অনলাইন ডেস্ক :
তিন গোলের ব্যবধান ঘোচাতে যে মিরাকলের আশায় ছিলেন টমাস টুখেল, হলো না তার কিছুই। চেনা আঙিনায় আক্রমণের ঝড় ঠিকই তুলল বায়ার্ন মিউনিখ। তবে সেই ঝাপটা কী দারুণভাবেই না সামাল দিল ম্যানচেস্টার সিটি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ছয়বারের চ্যাম্পিয়নদের তাদেরই মাঠে রুখে দিয়ে সেমি-ফাইনালে উঠল পেপ গুয়ার্দিওলার দল। আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বুধবার রাতে শেষ আটের ফিরতি লেগের ফল ১-১ ড্র। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ গোলের অগ্রগামিতায় ধাপে পা রাখল প্রিমিয়ার লিগের দলটি। প্রথমার্ধে একটি পেনাল্টি মিস করা আর্লিং হলান্ড বিরতির পর সিটিকে এগিয়ে নেন। শেষ দিকে জসুয়া কিমিখের গোলে হার এড়ায় বায়ার্ন। পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ উৎরাতে যে তীব্রতার প্রয়োজন, শুরু থেকেই বায়ার্নের ফুটবলে তার দেখা মেলে। অধিকাংশ সময় বল দখলে রেখে টানা আক্রমণ করতে থাকে তারা। সপ্তদশ মিনিটে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে সুবর্ণ সুযোগও পায় স্বাগতিকরা। কিন্তু সতীর্থের থ্রু পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে ‘ওয়ান-অন-ওয়ানে’ লেরয় সানের শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট পর বড় বাঁচা বেঁচে যায় স্বাগতিকরা। পাল্টা আক্রমণে সবাইকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া হলান্ডকে পেছন থেকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন দায়দ উপামেকানো। তবে তার আগেই কিঞ্চিৎ ব্যবধানে নরওয়ের ফরোয়ার্ড অফসাইড থাকায় সিদ্ধান্ত পাল্টান রেফারি। ম্যাচের শুরু থেকে ডাগআউটে রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বারবার প্রতিবাদ করায় হলুদ কার্ড দেখেন বায়ার্ন কোচ টমাস টুখেল। ২১তম মিনিটে দারুণ নৈপুণ্যে জাল অক্ষত রাখেন এদেরসন। ডান দিক থেকে সানের ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রুখে দেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক। ৩৫তম মিনিটে আবার উপামেকানোর ভুলে মহাবিপদে পড়তে বসেছিল বায়ার্ন। ডি-বক্সে ফরাসি এই ডিফেন্ডারের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিকে সব অনিশ্চয়তা একরকম শেষ করে দিতে পারতেন হলান্ড; কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মারেন সিটির জার্সিতে অভিষেক মৌসুমেই ৪৭ গোল করা এই স্ট্রাইকার। প্রথমার্ধে প্রায় ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ১০টি শট নিয়ে চারটি লক্ষ্যে রাখতে পারে বায়ার্ন। বিরতির আগের মিনিটেও ভালো একটি আক্রমণ শাণায় তারা; কিন্তু বক্সে শট নেওয়ার আগ মুহূর্তে পিছলে যান জামাল মুসিয়ালা। তারপরও সুযোগ ছিল, কিন্তু জটলার মধ্যে কেউ তেমন কিছু করতে পারেননি। প্রথম ৪৫ মিনিটে গোলের উদ্দেশ্যে মাত্র চারটি শট নেওয়া সিটি ৫৫তম মিনিটে আবার মোক্ষম সুযোগ পায়। কিন্তু ওয়ান-অন-ওয়ানে গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নিয়ে আরও একবার হতাশ করেন হলান্ড। দুই মিনিট পর আর ব্যর্থ হননি তিনি। কেভিন ডে ব্রুইনের পাস ধরে হলান্ড বক্সের মুখে পিছলে পড়া উপামেকানোকে ফাঁকি দিয়ে এগিয়ে যান। এরপর জোরাল শটে গোলরক্ষক ইয়ান সমেরকে পরাস্ত করেন তিনি। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা হলান্ডের মোট গোল হলো আট ম্যাচে ১২টি। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সংখ্যাটা ৪৮। প্রথম লেগে মেজাজ হারিয়ে সতীর্থ সানের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে এবং ম্যাচ শেষে ড্রেসিং রুমে তাকে ঘুষি মেরে সমালোচনার মুখে পড়েন সাদিও মানে। শাস্তিও পান তিনি। এদিন ৬৪তম মিনিটে ওই সানের বদলি হিসেবেই তাকে মাঠে নামান কোচ। ৭৪তম মিনিটে কাছ থেকে জালে বল পাঠান তরুণ ফরাসি ফরোয়ার্ড মাথিস টেল। তবে তার আগে কিংসলে কোমান অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। ১০ মিনিট পর অবশ্য সান্ত¡নাসূচক গোলের দেখা পায় তারা। সিটির ডি-বক্সে তাদের ডিফেন্ডার মানুয়েল আকাঞ্জির হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিকে গোলটি করেন কিমিখ। খানিক পর সিটির এমেরিক লাপোর্তের একটি ফাউলের ঘটনায় আবারও ডাগআউটে বাজেভাবে প্রতিবাদ জানানোয় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন বায়ার্ন কোচ। হতাশাময় ম্যাচে বহিষ্কারাদেশের বিব্রতকর অভিজ্ঞতাও সঙ্গী হলো এই জার্মানের। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। গত আসরের সেমি-ফাইনালে দুই লেগের শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে মাদ্রিদের দলটির বিপক্ষেই হেরেছিল সিটি।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা