জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
বিয়ানীবাজারে প্রাকৃতিক গ্যাসের অনুসন্ধানে উপজেলাজুড়ে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে পেট্রোবাংলা। এখানকার অন্তত: ৫টি এলাকায় গ্যাসের পরিমাণ অনুসন্ধানে ক‚প খনন করা হচ্ছে। অনুসন্ধান সফল হলে সেই স্থানে গ্যাস উৎপাদন ক্ষেত্র (প্ল্যান্ট) স্থাপন করা হবে। বর্তমানে খুঁটি স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ২য় ধাপে ড্রিলিং কার্যক্রম এবং শেষধাপে জিও পয়েন্ট স্থাপন করে এটি পেট্রোবাংলার কাছে হস্তান্তর করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্টান।
পেট্রোবাংলা জানায়, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের উদ্যোগে বিয়ানীবাজারসহ প্রতিবেশী বড়লেখা ও কানইঘাট উপজেলায় এই অনুসন্ধান চালাচ্ছে দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন সমীক্ষা (টুডি সিসমিক জরিপ)। চায়না পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের মেসার্স ইজিপি ইন্টারন্যাশনাল নামীয় প্রতিষ্টান তিন উপজেলার ১৯১ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রায় ২৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজিপি ইন্টারন্যাশনাল। আগামী ২০২৩সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই জরিপ কার্যক্রম চলবে বলে জানা গেছে।
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের কসবা চালিকোনা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ একর জমিতে টাঙানো হয়েছে গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খননের নিশানা। এ গ্রামের শাহজাহান সিদ্দিক (৪১) জানান, নিজের বাপ-দাদার জমি গেলেও গ্যাস অনুসন্ধান করার খবরে উচ্ছ¡সিত তিনি। গ্যাসের অনুসন্ধানে সফলতা মিললে নির্মাণ হবে কলকারখানা। গ্রাম পাবে নগরায়ণের ছোঁয়া, সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থান। তাই জমি হারালেও তাঁদের নেই কোনো ক্ষোভ। গ্যাস অনুসন্ধানের খবরে উচ্ছ¡সিত এলাকাবাসী।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, অনুসন্ধান কূপ খনন করার জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জমির হুকুম দখল নেওয়া হয়েছে। ওই জমিতে থাকা ফসলের দুই বছরের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যেই এখানে কূপ খনন করা হচ্ছে। কূপ থেকে পাওয়া গ্যাসের ডিএসটি টেস্ট করা হবে। ওই টেস্ট ও অনুসন্ধান সফল হলে গ্যাসের মজুতের অবস্থা বোঝা যাবে। যদি সবকিছু অনুকূলে থাকে, তাহলে গ্যাস উৎপাদন ক্ষেত্র (প্ল্যান্ট) স্থাপন করা হবে।
সম্প্রতি বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের পরিত্যক্ত ১ নম্বর কূপ খননের কাজ আবার শুরু করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।
এ কূপ থেকে প্রতিদিন ৭ মিলিয়ন বা ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা সংশ্লিষ্টদের।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীন বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রে দুটি কূপ রয়েছে। এর মধ্যে ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯৯ সালে উৎপাদন শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফের ২০১৬ সালের শুরুতে উৎপাদন শুরু হয়ে আবার ওই বছরের শেষদিকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা এই কূপে আবার খননকাজ শুরু হয়।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীনে আরও তিনটি কূপ খননের কাজ চলছে জানিয়ে ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘এতে ২০২৩ সালের মধ্যে উলেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। সব প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ২০২৫ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড থেকে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ১৬৪ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি পাওয়ার আশা রয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি