আমদানি বাড়বে।
সূত্র জানায়, দেশে আমন ধান ওঠার সময়েও চালের দাম বেড়ে চলছে। সরকার চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত বেসরকারিভাবে ১৫ লাখ ৫৬ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশে মাত্র ৩ লাখ ৫৩ হাজার টন চাল এসেছে। অনেকটাই ধীর বেসরকারিভাবে চাল আমদানির গতি। যে কারণে বাজারে কমছে না চালের দাম। এমন পরিস্থিতিতে চালের আমদানি বাড়াতে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানির সময়সীমা আরো ৩ মাস বাড়ানো হলো। তাছাড়া চাল আমদানির জন্য নতুন উৎসের খোঁজ চলছে। ইতোমধ্যে খাদ্যমন্ত্রী ও সচিব ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড ঘুরে এসেছেন। সরকারি মজুতে চালের অবস্থা সন্তোষজনক হলেও বেসরকারি খাত নিয়ে সরকার কিছুটা চিন্তিত। বর্তমানে সরকারি গুদামে মজুত খাদ্যশস্যের পরিমাণ ১৬ লাখ ১২ হাজার ৪৯৬ টন। তার মধ্যে গম আছে ৩ লাখ ৭ হাজার ৯৪ টন।
সূত্র আরো জানায়, গত বোরো মৌসুমে ভালো ফলন হয়েছে। আমনেও বাম্পার ধান ঘরে উঠবে। তবে বাজারে চালের দাম প্রত্যাশিত সীমায় না থাকায় সরকারের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে সঙ্কটের সময় বিদেশ থেকে তাৎক্ষণিক চাল পাওয়া কঠিন হবে। সেজন্যই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি দেশীয় বাজার নিয়ন্ত্রণে বড় উদ্যোগ নেয়ার চিন্তা চলছে। পাশাপাশি চাল আমদানির নতুন দেশ নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার। যদিও সরকারিভাবে আমদানির প্রক্রিয়া স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। বাকি চালও পাইপলাইনে আছে। চাল আমদানির ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডের দিকে বাংলাদেশের এখন বড় নজর। এর আগে থাইল্যান্ড থেকে জিটুজি পদ্ধতিতে চাল কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েও বাংলাদেশ চাল কেনেনি। এবার ভিয়েতনামের মাধ্যমে থাইল্যান্ড থেকে ২ লাখ টন চাল আমদানি করতে হচ্ছে।
এদিকে চাল আমদানির নতুন উৎস প্রসঙ্গে খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন জানান, এবারের সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন। এখনই চাল কিনতে হবে বা কী পরিমাণ কিনব- এমন কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। দেশগুলো সফর করে আমাদের বিশেষ প্রয়োজনের সময় তারা চাল দিতে পারবে কিনা, দিলে সেটার প্রক্রিয়া কী হবে তা বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। আর এই অর্থবছরে ভারত থেকে এক লাখ টন চাল আমদানির কার্যক্রম চলছে।