সিলেটের বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের পরিত্যক্ত এক নম্বর কূপ খনন করে গ্যাসের মজুদ পেয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে এই কূপে গ্যাসের মজুদ থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় বাপেক্স।
এছাড়া শিগগিরই এ কূপ থেকে উত্তোলন শুরু হবে বলে জানা গেছে। প্রতিদিন এই কূপ থেকে ১০ মিলিয়ন ঘন ফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে ১০ সেপ্টেম্বর বিয়ানীবাজারের এই কূপে খনন শুরু করে বাপেক্স।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীন বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রে দুটি কূপ রয়েছে। এর মধ্যে এক নম্বর কূপ থেকে ১৯৯৯ সালে উৎপাদন শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফের ২০১৬ সালের শুরুতে উৎপাদন শুরু হয়ে আবার ওই বছরের শেষদিকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা এই কূপে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে আবার খননকাজ শুরু হয়।
খনন কাজ শুরুতে ধারণা করা হয়েছিলে, এ কূপ থেকে প্রতিদিন সাত মিলিয়ন বা ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস মিলতে পারে। তবে খনন শেষে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ কূপ থেকে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী শাহিনুর ইসলাম বলেন, আরও কিছু কার্যক্রম শেষে শিগগিরই আমরা এ কূপ থেকে উৎপাদন শুরু করতে পারবো। খনন শুরুর আগে ডিপিপিতে ধরা হয়েছিল এখানে প্রতিদিন পাঁচ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মিলতে পারে। তবে এখন মনে হচ্ছে আরও বেশিই পাওয়া যাবে।
তিনি আরও জানান, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) অধীন বিয়ানীবাজারের কূপ ছাড়াও গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা-৮ ও গোয়াইনঘাট-১০ নম্বর কূপ খনন এবং রশিদপুরে একটি পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের কাজ শেষে এসজিএফএলের গ্যাস উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া দুটি প্রকল্পের আওতায় বিয়ানীবাজার ফিল্ড এবং ব্লক-১৩ ও ১৪-এর আওতায় ডুপিটিলা, বাতচিয়া, হারারগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও সিলেট সাউথে ত্রিমাত্রিস সিসমিক জরিপ কাজ সম্পন্নের পথে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীনে আরও কূপ খননের কাজ চলছে জানিয়ে এই প্রকৌশলী বলেন, ‘এতে ২০২৩ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। সব প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ২০২৫ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড থেকে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ১৬৪ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি পাওয়ার আশা রয়েছে।’
গ্যাসের জন্য খ্যাতি রয়েছে সিলেটের। ১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান মেলে।
এরপর আবিষ্কৃত হয় আরও বেশ কিছু গ্যাসক্ষেত্র।
দেশে বর্তমানে ২৮টি আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এসব গ্যাসক্ষেত্রে প্রমাণিত মজুতের পরিমাণ ২১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন বর্গফুট (টিসিএফ)। আরও ছয় টিসিএফ রয়েছে সম্ভাব্য মজুত।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২