November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, July 31st, 2021, 7:35 pm

বিধিনিষেধ নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে ৩ বা ৪ আগস্টে

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম গত শুক্রবার আরও ১০ দিন বিধি-নিষেধ বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করেন। এ বিষয়ে শনিবার (৩১ জুলাই) জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, সেটি অবশ্যই আমাদের মাথায় আছে। কারণ সবকিছুর সমন্বয় আমাদের করতে হবে। সেজন্য আমরা বলছি যে, একটু সময় নেবো। ৩ বা ৪ (আগস্ট) তারিখে এ বিষয়টি পরিষ্কার করে দেবো। ৫ তারিখের পর কী হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, কী হবে, সেটি এখনো সিদ্ধান্ত পাইনি। প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত জানাবেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা নেবো। বিধি-নিষেধ সামনে থাকছে কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটি আসলে কী হবে, এখন তা চূড়ান্তভাবে বলতে পারছি না। সেটি আমাদের বলাও উচিত হবে না। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বিভিন্ন প্রস্তাব আছে, সেগুলো বিবেচনা করে কিভাবে করলে এ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, সেটি আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের কাজকর্মগুলো, যেগুলো একেবারেই অপরিহার্য, সেগুলো চালানো। সেটি কী করলে ভালো হবে, সেজন্য আরেকটু সময় আমাদের লাগবে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহা সামনে রেখে আটদিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। বিধিনিষেধে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ। খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া পরিবহন-সংরক্ষণ ও ওষুধ খাত ছাড়া বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিল্প-কারখানা। এরই মধ্যে ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খোলার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। বন্ধই থাকছে দোকান ও শপিংমল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাইরে বের হওয়াও নিষেধ। কিন্তু এর মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আসেনি করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি। বরং দিন দিন অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতির। বিধিনিষেধ আরও ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সংক্রমণ পরিস্থিতির সঙ্গে অর্থনীতি ও মানুষের জীবিকার বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হচ্ছে সরকারকে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই আগামীতে বিধিনিষেধ বাড়ানো হলেও কিছু ক্ষেত্রে শিথিলতার কথাও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে শিথিলতা আসছে, তা এখনও চূড়ান্ত নয়। বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে আছে। ৫ আগস্টের পর বিধিনিষেধ বাড়বে কি-না, জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত রপ্তানিমুখী শিল্প-কলকারখানা খুলে দিচ্ছি। সেটাও সীমিত পরিসরে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৫ আগস্টের পর কী হবে আমরা সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। প্রধানমন্ত্রী এখনো সিদ্ধান্ত দেননি। আগামী ৩ আগস্ট সিদ্ধান্ত জানানোর চেষ্টা করব। ওইদিন না হলে ৪ আগস্ট সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিধিনিষেধ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উনারা সুপারিশ করেছেন আমরা জানি। সংক্রমণ কমাতে গেলে আমাদের যেসব বিকল্পগুলো আছে, সেগুলো আমরা চিন্তা করছি। আমাদের যদি কিছু অফিস খুলতে হয়, সেই অফিসের জনবল কী হবে? আমরা যতটা এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, যারা শুধু ঢাকায় আছেন তাদের নিয়েই কারখানার কর্মকা- শুরু করা হবে। যারা ঢাকার বাইরে তারা কেউ চাকরি হারাবে না। বিধিনিষেধের মধ্যে হঠাৎ রপ্তানিমুখী কলকারখানা খুলে দেওয়ার খবরে ঢাকামুখী শ্রমিকদের ঢল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, রপ্তানিমুখী যে শিল্প কলকারখানাগুলো আছে সেগুলো রোববার থেকে খুলে দেওয়া হবে। শুধুমাত্র যারা ঢাকাতে আছে, কারখানার আশপাশে যারা রয়ে গেছে, তাদের নিয়ে তারা কাজগুলো করবে ৫ তারিখ পর্যন্ত। আমরা এর ভেতরে সিদ্ধান্ত নেব ৫ তারিখের পর কী হবে। কারখানার শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন এ বিষয়ে তিনি বলেন, গত শুক্রবার আমরা বিষয়টি ক্লিয়ার করেছি। মিটিংয়ে মালিকরা কথা দিয়েছেন, যারা শুধু ঢাকায় আছেন তাদের নিয়েই এ কর্মকা- শুরু করবে, কেউ চাকরি হারাবে না। ৫ তারিখের পরে পর্যায়ক্রমে তাদের নিয়ে আসবে, একেবারে না। এ ক্ষেত্রে কিন্তু ছাঁটাইয়ের কোনো আশঙ্কা নেই। বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানও সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছেন এটি। তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে, কাউকে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কেউ এখানে ছাঁটাই হবে না। ৫ তারিখের পর ধীরে-ধীরে তারা কীভাবে আসবে, আমরা জানাবো। শ্রমিকদের ধাপে-ধাপে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে গণপরিবহন চালু হবে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে কী হবে সেটি নিয়ে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা নেই।