জেলা প্রতিনিধি, সিলেট (বিয়ানীবাজার):
সিলেটের বিয়ানীবাজারে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে গোটা বিয়ানীবাজার উপজেলাবাসীর জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।রাত ও দিনে আধ ঘন্টা, এক ঘন্টা পরপরই বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে। এমন ভেলকিবাজির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে মাকের্ট-শপিং মহলগুলোতে।এভাবে লোডশেডিং অব্যাহত থাকলে ঈদের বাজারে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।এদিকে
বন্যার থৈ থৈ পানির সাথে অসহ্য গরম অন্যদিক বিদ্যুৎ থাকে না ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দিন ১১টায় যেমন বিদ্যুৎ চলে যায় তেমনি রাত ২টায়ও হঠাৎ বিদ্যুৎ থাকেনা। দিন রাত মিলিয়ে প্রায় ৬-৭ বার লোডশেডিং হচ্ছে বিয়ানীবাজারে। এটা আবার কোনো নির্দিষ্ট এলাকার জন্য নয়। সারা উপজেলা জুড়েই একই অবস্থা। এখানে বিদ্যুতের এমন অবস্থা যে, ২৪ ঘন্টার অন্তত: ৭-৮ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকেনা।
গত এক সপ্তাহ থেকে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বিয়ানীবাজারের বাসিন্দারা। এই লোডশেডিং কতদিন চলবে তাও জানা নেই স্থানীয় বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টদের। তবে লোডশেডিংয়ের এই বিড়ম্বনা কেবল বিয়ানীবাজারেই নয়, পুরো সিলেট বিভাগজুড়ে চলছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, তেল ও গ্যাস সংকটের কারণে অনিদির্ষ্টকালের জন্য লোডশেডিংয়ে পড়েছে সিলেট তথা বিয়ানীবাজার। গত দুই দিন ধরে উপজেলায় চাহিদার অর্ধেকেরও কম বিদ্যু সরবরাহ করা হচ্ছে। বিয়ানীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম (কম) নিকিশ সাহা জানান, উপজেলায় প্রতিদিন ১৪ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। তার বিপরীতে আমরা মাত্র ৬-৭ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। লোডশেডিং এর পুরো কার্যক্রম সিলেটের কুমারগাও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে কন্ট্রোল করা হচ্ছে।
জানা যায়, ইউক্রেন যুদ্ধের পর তেল সংকট দেখা দিয়েছে। তাই তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতে প্রায় ১৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এই ঘাটতি পূরণ করতে সারা দেশে লোড ভাগ করে দিয়েছে ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার (এনএলডিসি)।
লোডশেডিংয়ের বিষয়টি জানিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে এ ব্যাপারে একটি পোস্ট শেয়ার করেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেন, ‘গ্যাস স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে অনেক জায়গাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুণরায় স্বাভাবিক হবে। যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির উচ্চমূল্য ও সরবরাহ অন্যান্য সব দেশের মতো আমাদেরকেও সমস্যায় ফেলেছে। এ পরিস্থিতিতে আপনাদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম ভজন চন্দ্র সাহা বলেন, এই লোডশেডিংয়ের কবল থেকে কবে মুক্তি পাওয়া যাবে সেটা সুনির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছেন না। তবে বিবিয়ানাতে প্লান্ট চালু হয়ে গেলে এই সংকট কিছুটা কাটবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি