November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, September 2nd, 2022, 9:09 pm

বাসভাড়া ৫ পয়সা কমানোর প্রভাব পড়েনি গণপরিবহনে

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জ্বালানি তেলের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে বাসভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এর প্রভাব পড়েনি সড়কে। বাসভাড়া আছে আগের মতোই। বুধবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বাসভাড়া প্রতি কিলোমিটার ৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। দূরপাল্লার গণপরিবহনে কিলোমিটার প্রতি ২ টাকা ১৫ পয়সা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে ২ টাকা ৪৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। একদিন পেরিয়ে গেলেও রাজধানীর অধিকাংশ রুটেই কোনো প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। শুক্রবার (২রা সেপ্টেম্বর) বাসচালকের সহকারী ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি সিদ্ধান্তে যাত্রীদের কোনো উপকারই হয়নি, বিশৃঙ্খলা বেড়েছে। মিরপুর- সাড়ে ১১ অনিক প্লাজা থেকে আজিমপুর বাসস্ট্যান্ডের দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। যেখানে বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়া আসে ৩৪ টাকা ৩০ পয়সা। তবে এই গন্তব্যে ৩৮ টাকা ৩৫ টাকা ভাড়া নিচ্ছেন চালকের সহকারীরা। মিরপুর সুপার লিংকের চালকের সহকারী বাপ্পী বলেন, আজিমপুর রুটে কোনো ভাড়া কমেনি, ভাড়া কমবে কেন? আজিমপুর পর্যন্ত ভাড়া আসে ৩৮ টাকা। কিন্তু যাত্রীরা ৩৫ টাকা বা ৩৬ টাকা ভাড়া দিচ্ছেন। মিরপুর সুপার লিংক বাসটি মিরপুর ১২ থেকে রোকেয়া সরণি, ধানমন্ডি ২৭ হয়ে আজিমপুরে যায়। মিরপুর-১১, ১২ থেকে যারা উঠছেন তারা ঠিক ভাড়া দিচ্ছেন। কিন্তু যারা আগারগাঁও বা তার আগে থেকে উঠছেন তারা কম ভাড়া দিচ্ছেন। যাত্রীরা এখন ম্যাপ দেখে ভাড়া হিসাব করে দিচ্ছে বলে জানান বাপ্পী। অনিক প্লাজা থেকে সদরঘাটের দূরত্ব ১৯ কিলোমিটার। সেখানে নির্ধারিত ভাড়া থেকে ৪৫ টাকা হলেও সদরঘাটের আগে যারা নামছেন তাদের কাছ থেকেও একই ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। বিহঙ্গ পরিবহনের চালকের সহকারী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সদরঘাট পর্যন্ত ৯৫ পয়সা ভাড়া কমেছে। সেটা যাত্রীরা কীভাবে দেবে। যাত্রীরা ভাড়া কম দিতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, এবার ভাড়া নিয়ে একটু বেশি ঝামেলা হচ্ছে। যারা বোঝেন তারা ঠিক ভাড়া দিচ্ছেন। যারা বোঝেন না তারা ভাড়া কমেছে বলে বাসে ঝামেলা করছেন। তার মতে, ভাড়া আরও বাড়ানো দরকার কেননা ৩৪ টাকা তেলের দাম বাড়ানোর পরে বাসভাড়া ৪-৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন আড়াই হাজার টাকার তেল বেশি লাগে। কিন্তু মালিক সারাদিনে এক হাজার টাকাও পান না। মিরপুর থেকে উত্তরা, বাড্ডা, মহাখালীতেও বাড়তি ভাড়া নেওয়া অব্যাহত রয়েছে পরিবহনগুলোর। এ ক্ষেত্রে কম দূরত্বে গুনতে হচ্ছে বেশি ভাড়া। মিরপুর-১২ থেকে মাটিকাটা ইসিবি পর্যন্ত চার কিলোমিটারে ১০ টাকা ভাড়া হয়। অথচ ওই রুটে চলাচলকারী বাসগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে নিচ্ছেন ২৫ টাকা। ওয়েবিল নিষিদ্ধ হলেও সে অনুযায়ী ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এদিকে সরকারের বাসভাড়া সমন্বয়ের সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না যাত্রীরা। এক যাত্রী বলেন, সরকার আমাদের সঙ্গে মজা নিয়েছে। কোনো রুটেই ভাড়া কমেনি। এটা কীভাবে সমন্বয় হলো। সামান্য হলেও এতে আসলে পরিবহন মালিকদের সুবিধা হলো। যাত্রীদের কোনো উপকার হয়নি। মতিঝিলগামী যাত্রী আসাদ রহমান বলেন, পাঁচ পয়সা কমানোর কোনো দরকার ছিল না। সময় নিয়ে আরও বড় অংকের টাকা কমানো দরকার ছিল। এই সিদ্ধান্তে গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা বাড়বে। আর বাড়ালে প্রকৃতপক্ষে কত বাড়ে এটা দেখার যেমন কেউ নাই, তেমনি কত পরিবহনগুলো কমালো সেটাও কেউ দেখছে না। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ২০১১ সালে একবার দুই পয়সা কমানো হয়েছিল বাসভাড়া। আবার ২০১৬ সালে তিন পয়সা কমানো হয়েছিল। সেটার প্রভাব সড়কে ছিল না। এবারও পাঁচ পয়সা কমানো হয়েছে। যেখানে এক টাকাই খুঁজে পাওয়া যায় না সেখানে পাঁচ পয়সা কমানো যাত্রীদের সঙ্গে তামাশা ছাড়া আর কিছু না।