November 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, May 13th, 2022, 7:54 pm

বাড়িরপাশে মরিচের আড়ৎ, ন্যায্য মূল্য পেয়ে খুশি কৃষক

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের হঠাৎ করে গ্রামে কাছে সাতটি স্থানে মরিচের আড়ৎ বসা।এতে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে জিম্মিও হতে হচ্ছে না কাউকে। খেত থেকে মরিচ তুলে সরাসরি বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।

বৃহস্পতিবার জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের আড়তে কৃষকরা জানান, আগে খেত থেকে মরিচ তুলে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের মধুপুর গ্রাম থেকে আড়তে যেতে পাঁচ কিলোমিটার এবং শহরে যেতে ২৬ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে হতো। এতে গাড়িতে করে আড়তে নেয়া, আড়তদারদের টোল দেয়াসহ দর-কষাকষির ঝামেলা ছিল। কিন্তু এখন বাড়ির কাছে আড়ৎ হওয়া সকল ঝামেলা এড়িয়ে ভালো দাম পেয়ে খুশি মরিচ চাষিরা।

জানা গেছে, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মহাজনহাট থেকে মধুপুর গ্রাম পর্যন্ত তিন কিলোমিটারের রাস্তায় মহাজনহাটে দুটি, লালাপুর জঙ্গলবাড়ী গ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে একটি, কাঁচনা মধুপুর গ্রামের পুকুরপাড়ে দুটি ও মধুপুর গ্রামের ভেতরে দুটি স্থানে প্রতিদিন আড়ৎ বসিয়ে কাঁচা মরিচ কেনাবেচা হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আড়ৎ বসিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে মরিচ কিনে ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। প্রতিদিন এখানে প্রায় ৬০ লাখ টাকার মরিচ কেনাবেচা হচ্ছে ।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, খেত থেকে তুলেই ন্যায্যমূল্যে সরাসরি বিক্রি করে নগদ টাকা নিয়ে ঘরে ফিরছি। ঝামেলামুক্ত হওয়ায় দিন দিন এসব আড়তে মরিচ বিক্রির চাহিদা বাড়ছে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা সরাসরি টাটকা মরিচ কিনে ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে গাড়িতে তুলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এতে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে জিম্মিও হতে হচ্ছে না কাউকে।

কৃষকরা জানান, প্রযুক্তি কৃষকের হাতের মুঠোয় পৌঁছে যাওয়ায় নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এমন কার্যক্রম কৃষকদের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

মধুপুর গ্রামের ভেতরে সবচেয়ে বড় আড়ৎ বসিয়েছেন জয়নুল হক, আজিজুল হক, দুলালসহ পাঁচ জন ব্যবসায়ী।

তারা জানান, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাদের আড়তে প্রায় ৬ হাজার কেজি মরিচ কেনা হয়। এসব মরিচ বিকেল ৪টার মধ্যে ট্রাকে করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। ঢাকার ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজিতে যা কমিশন দেন, তা নিয়েই আড়তের সবাই খুশি। আজকে প্রতি কেজি মরিচ কেনা হচ্ছে ৩৪ থেকে ৩৭ টাকা দরে।

মধুপুর গ্রামে বসা আড়তে ২০ কেজি মরিচ ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন ওই গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন। তিনি জানান, এই মরিচ বালিয়াডাঙ্গী কাঁচামাল আড়ৎ অথবা ঠাকুরগাঁও রোড আড়তে নিয়ে গেলে গাড়িভাড়া ১০০ টাকা এবং আড়তদারকে ৯০ টাকা টোল দিতে হতো। ৩ ঘণ্টার মতো সময় ব্যয় হতো। সময় ও খরচ দুটোই বাঁচছে বাড়ির পাশে ব্যবসায়ীদের কাছে মরিচ বিক্রি করে।

ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বাজারগুলোতে সকাল ৮টার মধ্যেই আড়ৎ বসে। আমরা মোবাইলে সেখানকার দাম শুনে একই দামে বাড়ির পাশে মরিচ কিনছি। ঢাকার ব্যবসায়ীদের ভিডিও কলে মরিচের কোয়ালিটি দেখানোর পর তারা পরিমাণমতো অর্ডার করছেন। আমরা গাড়িতে করে পাঠিয়ে দিচ্ছি।’

বালিয়াডাঙ্গি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, ‘সীমান্ত এলাকার কৃষকেরাও এখন প্রযুক্তিনির্ভর কৃষিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাজারদর জানতে পারছে। বাড়ির পাশে ফসল বিক্রি করে ন্যায্যমূল্যের পাশাপাশি অতিরিক্ত খরচ থেকে বাঁচছে। কৃষকেরা দুই দিক দিয়েই উপকৃত হচ্ছেন।

—ইউএনবি