November 14, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, April 3rd, 2022, 9:26 pm

বিদ্যুৎ উৎপাদনে বায়ুশক্তিকে কাজে লাগাতে কক্সবাজারে হচ্ছে সর্ববৃহৎ বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকার বায়ু শক্তিকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তার অংশ হিসেবে এবার কক্সবাজারে দেশের বৃহৎ বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। বেসরকারি উদ্যোগে ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। ইউএস-ডিকে গ্রিন এনার্জি (বিডি) লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। কক্সবাজারের ৬০ মেগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পে মোট ১১ কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হচ্ছে। ওই প্রকল্পে ১২০ মিটার উচ্চতায় এনভিশনের ইএন১৫৬ মডেলের ২২টি টারবাইন স্থাপন করা হবে। প্রতিটি টারবাইনের উৎপাদন ক্ষমতা ৩ দশমিক শূন্য মেগাওয়াট এবং রোটরের ব্যাস ১৫৬ মিটার। ২০২২ সালের ডিসেম্বর নাগাদ প্রকল্পটির কমিশনিং করা হবে। টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রধান ও পূর্বশর্ত হচ্ছে বায়ুবিদ্যুতের সম্ভাব্যতা যাচাই বা উইন্ড রিসোর্স অ্যাসেসমেন্ট। তারই পরিপ্রেক্ষিতে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) কর্তৃক ভোলার চরফ্যাশন ও তজুমদ্দিন এবং কক্সবাজার জেলার পেকুয়ায় ৩টি মেট টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ বিভাগ বায়ুবিদ্যুৎ বিষয়ে নিজস্ব কারিগরি সক্ষমতায় কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছে। তাছাড়া কক্সবাজারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মোট ২৪৫ মেগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ৯টি স্থানের তথ্য সংগ্রহ করে উইন্ড ম্যাপ প্রস্তুত করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সরকার জ¦ালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিশ্র জ্বালানি ব্যবহারের অংশ হিসেবে নবায়নযোগ্য শক্তিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সৌর, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ আগামী দিনে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার অংশ হিসেবে কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে। আর তা হতে যাচ্ছে দেশের বৃহত্তম বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র। তাছাড়া আরো বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, বিগত ২০০৫ সালের দিকে ফেনীর সোনাগাজীতে মুহুরী নদীর বাঁধ এলাকায় দেশে প্রথম বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) সেটি নির্মাণ করে। মুহুরী নদীর তীর ঘেঁষে প্রতিটি ২২৫ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন চারটি টারবাইন বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। স্থাপিত হওয়ার দুই বছর পর্যন্ত ওই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও পরবর্তী ৭ বছর উৎপাদন বন্ধ ছিল। বর্তমানে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে রয়েছে বলে পিডিবি সূত্রে জানা যায়। তাছাড়া কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় বাংলাদেশের অন্য আরেকটি বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। বিত ২০০৮ সালে সেখানে ৫০টি টারবাইন বসানো হয়। প্রতিটির ক্ষমতা ২০ কিলোওয়াট করে। অর্থাৎ ওই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১ মেগাওয়াট। এখন কক্সবাজারে নতুন প্রকল্পটি চালু হলে দেশে মোট চারটি বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়াবে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে স্রেডা চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন জানান, দেশে এই প্রথম বৃহৎ বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলো। এটি একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। ৬০ মেগাওয়াট বলা হলেও মূলত ওই কেন্দ্র থেকে নিট ৬৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।