April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, July 13th, 2022, 8:15 pm

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদ্ভট নিয়ম কানুন

অনলাইন ডেস্ক :

মোবাইলে ‘সেলফি’ তুলতে অনেকেই পছন্দ করে। কিন্তু, সেই সেলফি তোলাই যদি আইনবিরুদ্ধ হয়; গাছের ডালে বসে থাকতে দেখলেও যদি পুলিশ আপনার কাছে জরিমানা চেয়ে বসে! শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনাগুলি সত্যি। পৃথিবীতে এমন জায়গাও রয়েছে, যেখানে মাঝরাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিলেও অপরাধ হিসাবে ধরা হয়। স্ত্রীর জন্মদিন ভুলে গেলেও জরিমানা ধার্য করা হয় কোনো কোনো দেশে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ রকম কিছু আইন চালু রয়েছে, যা অদ্ভুত মনে হলেও, অমান্য করলে শাস্তি হিসেবে জরিমানা করা হয়। ঘরের বাতি বদল করার জন্যেও লাইসেন্স থাকার নিয়ম রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। ভিক্টোরিয়া অঞ্চলের ইলেকট্রিক মিস্ত্রিদের লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। তাছাড়া ইলেকট্রিকের কোনো কাজ, এমনকি, কারও বাড়িতে লাইট বা বাল্ব খারাপ হলে তা ঠিকও করতে পারবেন না তারা। বরং আইন ভাঙার জন্য জরিমানা দিতে হবে তাদের। শ্রীলঙ্কায় ঘুরতে গেলে স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা করে সেলফি তুলতে হয়। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে গৌতম বুদ্ধ জড়িত। প্রায় সবখানে বুদ্ধমূর্তি চোখে পড়ে। কিন্তু এই মূর্তির ছবি তোলার ব্যাপারেও নানা রকম নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বুদ্ধমূর্তির সঙ্গে কোনো রকম সেলফি তোলা যাবে না। এমনকি, মূর্তির দিকে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে ছবি তোলাও নিষেধ। এমন ছবি তুলতে দেখলেই পুলিশ এসে হাজির হবে। প্রথমে ফোন থেকে সব ছবি ‘ডিলিট’ করতে বলবে পুলিশ। সেই নির্দেশ না মানলে জরিমানাও আদায় করা হবে। কিছু বিশেষ ভঙ্গিমাতে দর্শনার্থীরা বুদ্ধমূর্তির সঙ্গে ছবি তুলতে পারেন। শ্রীলঙ্কার আইন অনুযায়ী, মূর্তির সামনে পাশ ফিরে দাঁড়ালে অথবা মূর্তির দিকে মুখ করে দাঁড়ালে তা আইনবিরুদ্ধ নয়। বায়ুদূষণ, পানিদূষণের মতো শব্দদূষণও পরিবেশের ক্ষতি করে থাকে। এর ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন আইন কার্যকরী করা হয়েছে। সুইজারল্যান্ডেও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যে আইন রয়েছে। রাত ১০টার পর কোনো সুইজারল্যান্ডবাসী শৌচাগারে গেলেও ‘টয়লেট ফ্লাশ’ ব্যবহার করতে পারবেন না। রাতে সেই আওয়াজটুকুও শব্দদূষণের আওতায় পড়ে বলে এই নিয়ম চালু করা হয়েছে। তাই সুইজারল্যান্ডে কাকডাকা ভোর পর্যন্ত ‘টয়লেট ফ্লাশ’ ব্যবহার করে না কেউ। সে দেশের আইন অনুযায়ী, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর আবার তা ব্যবহার করা যায়। কানাডার বাসিন্দারা গাছে চড়ার জন্যও জরিমানা দেন। কানাডার ওশাওয়া এলাকার উদ্যানগুলোতে এই আইন প্রযোজ্য। এই অঞ্চলে যতগুলো উদ্যান রয়েছে, সেখানে যদি কাউকে গাছে চড়তে দেখা যায়, তবে পুলিশ তার কাছে জরিমানা ধার্য করবে। এই প্রসঙ্গে কানাডার পুলিশ জানিয়েছে, এই আইন ওশাওয়া বাসিন্দাদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। রেডিওতে কাজ করতে গেলে অনেক নিয়মবিধি মেনে চলতে হয়। তবে, এজন্য আলাদা আইন রয়েছে কানাডায়। যেকোনো রেডিও চ্যানেলে কোনো অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে হলে তাতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের ৩৫ শতাংশ কানাডার নাগরিক হতে হবে। প্রিয়জনের জন্মদিন ভুলে যাওয়াও আইনের বিরুদ্ধে। এ রকমই নিয়ম রয়েছে ওশিয়ানিয়ায়। সামোয়া অঞ্চলে কোনো বিবাহিত পুরুষ ভুলবশত তার স্ত্রীর জন্মদিন ভুলে গেলে তার হাজতবাস পর্যন্ত হতে পারে। জন্মদিনে কোনো শুভেচ্ছা না জানানো অথবা জন্মদিন পালন না করার অর্থ, স্ত্রীর যে আজ জন্মদিন তা ভুলেই গেছেন তার স্বামী। গৃহপতœী যদি স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তবে স্বামীকে এক দিনের জন্যে হাজতে রাখে পুলিশ। বাড়িতে কুকুর পুষছেন, কিন্তু তাকে ঠিক মতো সময় দিতে পারছেন না? ইতালিতে তা নিয়েও আইন জারি করা হয়েছে। তুরিন এলাকার বাসিন্দারা সারা দিনে অন্তত তিন বার তাদের পোষ্য কুকুরকে নিয়ে বাড়ি থেকে বাইরে না বের হলে ৬৫০ মার্কিন ডলার জরিমানা ধার্য করা হয়। ইতালিতে প্রতি বছর সাড়ে তিন লাখ পোষ্যকে উদ্ধার করা হয়। সে দিকে লক্ষ রেখেই এই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তুরিনে। পোষ্যকে নিয়ে রাস্তায় বের হলেও আইন মেনে চলতে হয়। ক্যাপ্রি দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দারা তাদের বাড়ির পোষা কুকুরকে নিয়ে বের হওয়ার পর খেয়াল রাখেন, যেন তাদের পোষ্য রাস্তায় মলত্যাগ না করে। এ রকম ঘটনা ঘটলেও মালিককে তা পরিষ্কার করতে হয়। যদি কেউ এ দায়িত্ব এড়িয়ে যান, তবে সেই মল সংগ্রহ করে তার ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষায় দোষী ধরা পড়ে এবং আইন ভাঙার জন্য জরিমানা হিসেবে ২৪০ মার্কিন ডলার আদায় করা হয়। সেনাবাহিনীতে এক বিশেষ প্রিন্টের পোশাক ব্যবহারের চল রয়েছে যা বনে-জঙ্গলে লুকাতে সাহায্য করে। আবার, ওই বিশেষ প্রিন্ট বা ক্যামোফ্লাজ ডিজাইনের পোশাক বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়, যা দেশের নাগরিকরাও নিজেদের ইচ্ছেমতো পরতে পারেন। কিন্তু, আফ্রিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে আইন রয়েছে, সেনাবাহিনীতে কর্মরত না হলে কেউ এই বিশেষ প্রিন্টের জামা পরতে পারবেন না। কেউ এই আইন অমান্য করলে তাদের প্রতি নির্দিষ্ট পরিমাণ জরিমানা করা হয়। ভেনিসের সেন্ট মার্ক স্কোয়ারে প্রচুর পায়রার বাস। স্মৃতিস্তম্ভের গায়ে যদি কোনো ভাবে পায়রা মলত্যাগ করে, তা হলে তা স্মৃতিস্তম্ভের সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলবে। এ কথা মাথায় রেখে ইতালির সরকার ২০০৮ সালে একটি আইন জারি করে। সেই আইন অনুযায়ী, পায়রাদের কেউ কিছু খাওয়ালে তার কাছ থেকে ৭০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা আদায় করা হবে। সূত্র: আনন্দবাজার।