বিড়াল লালন-পালনের শখ এখন অনেকেরই। শুধু তাই নয়, অনেকের আবার পরিবারের সদস্য বনে যায় বিড়াল। তবে এ নিয়ে আরও বড় পরিসরে ভেবেছিলেন বুশরা সিদ্দিক। বুশরার কথায়, মাস্টার্স পড়াকালীন ঘরে দুটি বিড়াল ছিল তার। কিন্তু সেই সংখ্যাটা যদি আরও বাড়ে তাতে মন্দ হয়না। আর সেই ভাবনা থেকে শখের বসে ২০১৮ সালে শুরু করেন ‘লিটল হুইস্কার ফোস্টার হোম’-এর যাত্রা।
ইউএনবির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বুশরা বলেন,‘আমার দুটি বিড়াল ছিল। যেহেতু বিড়ালদের সঙ্গে খেলতে ভালোবাসি, তাই চাচ্ছিলাম আরও বিড়াল যদি আমার কাছে থাকতো। কিন্তু রাখার তো জায়গা নেই। তাই ফোস্টারের চিন্তা করলাম। এতে বিড়ালরা আসবে আবারও চলেও যাবে। কিন্তু ঘরে অনেকেই থাকবে। এক রুম নিয়ে আমি শুরু করি। তখন একসঙ্গে তিনটি বিড়াল ফোস্টার করতে পারতাম।’
বুশরা আরও বলেন,‘প্রথম দিকে চিন্তা ছিল মাস্টার্স শেষ হওয়া পর্যন্ত ফোস্টার হোম চালু রাখব। কিন্তু পরবর্তীতে এতো বিড়াল একসঙ্গে নিয়ে থাকার যে নেশা, সেখান থেকে বের হতে পারিনি। এরপর ভাবলাম চলতে থাকুক। ফেসবুকে একটি পেজ খুলি। সেখান থেকে অনেকের কাছে পৌঁছাতে শুরু করলাম।’
স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি, দুই ধরনের সেবা প্রদান করে থাকে ‘লিটল হুইস্কার ফোস্টার হোম’। স্বল্পমেয়াদী ফোস্টারের মেয়াদ ৩-৭ দিন। আর দীর্ঘমেয়াদির ক্ষেত্রে এক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। দুই ধরনের সেবার জন্য ভিন্ন ভিন্ন খরচের তালিকা।
শুধু বিড়াল লালনপালন নয়, ‘লিটল হুইস্কার ফোস্টার হোম’-এ আরও রয়েছে চিকিৎসা সুবিধা। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার বুশরা সিদ্দিক এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘ক্যাট ফ্লু বা এফআইভি’র চিকিৎসা আমি করি না। আমার কাছে অনেক অনুরোধ আসে। কিন্তু আমার সেই সক্ষমতা এখন নেই বলে তাদের ফিরিয়ে দিতে হয়। কিন্তু সাধারণ বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসা প্রদান করি। আমি একটি প্রজেক্টের সঙ্গে কাজ করছি, যার নাম টিএনআর। এতে আমার কাছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিড়াল আসে। এমনও হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে সুস্থ করে আবারও নিয়ে গেছেন।’
ঘরে ঘরে বিড়াল পালনের প্রবণতা বাড়ছে। এরসঙ্গে সচেতনতাও বাড়ানো প্রয়োজন বলেন জানান বুশরা। সঠিক নিয়ম মেনে লালন-পালন না করলে হতে পারে নানা ব্যাধী।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্রিডিংয়ের দিকে নজর দিতে হবে। কারণ আমরা না বুঝে বিড়ালের পরিবারের মধ্যে ব্রিডিং করে থাকি এটা বন্ধ করতে হবে। আর বিদেশি বিড়ালের ক্ষেত্রেও আদিখ্যেতা কমাতে হবে। কারণ এদের সঙ্গে দেশি বিড়ালদের ব্রিডিংয়ের কারণে যে ফ্লু ছড়ায় তার চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। প্রায় লাখ টাকার ওপরে।’
বুশরা আরও বলেন, ‘দেশের বাইরে থেকে যারা বিড়াল আনে তাদের অনেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে না। আর এ কারণে যখন দেশের বিড়ালেরর সঙ্গে সেগুলোর ব্রিডিং করা হয় ভয়াবহ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। তাই এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।’
খুব স্বল্প পরিসর থেকে আজকের অবস্থানে ‘লিটল হুইস্কার ফোস্টার হোম’কে নিয়ে এসেছেন বুশরা সিদ্দিকি। সেটি এখনও বড় আকার ধারণ না করলেও বিড়ালদের প্রতি তার যত্নে কোনো কমতি রাখেন না তিনি। সেই প্রত্যয়ে এগিয়ে যেতে চান নিজের স্বপ্নকে নিয়ে।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি