April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, October 27th, 2022, 8:06 pm

বার্সাকে হারিয়ে গ্রুপ সেরা বায়ার্ন

অনলাইন ডেস্ক :

আগেভাগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় ঘণ্টা বেজে যাওয়ার কারণেই কি-না, বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের পায়ে যেন ভর করল রাজ্যের ক্লান্তি। কেবলই আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচে নূন্যতম লড়াইও করতে পারল না তারা। পুরোটা সময় আধিপত্য ধরে রেখে দারুণ জয় তুলে নেওয়ার পাশাপাশি গ্রুপ সেরাও হয়ে গেল বায়ার্ন মিউনিখ। কাম্প নউয়ে বুধবার রাতে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে ৩-০ গোলে জিতেছে বায়ার্ন। সাদিও মানে দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান এরিক মাক্সিম চুপো-মোটিং। শেষ সময়ে তৃতীয় গোলটি করেন বাঁজামাঁ পাভার্দ। তিনটি গোলেই অবদান রেখে অ্যাসিস্টের হ্যাটট্রিক করেন সের্গে জিনাব্রি। দিনের আগের ম্যাচে ভিক্তোরিয়া প্লাজেনকে ৪-০ গোলে হারিয়ে নকআউট পর্বের টিকেট নিশ্চিত করে ইন্টার মিলান। সেই সঙ্গে শেষ হয়ে যায় বার্সেলোনার পরের ধাপে ওঠার ক্ষীণ আশাটুকু। বায়ার্নের জন্য ম্যাচটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিপক্ষের মলিনতার সুযোগে আসরে জয়ের ধারা ধরে রাখার পাশাপাশি নিশ্চিত করল, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ ষোলোয় খেলবে তারা। পাঁচ রাউন্ডে শতভাগ সাফল্যে বায়ার্নের পয়েন্ট ১৫। ১০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ইন্টার। তৃতীয় হয়ে ইউরোপা লিগে অবনমিত বার্সেলোনার পয়েন্ট ৪। দশম মিনিটে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে এগিয়ে যায় বায়ার্ন। মাঝমাঠ থেকে থ্রু বল বাড়ান জিনাব্রি। গতিতে ডিফেন্ডার এক্তর বেইয়েরিনকে পেছনে ফেলে বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে আগুয়ান গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন সেনেগালের ফরোয়ার্ড মানে। ৩১তম মিনিটে আরও একবার প্রতিপক্ষের পাল্টা আক্রমণে উন্মুক্ত হয়ে পড়ে বার্সেলোনার রক্ষণ। এখানেও অ্যাসিস্টের ভূমিকায় জিনাব্রি। তার দারুণ পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের পায়ের ফাঁক দিয়ে লক্ষ্যে পাঠান চুপো-মোটিং। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচে জালের দেখা পেলেন ক্যামেরুনের এই ফরোয়ার্ড। বায়ার্ন খুব যে আগ্রাসী ফুটবল খেলছিল, তা নয়। কিন্তু বার্সেলোনা কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারছিল না। প্রথম ৪০ মিনিটে উল্লেখযোগ্য কোনো আক্রমণই করতে পারেনি তারা, নিতে পারেনি গোলের উদ্দেশ্যে কোনো শট! ৪৩তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। মানের চিপ শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও ছিল না গতি, রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর খুব কাছ থেকে চেষ্টা করেন জামাল মুসিয়ালা। সেটাও প্রতিহত হয়। ওখান থেকেই শাণানো প্রতি-আক্রমণে গোল পেতে পারতেন রবের্ত লেভানদোভস্কি। বায়ার্নের বক্সে তাদের ডিফেন্ডার মাটাইস ডি লিখটের চ্যালেঞ্জে পোলিশ তারকা পড়ে গেলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে ভিএআর মনিটরে দেখে পাল্টান সিদ্ধান্ত। দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে দারুণ বাঁকানো শটে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে বল পাঠান জিনাব্রি। তবে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, কিঞ্চিৎ ব্যবধানে অফসাইডে ছিলেন তিনি। থেমে যায় জার্মান ফরোয়ার্ডের গোল উদযাপন। এর কিছুক্ষণ পর একসঙ্গে জোড়া বদল আনেন বার্সেলোনা কোচ; সের্হিও বুসকেতস ও পেদ্রিকে তুলে ফেররান তরেস ও রাফিনিয়াকে নামান। এতে তাদের আক্রমণের ধার কিছুটা বাড়ে। ৬৮তম মিনিটে আবারও দুটি পরিবর্তন করেন কোচ; জুল কুন্দে ও উসমান দেম্বেলেকে বসিয়ে নামান এরিক গার্সিয়া ও আনসু ফাতিকে। বায়ার্নের ওপর কিছুক্ষণ চাপ দিতেও সক্ষম হয় তারা। কিন্তু পুরো ম্যাচে লক্ষ্যে কেউ কোনো শট রাখতে পারেনি! তাদের ৯ শটের সবগুলোই লক্ষ্যভ্রষ্ট। অবশ্য প্রতিপক্ষকে তেমন ভাবাতেও পারেনি নিজেদের খুঁজে ফেরা দলটি। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে দূরের পোস্টে বাড়ান জিনাব্রি। ফাঁকায় বল পেয়ে নিখুঁত টোকায় বাকি কাজ সারেন ফরাসি ডিফেন্ডার পাভার্দ। লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে রিয়াল মাদ্রিদকে চ্যালেঞ্জ জানানো এই বার্সেলোনাই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবশেষ চার ম্যাচে জয়শূন্য রইলে। ভিক্তোরিয়ার বিপক্ষে ৫-১ গোলের জয়ে আসর শুরুর পর হেরে বসে বায়ার্ন ও ইন্টারের মাঠে। এরপর ইটালিয়ান ক্লাবটির বিপক্ষে ঘরের মাঠে ড্র করার পর আবার হেরে বসল জার্মান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতার মতো বায়ার্নের বিপক্ষে তাদের বিবর্ণ পথচলা আরও দীর্ঘ হলো। এই নিয়ে ১৩ বারের দেখায় ১০টিতেই হারল বার্সেলোনা, এর মধ্যে সবশেষ ৬টিই হারল তারা। বাকি তিন ম্যাচে বার্সেলোনার জয় দুটি, অন্যটি ড্র। শেষ হয়ে গেছে পাঁচ রাউন্ডের খেলা, কিন্তু এখনও এই গ্রুপ থেকে কারো নিশ্চিত হয়নি পরের ধাপের টিকেট। চার দলের সামনেই আছে নকআউট পর্বের সম্ভাবনা, আবার ছিটকে পড়ার শঙ্কাও। এ দিন টটেনহ্যাম হটস্পারকে তাদের মাঠে ১-১ গোলে রুখে দিয়েছে স্পোর্তিং। আর অলিম্পিক মার্সেইকে ২-১ গোলে হারিয়েছে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট। ৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে টটেনহ্যাম। স্পোর্তি ও আইনট্রাখটের পয়েন্ট সমান ৭ করে। ৬ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে মার্সেই।