নিজস্ব প্রতিবেদক:
চালক সেজে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থান নিতেন ডাকাত দলের সদস্যরা। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীদের টার্গেট করে গন্তব্যে পৌঁছানোর নামে গাড়িতে তোলে সর্বস্ব কেড়ে নেওয়া হতো। আবার অনেক সময় প্রবাসীদের বহনকারী গাড়ি টার্গেট করে এগোতে থাকেন ডাকাত দলের সদস্যরা। নির্জন কোনো স্থানে গাড়ি পৌঁছানোর পর প্রবাসীর গাড়ি ঘিরে ধরে লুট করে নেওয়া হতো টাকা পয়সা-স্বর্ণলঙ্কার ও মূল্যবান সামগ্রী। গত বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানীসহ মাদারীপুর ও ফরিদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ ডাকাত চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তাররা হলেন- তৈয়ব আলী, মো. মিলন সরদার, মোছা. রীমা আক্তার হ্যাপি, মো. মনির হোসেন ও বিপুল দেবনাথ। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, একটি ওয়্যারলেস, একটি হ্যান্ডকাফ, নগদ ২৩ হাজার টাকা ও লুণ্ঠিত এক কেজি ৩৬৩ গ্রাম স্বর্ণালংকার জব্দ কারা হয়। বৃহস্পতিবার (৪ঠা নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, প্রবাসী রাসেল ও সাইফুল গাবতলী যাওয়ার উদ্দেশে কাওলা বাসস্ট্যান্ড থেকে সিএনজিযোগে মিরপুর বেড়িবাঁধ যাওয়ার পথে আব্দুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ রোডে একটি গাড়ি তাদের সিএনজির গতিরোধ করে থামিয়ে দেয়। পরে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে সবকিছু নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তুরাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার তদন্তের সূত্রে ডাকাত দলের সদস্যদের নাম পাওয়া যায়। পরে রাজধানীসহ মাদারীপুর ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় কামরাঙ্গীরচর থানার অস্ত্র আইনে আরও একটি মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ডাকাত দলের সদস্যদের টার্গেটই থাকতো ভোর রাতে যারা এয়ারপোর্ট থেকে বিভিন্ন এলাকায় যান তাদের।
তারা বিভিন্ন সময় সিএনজি বা অন্য কোনো গাড়ির চালক সেজে প্রবাসীদের নিজেদের গাড়িতে তুলতো। আবার অনেক সময় প্রবাসীদের ভাড়া করা গাড়িকে টার্গেট করে নিজেরা গাড়ি নিয়ে পিছু নিতো। চালক পরিচয়ে প্রবাসীদের গাড়িতে ওঠানোর পর নির্জন স্থানে বা ফাঁকা রাস্তায় নিয়ে যাওয়া হতো। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ডাকাত দলের অন্য সদস্যরা আরেকটি গাড়ি নিয়ে প্রবাসীর গাড়িটিকে থামিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে টাকা-পয়সাসহ দামি জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যেতো। আবার অনেক ক্ষেত্রে প্রবাসী ঠিক করা কোনো সিএনজি অটোরিকশা বা অন্য কোনো প্রাইভেট গাড়িকে টার্গেট করে তার পেছনে পেছনে অন্য একটি গাড়িতে করে ডাকাত দলের সদস্যরা যেতো। পরে একইভাবে গাড়িটি ফাঁকা রাস্তা বা নির্জন স্থানে গেলে সেই গাড়িটিকে থামিয়ে সবকিছু লুট করে নেওয়া হতো। এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, ওই ঘটনায় এয়ারপোর্টের কোনো ব্যক্তি জড়িত রয়েছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। তবে গ্রেপ্তাররা জানায়, তারা নাকি প্রবাসীদের চলাফেরা বা আকার-ইঙ্গিতে বুঝতে পারে কাদের কাছে মূল্যবান জিনিস রয়েছে। এমন ধরনের ঘটনায় অনেকেই থানায় জানান না। এজন্য আমরা বিস্তারিত জানতে পারি না। আমরা মনে করি এ ধরনের ডাকাতির ক্ষেত্রে থানায় বিস্তারিত জানানো উচিত।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম