April 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, May 30th, 2022, 8:32 pm

বিশ্ব ভেপ দিবস উপলক্ষে টোব্যাকো হার্ম রিডাকশন স্ট্র্যাটেজির ডিসকাশন অনুষ্ঠিত

উন্নত দেশগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে ধূমপান নিরসনের বিকল্প হিসেবে ভেপিং সামগ্রীর মতো নিরাপদ পণ্যের সরবরাহ এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনায় টোব্যাকো হার্ম রিডাকশন (টিএইচআর) স্ট্রাটেজি অন্তর্ভূক্তকরণের জন্য নীতি নির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ২৮ মে বিশ্ব ভ্যাপ দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে রাজধানীর এক হোটেলে ভয়েস অব ভেপার্স বাংলাদেশ আয়োজিত ‘দি নিড ফর টোব্যাকো রিডাকশন স্ট্র্যাটেজি: এচিভিং দি গভর্নমেন্ট’স হেলথ এজেন্ডা অ্যান্ড রেভিনিউ অ্যাম্বিশনস’ শীর্ষক একটি প্যানেল ডিসকাশনে এসব কথা বলেন বক্তারা, একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা যায়।
প্রেসিডেন্ট অব হেলথ ডিপ্লোমেটস এবং হার্ম রিডাকশন বিশেষজ্ঞ ডা. ডেলন হিউম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বজুড়ে একটি উদ্যমী দেশ হিসেবে পরিচিত, যে দেশ কঠোরভাবে তার সমালোচকদের জবাব দেয়। ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশ তার অদম্য শক্তি দিয়ে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি আমুল বদলের মাধ্যমে জনগণের অধিকার সংরক্ষণে সচেতন। দেশের সব খাতেই অসাধারণ অগ্রগতি এরই প্রতিফলন।’
তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি তামাকমুক্ত দেশ হিসেবে দেখতে চান। কিন্তু এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে একটি কার্যকর হার্ম রিডাকশন স্ট্রাটেজি প্রয়োজন যা বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশ বাস্তবায়ন করেছে। কর্তৃপক্ষের উচিত ভেপিংয়ের মতো বিকল্প পণ্যের সহায়ক বিধি প্রণয়ণ এবং যারা ধূমপান ছাড়তে চান তাদের কাছে এটি সহজলভ্য করা। পরিমিত ব্যবহারের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্পের মতো এর নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ধূমপান ছাড়ার উপযোগী সামগ্রী হিসেবে ভেপিংকে তুলে ধরতে হবে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তিন জন ডিরেক্টর-জেনারেল এবং জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের গ্লোবাল পাবলিক হেলথ স্ট্রাটেজির একজন পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ডা. ডেলন। তিনি ওয়ার্ল্ড মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (ডব্লিওএমএ) সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ নিউট্রিশনের প্রধান ফ্যাকাল্টি মেম্বার ড. আলতামাশ মাহমুদ একই কথা বলেন। যিনি নিজেও একজন ভেপ ব্যবহারকারী। তাঁর মতে, ধূমপান ছাড়ার মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে ভেপিং এবং এটি ধূমপানের একটি নিরাপদ বিকল্প। তিনি বলেন, ‘সিগারেট ক্ষতিকর, কিন্তু নিকোটিন ক্ষতিকর নয়। কারণ ধূমপানের সময় সিগারেট পুড়ে টারের মতো বিষাক্ত উপাদান সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে ভেপিং শুধু তাপ উৎপন্ন করে যাতে বাষ্পের মাধ্যমে নিকোটিন গ্রহণ করা যায়। এছাড়া ভেপিংয়ে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির শঙ্কাও নেই।’
বেশির ভাগ দেশই জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যের জন্য পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের ওপর ভরসা রাখেন এবং তাদের মতে, ধূমপানের চেয়ে ভেপিং ৯৫% নিরাপদ।
তিনি বলেন, ‘ঠিক এ কারণেই ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস অব ইউকের (এনএইচএস) টোব্যাকো কন্ট্রোল প্ল্যানের একটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট অধ্যায়ে ভেপিংকে ধূমপান ছাড়ার একটি নিরাপদ বিকল্প হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাস্ট্রের কনজ্যুমার চয়েস সেন্টার অনুযায়ী, বাংলাদেশ যদি যুক্তরাজ্যের মতো শিল্পটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাহলে প্রায় ৬২ লাখ ধূমপায়ী প্রচলিত সিগারেট ছাড়তে সফল হবেন। দেশে প্রাপ্তবয়ষ্ক ধূমপানকারীর সংখ্যা ২ কোটির বেশি; এর মানে এক-তৃতীয়াংশ ধূমপায়ী ভেপিংয়ের মাধ্যমে ধূমপান ছাড়তে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ভেপিংয়ের উপকারিতা উপলব্ধি করে সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলো উন্মুক্ত বাজারে বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে।’
সরকারের স্বাস্থ্য খাতের লক্ষ্য অর্জন এবং রাজস্ব আহরণে ভেপিং কী ভূমিকা রাখতে পারে এ ব্যাপারে আলোচনা করেন বাংলাদেশে ভেপিং শিল্পের একজন অগ্রদূত এবং বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক নিকোটিন সিস্টেমস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন’র (বেন্ডস্টা) প্রেসিডেন্ট সুমন জামান।
তিনি বলেন, ‘ভেপিং শিল্প নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারি যাতে সঠিক চ্যানেলের মাধ্যমে সঠিক পণ্যটি কিনে তা সহজলভ্য করা যায়। এটি তখনই সম্ভব যখন প্রাপ্তবয়ষ্ক ধূমপায়ী যারা ধূমপান ছাড়তে আগ্রহী তাদের জন্য সহায়ক একটি টোব্যাকো হার্ম রিডাকশন স্ট্র্যাটেজি এবং যথাযথ বিধিমালা কার্যকর থাকবে।’
প্যানেল ডিসকাশনের পাশাপাশি দেশজুড়ে যারা ভেপিংয়ের মাধ্যমে নিরাপদ জীবনধারায় আগ্রহী তাদের নিয়ে আয়োজন করা হয় ‘ভ্যাপকন’। ভেপিংয়ের সঠিক নীতিমালা প্রণয়ণের জন্য প্রায় ৫ হাজার ভেপ ব্যবহারকারী পিটিশনে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষক ছিল বেন্ডস্টা।

—-প্রেস বিজ্ঞপ্তি