প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে চাকরি প্রত্যাশীরা যেন জালিয়াতি ও মধ্যস্বত্বভোগীর শিকার না হন তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘তাই আমাদের সবসময় বিবেচনা করতে হবে যে এই প্রার্থীরা যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশে যেতে পারে এবং উপযুক্ত চাকরি পেতে পারে। এই লোকেরা যেন প্রতারক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের শিকার না হয় তা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির দ্বিতীয় সভায় সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বিভিন্ন ট্রেডে যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলার পাশাপাশি জনশক্তি প্রেরণের জন্য নতুন গন্তব্য খুঁজে বের করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে আমাদের জনশক্তি আছে। কিন্তু আমাদের আরও গন্তব্য খুঁজতে হবে। সরকার নতুন কিছু দেশে জনবল পাঠানো শুরু করেছে। কিন্তু আমাদের দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে হবে। আমরা প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।’
কোন দেশে কী ধরনের দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন তা খুঁজে বের করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দেব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, বিদেশে চাকরির জন্য অসাধু মধ্যস্বত্বভোগী ও প্রতারকদের টাকা দেওয়ার জন্য মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ও জমি বিক্রি করে।
তিনি মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে চাকরির জন্য বিদেশে যাওয়ার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনীতির ওপর সৃষ্ট চাপের সময় প্রবাসীদের আয় দেশের রিজার্ভ এবং সামগ্রিক উন্নয়নে প্রচুর অবদান রেখেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে প্রবাসীদের ঋণ প্রদানের জন্য।
শেখ হাসিনা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য দেশের ফ্রিল্যান্সারদের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ফ্রিল্যান্সাররাও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। নিবন্ধন প্রক্রিয়ার আওতায় এনে আমরা তাদের সার্টিফিকেট দিয়েছি।’
তিনি প্রবাসীদের বৈধ উপায়ে তাদের টাকা পাঠানোর অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, ‘বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে আমরা দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি।’
বর্তমানে দেশে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে এবং মানুষ বেশি উপার্জন করছে। তিনি উল্লেখ করেন যে দিনমজুররা আগে দৈনিক ২০০-৩০০ টাকা উপার্জন করত,এখন কাজের ধরন অনুযায়ী প্রতিদিন ৬০০-১০০০ টাকা উপার্জন করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামাঞ্চলে উপার্জন এই পরিমাণের চেয়ে বেশি। ধান কাটার মৌসুমে তিনবেলা খাবারসহ ৭০০-৮০০ টাকা উপার্জন করা যায়।
তিনি আরও বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতির অনেক উন্নতি হয়েছে। কেউ যদি গ্রামাঞ্চলে যান তাহলে দেখবেন সেখানে জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। মাঝে মাঝে শ্রমের অভাবও দেখা যায়, কারণ মানুষ স্বচ্ছল হয়ে উঠছে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে ইউনূস-আইসিসির আলোচনা
দেশ সংস্কারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র