দিনাজপুরে ১০ বছর নিঃসন্তান থাকার পর অবশেষে একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিলেন মৌসুমী বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূ। বুধবার সকাল ১১ টার দিকে জেলার এম আব্দুর রহিম মেডিকেল হাসপাতালে তিন ছেলে এবং এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। মা ও চার শিশু সুস্থ রয়েছে।
প্রসূতি মৌসুমী জেলার বিরল উপজেলার ভান্ডার গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কৃষক শরিফুল ইসলামের স্ত্রী।
হাসপাতালের এ্যানেসথিটক্স বিভাগের প্রধান ডা. রিপন কুমার দাস সহ বিভাগের অন্যান্যদের সহায়তায় সিজারিয়ান অপারেশনে অংশ নেন গাইনোকোলোজি বিভাগের প্রধান ডা. ইসরাত শারমিন, বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরজু শামিমা রহমান এবং পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক টিমসহ অন্যান্যরা। মাত্র ২০ মিনিটের চেষ্টায় নিরাপদে একে একে চার ভাইবোনকে সফলভাবে পৃথিবীতে বের করে আনেন তারা। এসময় প্রসূতির জীবন রক্ষায় স্বেচ্ছায় রক্ত দান করেন নবজাতকদের ফুপা জাহানুর আলম, ফুপাতো ভাই রুহুল আমিন এবং চাচা মুন্না।
হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মশিউর রহমান জানান, একসঙ্গে চার জনের সিজারিয়ান জন্ম এই হাসপাতালের প্রথম ঘটনা। ওজনে কম, রক্ত স্বল্পতা, অক্সিজেনের ঘাটতি এবং পরিণত সময়ের কিছুটা আগে আগাম প্রসবের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে চার ভাই বোন। ইউকিউবেটরে নিবিড় পরিচর্যা চিকিৎসাসহ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে চার ভাই বোনকে। এদের মধ্যে তিনজন ছেলে অন্যজন মেয়ে।
কোন রকম জটিলতা ছাড়াই সফলভাবে অপারেশন করতে পারায় খুশি চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে বিয়ের দশ বছর পর একসঙ্গে চার সন্তান পেয়ে আনন্দে ভাসছেন শরিফুল-মৌসুমি দম্পতির দুই পরিবারের স্বজনদের পাশাপাশি পাড়া পড়শিরা। তবে সন্তান সম্ভাবা স্ত্রীর চিকিৎসার পেছনে ওষুধের যোগান দিতে দিতে ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন তিনি। আর্থিক অনটনের কারণে সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে দুচিন্তায় পড়েছেন তিনি।
ভান্ডার গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কৃষক শরিফুল ইসলাম এবং মৌসুমী দম্পতির দশ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। দুই বছরের মাথায় তাদের প্রথম মেয়ে সন্তান অপরিণত সময়ে ভূমিষ্ট হওয়ার কারণে মারা গিয়েছিল। আট বছরের চেষ্টা এবং চিকিৎসায় একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিলো এ দম্পতি।
অন্যদিকে, নবজাতকদের দেখতে হাসপাতালে ভিড় জমান উৎসুক মানুষেরা।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি