অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্ববাজারে রেকর্ড গড়েছে পাম ও সয়াবিন তেলের দাম। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির যে রেকর্ড হয়েছিল, সর্বশেষ ইন্দোনেশিয়ার পাম তেল রফতানি বন্ধের ঘোষণায় সেই রেকর্ডও ভেঙে গেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) থেকে ইন্দোনেশিয়ার পাম তেল রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। তার আগে পাঁচ দিনের ব্যবধানে টনপ্রতি সয়াবিনের দাম বেড়েছে প্রায় ১৩৯ মার্কিন ডলার। মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.৭৩। একইভাবে টনপ্রতি পাম তেলের দাম বেড়েছে ১০০ ডলার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ধারাবাহিকভাবে দাম বেড়ে গত ১১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য লেনদেনের বাজার কমোডিটি মার্কেট শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) সয়াবিন তেলের দর উঠেছিল সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮১২ ডলার। যুদ্ধের তীব্রতা কমে আসায় ও চীনের লকডাউন দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কায় দাম সংশোধনও হয়েছিল। নেমে এসেছিল টনপ্রতি ১ হাজার ৬২১ ডলারে। ইন্দোনেশিয়া রফতানি বন্ধের ঘোষণার আগের দিন সিবিওটিতে টনপ্রতি ১ হাজার ৭৯৭ ডলারে লেনদেন হয় সয়াবিন তেল। সয়াবিন তেলের শীর্ষ রফতানিকারক দেশ আর্জেন্টিনার রফতানি সীমিত করার ঘোষণায় খুব বেশি প্রভাব পড়েনি দামে। তবে গত শুক্রবার (২২ এপ্রিল) ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো নিজ দেশের বাজার সহনীয় রাখতে পাম তেল রপতানি বন্ধের ঘোষণায় নতুন রেকর্ড হয় পাম ও সয়াবিনের দামে। বুধবার (২৭ এপ্রিল) সিবিওটিতে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৩৫ ডলারে। পাশাপাশি বেড়েছে পাম তেলের দরও। ইন্দোনেশিয়ার দৈনিক দ্য জাকার্তা পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রফতানি বন্ধের কারণে ইন্দোনেশিয়ার প্রতি মাসে ১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় হাতছাড়া হবে। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১৩ লাখ টন পাম তেল আমদানি হয়। এর ৯০ শতাংশ আমদানি হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে। মালয়েশিয়ার চেয়ে তুলনামূলক কম দামের কারণেই ইন্দোনেশিয়া থেকে বেশি পাম তেল আমদানি করা হয়। মালয়েশিয়া থেকে আমদানি হয় ১০ শতাংশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সূর্যমুখী তেলের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় চাপ পড়েছিল সয়াবিন ও পাম তেলের ওপর। এখন ইন্দোনেশিয়ার রফতানি বন্ধের ঘোষণায় সব ধরনের ভোজ্যতেলের ওপর প্রভাব পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে বিশ্বে পাম তেল রফতানির পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৮১ লাখ টন। এই রফতানির ৫৬ শতাংশ বা ২ কোটি ৬৮ লাখ টনই করেছে ইন্দোনেশিয়া। মালয়েশিয়া রফতানি করেছে ১ কোটি ৫৮ লাখ টন, যা বৈশ্বিক মোট রফতানির ৩৩ শতাংশ। বাকি ১১ শতাংশ রফতানি করেছে কয়েকটি দেশ মিলে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি