সদ্য ঘোষিত বাজেটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ৬.২৯ শতাংশ (বিবিএস অনুসারে এপ্রিলে) থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করলে সিপিডি নেতারা এ ব্যাপারে সরকারের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে পৌঁছেছে।
১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আসন্ন অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের ৬ দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন টাকার জাতীয় বাজেট পেশের একদিন পর শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
সিপিডির মতে, নিম্ন, মধ্যবিত্ত এবং স্থির আয়ের গোষ্ঠীগুলো একটি পরিবার চালানোর জন্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে কেননা মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা বেশি থাকলে পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ডা. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করার পর থেকে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়ছে।
তিনি বলেন, বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। চাল-ডালসহ ২৯টি পণ্যের দাম কমানোর প্রয়োজন ছিল, কিন্তু তা হয়নি। সিপিডি এক্ষেত্রে কর কমানোর সুপারিশ করেছিল কিন্তু তাও রাখা হয়নি।
ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, অর্থমন্ত্রী অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উল্লেখ করলেও তিনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পথ উল্লেখ করেননি।
সিপিডি বলছে, বেসরকারী খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে যা বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিলে প্রভাবিত হবে।
এক্সচেঞ্জ রেট ২৩ অর্থবছরে গড়ে প্রতি মার্কিন ডলারের জন্য ৮৬.২ টাকায় পৌঁছাবে বলে বলা হলেও কীভাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে তা বাজেটে বলা হয়নি।
কৃষি খাতে এবং খাদ্য উৎপাদনে ভর্তুকি বাড়ানোর জন্য বাজেটের প্রশংসা করা হয়েছে।
সিপিডি উল্লেখ করেছে যে, বাজেটে যুব কর্মসংস্থান এবং দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কোন বরাদ্দ নেই, যেখারে ৫৭ শতাংশ জনসংখ্যার বয়স ২৫ বছরের নিচে।
সিপিডি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ওপর থেকে ট্যাক্স প্রত্যাহার এবং জ্ঞান কার্যক্রমে ব্যবহৃত বিদেশি বই ও জার্নাল আমদানির আহ্বান জানিয়েছে।
ফাহমিদা বলেন, পাচারকৃত টাকা সাদা করার বিধান অর্থনীতির জন্য মোটেও ভালো নয়। বিদেশে অর্থ পাচার এবং ফেরত আনার দুটি বিকল্পই সম্পূর্ণ অনৈতিক। পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, এই পদক্ষেপটি নিয়মিত করদাতাদের নিরুৎসাহিত করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এভাবে পাচারকৃত অর্থ বৈধ করার বিধান রাখা হলে মোট অবৈধ ব্যবস্থা বৈধ হবে এবং একটি সংগঠিত গোষ্ঠী অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দেশের বাইরে পাচারে উৎসাহিত হবে।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগত করদাতারা প্রায় ২৫ শতাংশ, কর্পোরেট করদাতারা প্রায় ৪০ শতাংশ কর দিচ্ছেন, অন্যদিকে অবৈধ অর্থকে বৈধ করার জন্য ১৫ শতাংশ করের বিধান রাখা হয়েছে। যা বৈধ করদাতাদের জন্য সত্যিই নিরুৎসাহিতকর।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ