April 24, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, May 12th, 2022, 8:31 pm

বিয়ানীবাজারের ইকবাল মৃত্যুর রহস্য তদন্তে পিবিআই

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট:

সিলেটের বিয়ানীবাজারের পল্লীতে নিহত ইকবাল হোসেন (২৬) মৃত্যুর রহস্য ১৩মাসেও উদঘাটন হয়নি। দীর্ঘসময় থেকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ নিহতের পরিবার। একদিকে স্¦জন হারানো শোকের যন্ত্রণা অন্যদিকে মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে আদালত আর আইনশৃংখলা বাহিনীর দ্বারে-দ্বারে ঘুরে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে নিহত ইকবালের পরিবারের। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে ইকবাল মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই)। নিহত ইকবাল হোসেন উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের দিঘলবাক গ্রামের মো: মস্তুফা উদ্দিনের ছেলে।

জানা যায়, গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে ট্রলি চলাচলকে কেন্দ্র করে উপজেলার শেওলা বাজারে গত ২১ এপ্রিল সন্ধ্যায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন ইকবাল হোসেন। তাকে প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে ঢাকায় চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হলেও ইকবাল আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারেনি। দীর্ঘদিন নিজ বাড়িতে শয্যাশায়ী অবস্থায় থেকে তিনি গত ৪ জানুয়ারী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। নিহতের মা লাইলী বেগম অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষের লোকদের হামলা-মারধরে আহত ইকবালের মাথায় গুরুতর জখম হয়। সেই থেকে সে নিয়মিত বমি করার পাশাপাশি ব্রেইনের নানা সমস্যায় ভূগতে থাকে। ওইদিনের মারধরে তার ছেলে মারা যায়।

সূত্র জানায়, সংঘর্ষের পর লাইলী বেগম বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা (নং ৮/৭৪) দায়ের করেন। এতে দিঘলবাক গ্রামের জড়াই মিয়ার ছেলে আব্দুর রশুক (৩৭), আব্দুল মালিকের ছেলে সেলিম উদ্দিন (৪৫), জড়াই মিয়ার ছেলে মাসুক মিয়া (৪৮) ও জসিম উদ্দিন (৩০), আব্দুল মালিকের ছেলে সাহেদ আহমদ (৩০) কে আসামী করা হয়।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই মামলা চলমান থাকাবস্থায় নিহত হন ইকবাল হোসেন। এতে মামলার বাদী বিয়ানীবাজার থানায় পৃথক আরেকটি সাধারন ডায়রী (নং ১৮৭) করেন। পরবর্তীতে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৪ এ হত্যাকান্ডের ধারা সংযুক্ত করতে আবেদন করেন মামলার বাদী। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ইকবাল নিহতের রহস্য উদঘাটনে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

সরজমিন দেখা যায়, নিহতের এক মা ও দুই বোন চরম অর্থকষ্টে দিনযাপন করছেন। আত্মীয়স্বজনদের সহযোগীযতায় কোনমতে চলছে তাদের সংসার। আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা তুলে নেয়ার চাপ, সংসার-মামলা খরচ আর মৃত্যু রহস্যের কিনারা করতে না পারার কষ্ট নিয়ে চোখের জল তাদের নিত্যসঙ্গি। ইকবালের মা লাইলী বেগম কান্নাকাটি করে বলেন, ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য ভিসা-পাসপোর্ট সব প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু সবছেড়ে প্রতিপক্ষের হামলায় পরপারে চলে পাড়ি জমাল তার ছেলে।

বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, ইকবালের মৃত্যুর আগেই পুলিশ সংঘর্ষের মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে। পরবর্তীতে সে মারা যায়। এক্ষেত্রে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে আদালতের কাছে প্রেরণ করেছি।