আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে বিএনপির আসল চেহারা উন্মোচন করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব পালনকালে যারা আপনাদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের আসল চরিত্র আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা উচিত।’
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ডেলিগেটস কনফারেন্স-২০২৩-এ প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির কোনো অধিকার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করে তাদের এখানে কোনো অধিকার নেই। তারা এ দেশের মানুষের কল্যাণ চায় না এবং তারা জনগণের শত্রু।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলায় প্রায় ৩০ জন সাংবাদিক আহত হওয়ায় সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর হামলাকারীদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি কর্মীরা সেদিন ছদ্মবেশে হামলা চালিয়েছিল, তারা মনে করেছিল তাদের শনাক্ত করা যাবে না এবং শাস্তি থেকে বাঁচতে পারে। কিন্তু অবশেষে তারা ধরা পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘তারা এভাবেই অপকর্ম করেছে। যারা সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর হামলা ও হত্যা করবে তাদের অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’
সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর বিএনপি হামলা চালানোয় তীব্র নিন্দা জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করাই তাদের চরিত্র।’
তিনি এই হামলার বিষয়ে নীরব থাকার জন্য রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘তারা এখন কোথায়? আমরা তাদের দেখি না এবং তাদের কাছ থেকে কোনো কথাও শুনি না। তারা হঠাৎ কোথায় উধাও হয়ে গেল?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় ৩০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন এবং কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ‘কিন্তু আমরা তাদের কারো কাছ থেকে কিছু শুনি না।’
তিনি পুলিশ হাসপাতালে বিএনপির হামলাকে ফিলিস্তিনের একটি হাসপাতালে ইসরায়েলের বোমা হামলার সঙ্গে তুলনা করেন।
ইসরায়েল যেভাবে ফিলিস্তিনের একটি হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়ে নারী ও শিশুদের হত্যা করেছে, ঠিক সেভাবেই তারা (বিএনপি) এখানে একটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না তারা ইহুদিদের কাছ থেকে শিক্ষা নিচ্ছে কি না।’
সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজবোর্ড প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব মালিকদের। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে তারা এটি বাস্তবায়নের পরিবর্তে একটি মামলা দায়ের করেছে।
তিনি বলেন, দশম ওয়েজবোর্ড গঠনের প্রস্তুতি অব্যাহত এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
তিনি ঢাকার বাইরে কর্মরত সাংবাদিকদের মজুরি বোর্ডের আওতায় আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে আরও ১০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নগদ অর্থ দিয়ে এই তহবিল গঠন করা হয়।
তিনি ঢাকার বাইরে কর্মরত সাংবাদিকদের জেলাভিত্তিক আবাসন প্রকল্পের আওতায় প্লট দেওয়ার আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক সংবাদপত্র রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক উন্নত ও ধনী দেশেও সংবাদপত্রের সংখ্যা এত বেশি নয়। তিনি বলেন, দেশে ৩ হাজার ২৪১টি সংবাদপত্র রয়েছে।
বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গণতন্ত্র ও সরকারের ধারাবাহিকতায় আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।
বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বিএফইউজে মহাসচিব দীপ আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরীসহ বিএফইউজের বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে বিএফইউজের সাবেক নেতাদের সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২