নিজস্ব প্রতিবেদক:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে গত দুই দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে ভিজছে রাজধানী। এতে কাজের জন্য বাইরে বের হওয়া মানুষ বিশেষ করে চাকরিজীবী ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
রবিবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হলেও সোমবার বিকেল পর্যন্ত কোনো বিরতি দেখা যায়নি।
আবহাওয়া অফিস ৯ ঘণ্টায় ৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করেছে। এসময় শহরের কিছু অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, আবহাওয়া অফিস সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে এবং সোমবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে বৃষ্টিপাত কমতে পারে।
এ সময় দিনমজুরসহ নিম্ন আয়ের মানুষদের কাজের অভাবে অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। দিনভর হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির কারণে অনেকেই ঘরের ভেতরে থাকতে বাধ্য হয়েছেন।
অন্যান্য কর্মদিবসের তুলনায় সোমবার সকাল থেকে মোটর চালিত যানবাহনের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
আলিফ পরিবহনের ব্যবস্থাপক (পরিবহন) মোহাম্মদ আশরাফ বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে আজ কোম্পানির এক-তৃতীয়াংশ যানবাহন চলাচল করছে। তাছাড়া যাত্রীর সংখ্যাও কম।
এদিকে বৈরি আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে অটোরিকশা চালক ও রিকশাচালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন।
আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে সোমবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে।
বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে আগামী ২৪ ঘণ্টায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২২-৪৩ মিলিমিটার থেকে ৪৪-৪৩ মিলিমিটার।
খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
দেশের পশ্চিমাঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দেশের অন্যত্র তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া সহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ লঘুচাপে পরিণত হবে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম