জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
হাইকোর্ট থেকে জাফলংকে প্রতিবেশগত-সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হলেও এখনো থেমে নেই ধংসযজ্ঞ। পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যবহারে হচ্ছে বালু উত্তোলন। ফলে প্রকৃতিকন্যা জাফলং যেমন প্রাকৃতিক ভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে তেমনি নদী তীরবর্তী মানুষ আছেন ভাঙ্গন আতংকে। ঝুঁকির মুখে পড়ছে ডাউকী নদীর উপর নির্মিত সেতুর পিলার। ভাঙ্গনের মুখে জাফলং চা বাগানও। এমন অবস্থায় প্রশাসন অভিযানে গেলেই সটকে পড়েন বালুখেকোরা। তাইতো প্রশাসনের সাথে চলছে বালুখেকোদের চুর-পুলিশ খেলা।
সরেজমিনে জাফলং পিইয়াইন নদীর বল্লাঘাট এলাকায় দেখা যায়, পিয়াইন-ডাউকি নদী থেকে যন্ত্রের ব্যবহার করেই হচ্ছে বালু উত্তোলন। আর এসব যন্ত্রের কালো ধুঁয়া বাতাস ভারি করে তুলছে। উত্তোলনকৃত বালু বল্লাঘাটের দিকে নৌকা ও বাল্কহেড দিয়ে হচ্ছে পরিবহন। এসময় আরও দেখা যায়, জিরো পয়েন্ট থেকে কয়েক’শ গজ দূরে সংগ্রাম টিলা বরাবর নদী থেকে শুরু করে ছলাখেল গ্রাম পর্যন্ত ছোট বড় মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। এমন কী জাফলং বাজারের ডাউকী নদীর ওপর সেতুর নিচ থেকেও বালু তোলা হচ্ছে। তাই ডাউকি নদীর উপর নির্মিত সেতুর একদম নিচ থেকে লিস্টার ম্যাশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে ব্রিজের পিলার।
এদিকে, এক সময় সিলেটের জাফলং এলাকা থেকে বিভিন্ন ভারী যন্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে পাথর উত্তোলনের ফলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রকৃতি কন্যা হিসাবে পরিচিত জাফলং এলাকা। তাইতো প্রকৃতি ও মানুষের ক্ষয়ক্ষতির বিষয় মাথায় রেখে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জাফলংকে প্রতিবেশগত-সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। যার ফলে পাথর উত্তোলন অনেকটা বন্ধ হয়ে আসলেও ডাউকি ও পিয়াইন নদের বিভিন্ন অংশে এখনো থেমে নেই বালু উত্তোলন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নয়াবস্তি বাসিন্দা জানান, ‘পূর্বে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হতো আর এখন মেশিন দিয়ে নদী ভর্তি নে․কা করে বালু উত্তোলন করা হয়। বালু উত্তোলন পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।’
তবে গোয়াইনঘাট থানার ওসি পরিমল দেব বলেন, আমি নতুন এসেছি। আমরা এটি সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ রাখার চেষ্টা করছি। বার বার অভিযান হয়। তবে স্থানীয়দের স্বদিচ্ছা প্রয়োজন।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান বলেন, ইসি এলাকা ঘোষণার পর থেকে সকল কিছু বন্ধ। একসময় ধংসযজ্ঞ ছিলো। বর্তমানে আমরা সর্বোচ্চ ভাবে সতর্ক। মাঝেমধ্যে কেউ বালু উত্তোলন করছে খবর পেলে অভিযান হয়। আগের তুল৯নায় অনেক উন্নত হয়েছে অবস্থা। সব সময় আমরা নজরদারি রাখছি।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি