অনলাইন ডেস্ক :
খুব করে থাকতে চেয়েছিলেন কাম্প নউয়ে। হতে চেয়েছিলেন সাফল্যের সঙ্গী। কিন্তু ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে মৌসুমের শুরুর দিকে হারাতে হয় চাকরি। এরপর থেকে একরকম চুপই ছিলেন বার্সেলোনার সাবেক কোচ রোনাল্ড কুমান। এবার মুখ খুলেই মনে পুষে থাকা ক্ষোভ ঝাড়লেন তিনি। একমাত্র লক্ষ্য ক্লাবটির সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা। মুন্দো দেপোর্তিভোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোনোরকম রাখঢাক না করে বললেন, দলের ব্যর্থতায় তাকে বলির পাঠা বানানো হয়েছিল। ২০২১-২২ মৌসুমের শুরু থেকে বার্সেলোনার একের পর এক বাজে পারফরম্যান্সের ফলশ্রুতিতে গত ২৮ অক্টোবর কুমানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই সময় লা লিগায় পয়েন্ট তালিকায় ৯ নম্বরে ছিল দলটি। সিদ্ধান্তটি নিতে একটু দেরি হয়ে গেছে বলেও পরে মন্তব্য করেছিলেন লাপোর্তা। এসবের কোনো কিছু নিয়েই এতদিন কিছু বলেননি কুমান। তবে মুন্দো দেপোর্তিভোর সঙ্গে বৃহস্পতিবারের আলাপচারিতায় বার্সেলোনায় তার বিদায়ী সময়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সাবেক নেদারল্যান্ডস কোচ। তার দাবি, সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর লাপোর্তা তাকে কোনো সমর্থন দেননি। “আমি এমন ভাব করতে পারব না যে এই সভাপতির সঙ্গে কিছুই হয়নি। তারা শাভিকে (এরনান্দেস) যে সময় দিয়েছে, আমাকে দেয়নি। এটা আমার জন্য পীড়াদায়ক। আমি (হুয়ান) লাপোর্তার (পছন্দের) কোচ ছিলাম না। প্রথম থেকেই আমি সেটা বুঝতে পারছিলামৃওপর থেকে প্রয়োজনীয় সমর্থনের অভাব ছিল।” কুমান তার খেলোয়াড়ী জীবনের ৬ বছর কাটিয়েছিলেন বার্সেলোনায়। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সেই সময়টায় ব্যক্তিগত নৈপুণ্য আর দলীয় সাফল্যে গৌরবময় এক অধ্যায় কেটেছিল তার। ১৯৯১-৯২ ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে সাম্পদোরিয়ার বিপক্ষে তার একমাত্র গোলে জিতেই প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরা হওয়ার স্বাদ পেয়েছিল কাতালান ক্লাবটি। সেই ক্লাবেই কোচ হিসেবে তার অধ্যায়টা শেষ হয়েছে একরাশ হতাশা নিয়ে। ২০২০ সালের অগাস্টে কুমানকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেন সেই সময়ের প্রেসিডেন্ট জোজেপ মারিয়া বার্তেমেউ। এই বিষয়টিও তার বিপক্ষে গেছে বলে মনে করেন ৫৮ বছর বয়সী এই কোচ। “আমার কাছে কখনোই অর্থ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। আমি সত্যিই বার্সেলোনার কোচ হিসেবে সফল হতে চেয়েছিলাম, সম্ভাব্য সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে লাপোর্তা আমাকে রাখতে চায় না, কারণ আমি তার নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলাম না। তিনি আমাকে হাজারবার এটাও বলেছিলেন যে শাভি কোচ হবে না, কারণ তার অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে। কিন্তু ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য তার একটা ঢাল দরকার ছিল।” কুমানের কোচিংয়ে প্রথম মৌসুমে ২০২০-২১ লা লিগায় তৃতীয় হয়েছিল বার্সেলোনা। সেবার অবশ্য একেবারে খালি হাতে মৌসুম শেষ করেনি দলটি। আথলেতিক বিলবাওকে হারিয়ে কোপা দেল রের শিরোপা জিতেছিল তারা। ২০২১-২২ মৌসুমের শুরু থেকে খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয় কুমান ও বার্সেলোনাকে। ক্লাবের মহাতারকা লিওনেল মেসির দল ছেড়ে যাওয়া, দলে আরও অনেক ভাঙা-গড়ার পালা, বেশ কজনের চোট, এসব তার পথচলাকে কঠিন করে তোলে। সবকিছুর ফলে মাঠের পারফরম্যান্স ক্রমশ যাচ্ছিল নিম্নমুখী। কুমানের বিদায়ের পর গত ৬ নভেম্বর নতুন কোচ হিসেবে নিয়োগ পান শাভি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলেও তার হাত ধরে ধীরে ধীরে স্বরুপে ফিরছে বার্সেলোনা। ইউরোপা লিগে জায়গা করে নিয়েছে শেষ ষোলোয়। লিগেও আছে ভালো ছন্দে। ২৫ ম্যাচে ১২ জয় ও ৯ ড্রয়ে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে তারা।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা