সিলেটের বিয়ানীবাজারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এই উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বেশিরভাগ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। উপজেলার ১২৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ২৮টি প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এদিকে উপজেলার প্রায় দুই লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
জানা গেছে, বিয়ানীবাজারে প্রতিদিন প্লাবিত এলাকার পরিধি বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে দুর্গত মানুষের সংখ্যা। বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় উপজেলার প্রায় সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান স্থগিত রাখা হয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দুর্গত এলাকায় সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে বিতরণের ধীরগতিতে এখনও অনেক দুর্গত এলাকার মানুষ সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। কুশিয়ারা ও সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রোমান মিয়া বলেন, এখানকার ১৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯৮টিতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এর মধ্যে ২৩টিতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলুদুর রহমান জানান, উপজেলার ৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদরাসা) মধ্যে ৩১টি বন্যার পানি ওঠেছে। অন্যগুলোর মধ্যে পাঁচটিতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
বন্যায় স্থানীয় মানুষের সঙ্গে গবাদি পশু-পাখিও ক্ষতির শিকার হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই জানাতে পারছে না স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর জানান, বন্যা মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। দুর্গত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যাদের ঘরবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে তাদেরকে কাছাকাছি আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা বিদ্যালয় ভবনে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি