অনলাইন ডেস্ক :
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে যুদ্ধে টানা বিপর্যয়ের পর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও বিভিন্ন অবকাঠামো হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হলেও এবার রুশ বাহিনীর চোখ পড়েছে গ্যাস প্লান্টের ওপর। গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণাঞ্চলীয় ওডেসা, ডিনিপ্রো শহরসহ বেশ কয়েকটি অংশে বিস্ফোরণ ঘটে। ডিনিপ্রোতে একটি গ্যাসক্ষেত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব হামলায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে এখনও মুখ খোলেনি মস্কো। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে আবাসিক ভবনে হামলায় প্রাণহানি হয়েছে চারজনের। অন্যতম বড় শহর ডিনিপ্রোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একটি কারখানায় আগুন লেগে অন্তত ১৪ জন আহত হন বলে জানিয়েছেন আঞ্চলটির প্রধান। আর দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, কারখানাটিতে অন্যান্য জিনিসের পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্রও তৈরি করা হয়। এদিকে, নিকোপোল শহরের নিক্ষেপ করা হয়েছে অন্তত ৭০টি শেল। এতে কয়েক হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন ও পানির সংকটে পড়েছে। সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাজধানী কিয়েভে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়েছে। তারা দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও দুটি ইরানের তৈরি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এসব হামলাকে কাপুরুষোচিত বলে অভিহিত করে তা প্রতিহতে ইউক্রেন সক্ষম বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক। এদিকে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা রাশিয়া- কেউই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা করেনি। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, তাঁর দেশের গোয়েন্দা প্রধানের তথ্য অনুযায়ী, কোনো পক্ষই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না, এখন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত রয়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইউক্রেনে মস্কোর পারমাণবিক হুমকি এবং ক্রেমলিনের নিয়ন্ত্রণে থাকা মার্কিনিদের বিষয়ে সোমবার আঙ্কারায় মার্কিন ও রুশ গোয়েন্দা প্রধানরা একটি বিরল বৈঠক করেছেন। এটি গত আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সরাসরি আলোচনা। পোল্যান্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দু’জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ইউক্রেন দায়ী নয় বলে আবারও দাবি করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, বিস্ফোরণ ঘটানো ক্ষেপণাস্ত্রটি ইউক্রেনের নয়- এমনটাই নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের শীর্ষ কমান্ডাররা। আর পোল্যান্ড জানিয়েছে, ইউক্রেনকে ঘটনাস্থলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে বড় রকম ক্ষতির মুখে পড়েছে রাশিয়া। দেশটির চলতি অর্থবছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মোট দেশজ উৎপাদন চার শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। এতে দেশটির অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে মন্দা। জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থার তথ্য বলছে, পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা মস্কোর অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলায় আগের ত্রৈমাসিকেও (এপ্রিল-জুন) মোট দেশজ উৎপাদন চার শতাংশ হ্রাস পায়। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য রপ্তানি চুক্তির মেয়াদ আরও চার মাস বাড়তে পারে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, এরদোগান ও জেলেনস্কি পৃথকভাবে এই তথ্য জানিয়েছেন। তুরস্কের উদ্যোগে ফলপ্রসূ আলোচনায় চলমান এই রপ্তানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আজ শনিবার (১৯ নভেম্বর)। তবে মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি রাশিয়া।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু