অনলাইন ডেস্ক :
বিপিএলের মান নিয়ে জাতীয় দলের কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহের মন্তব্যের সঙ্গে একদমই একমত নন মুশফিকুর রহিম। তবে মানের গভীরতা বা এসব আলোচনার আগে তিনি তুলে ধরলেন আরেকটি বাস্তবতা। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান মনে করিয়ে দিলেন, দেশের ক্রিকেটারদের অনেকের জীবিকার বড় খোরাক আসে এই টুর্নামেন্ট থেকেই। সম্প্রতি ক্রিকেট ওয়েকসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাথুরুসিংহে বলেন, “আমাদের (বাংলাদেশের) কোনো যথাযথ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট নেই। একটু অস্বাভাবিক শোনাতে পারে এটা। বিপিএল দেখার সময় কখনও কখনও আমি টিভি বন্ধ করে দেই। কিছু কিছু ক্রিকেটার তো কোনো জাতেরই নয়।” এছাড়া এই যুগে ক্রিকেটাররা যেভাবে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট থেকে আরেক টুর্নামেন্টে ছুটে বেড়ায়, সেটিকে ‘সার্কাসের মতো’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এখানে আইসিসি হস্তক্ষেপও কামনা করেন বাংলাদেশের কোচ। হাথুরুসিংহের সেই মন্তব্য নিয়েই জানতে চাওয়া হয় বিপিএলের শুরু থেকে খেলে আসা মুশফিকের কাছে। এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ১২৫ ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার মানের কথা বলার আগে বললেন এই টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য কতটা জরুরি। “সবকিছুর আগে, বিপিএল না হলে, সত্যি কথা, আমাদের সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে। এটা ভাই আমার পুরো মোদ্দা কথা। বিপিএলে যে পারিশ্রমিক একজন ক্রিকেটার পায়, এটা নিয়েইৃ জাতীয় দলে কেউ যদি দুই-তিন বছর খেলে এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের পারিশ্রমিক হয়, তাহলে হয়তো (ওই পরিমাণ) আয় করতে পারবে। অ্যাজ সিম্পল অ্যাজ ইট।”
“তো এটার মান এত খারাপ হবে, এটা কোন দিক দিয়ে আপনি মনে করেনৃ! কোনো ক্রিকেটারই চাইবে না এখানে খারাপ খেলে পরের বছর অবিক্রিত থেকে বাইরে বসে টিভিতে খেলা দেখবে।” বিপিএলের মান নিয়েও হাথুরুসিংহের পুরো উল্টো প্রান্তে মুশফিক। “এটার মান যদি বলুন, অবশ্যই অনেক উঁচু। হ্যাঁ, এটা বলতে পারেন যে, অনেক সময় ১-২টা পিচ একটু এদিক-সেদিক হতে পারে, যে কোনো কারণে রান করাটা কঠিন হয়ে যায়। তবে এই বছর আগের চেয়ে অনেক ভালো ছিল পিচ। এজন্য খেলার মানও অনেক বেড়েছে আগের তুলনায়।” “যারা বলছে (মান খারাপ), তারা কোন মর্মে বলেছেন, তাদেরই জিজ্ঞেস করবেন। তবে আমার কাছে জানতে চাইলে বিপিএলের মান বলুন, সবকিছু উন্নত হচ্ছে।”
মুশফিকের মতে বিপিএলের মান যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে দেশের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের মানও। এবারের আসরে দেশের ক্রিকেটাররা যেভাবে পারফর্ম করেছে, তা জাতীয় দলের জন্যও দারুণ ব্যাপার বলে মনে করেন ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। “অবশ্যই ইতিবাচক দিক (দেশের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স)। যদি পুরো বিপিএলে দেখেন, শীর্ষ সর্বোচ্চ ৫ রান সংগ্রাহক, শীর্ষ ৫ উইকেট শিকারী, সব বাংলাদেশি। এমনি এমনি তো কেউ এত রান করে না, এতগুলো উইকেট পায় না।
পাওয়ারপ্লে বা ডেথে যারা বোলিং করে, তাদের উইকেট পাওয়ার চান্স থাকে বেশি। টি-টোয়েন্টিতে এই দুটি সময়ে বল করা সবচেয়ে কঠিন। এটা ভালো লক্ষণ।” “এর চেয়েও বড় ব্যাপার, যারা ধারবাহিকভাবে ভালো করছে, তারাই অনেক রান করছে বা উইকেট পাচ্ছে। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য অবশ্যই একটা ইতিবাচক দিক। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যদি আমাদের নার্ভটা ঠা-া থাকে বা আমরা যদি ডেলিভার করতে পারি কিংবা (চাপ) জয় করতে পারি, তাহলে ব্যক্তিগতভাবে যেমন ভালো (ওই ক্রিকেটারদের), দলের জন্যও ভালো।”
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা