অনলাইন ডেস্ক :
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ১৭ বছর ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সব ধরনের সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছিলেন বিমল চন্দ্র মজুমদার নামের এক ব্যক্তি। অবশেষে জানালেন তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দিতে যাচাই-বাছাই কমিটিকে লিখিত আবেদন দিয়েছেন। মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা পেয়ে গেজেটপ্রাপ্ত সন্দেহভাজন বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে যাচাই-বাছাই কমিটিতে ডাকা হয়। উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের মৃত পরেশ চন্দ্র মজুমদারের ছেলে বিমল চন্দ্র মজুমদার একাত্তর সালের মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না বলে লিখিত স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিমল চন্দ্র মজুমদার ২০০৪ সালে ভুয়া জন্ম সনদ দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। দীর্ঘ ১৭ বছর রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়ে তিনি এখন নিজেই তালিকা থেকে নাম বাদ দেয়ার আবেদন করেছেন। উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্র জানায়, বিমল চন্দ্র মজুমদার ২০০৪ সাল থেকে সুযোগ-সুবিধা পেলেও ভাতাপ্রাপ্তি শুরু হয় ২০১৪ সালে জুলাই মাস থেকে। সোনালী ব্যাংক বসুরহাট শাখা সূত্র জানায়, বিমল চন্দ্র মজুমদারের উল্লিখিত হিসাব নম্বরে মোট চার লাখ ৭৫ হাজার ৯৬২ টাকা জমা হয়েছে। সেখান থেকে দুই লাখ ২৮ হাজার ৫২৪ টাকা উত্তোলন করা হয়। বর্তমানে এই হিসাবে দুই লাখ ৪৭ হাজার ৪৩৮ টাকা জমা আছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিমল চন্দ্র মজুমদার ১৯৬৮ সনের জন্ম সনদ দিয়ে বর্তমানে কোম্পানীগঞ্জের বামনী ডিগ্রি কলেজে সাচিবিক বিদ্যা বিষয়ে প্রদর্শক পদে কর্মরত আছেন। কিন্তু ১৯৫৭ সালের ভুয়া জন্ম সনদ ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি ২০০৪ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় গেজেটভুক্ত হন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রাসেল আহমেদ বলেন, বিমল চন্দ্র মজুমদারের বীর মুক্তিযোদ্ধার বিষয়টি সন্দেহ হলে ২০১৯ সালে সোনালী ব্যাংক বসুরহাট শাখাকে তার ভাতা উত্তোলন স্থগিত রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়। এখন তার ওই হিসাব নম্বরে দুই লাখ ৪৭ হাজার ৪৩৮ টাকা জমা আছে। বাকি টাকা উদ্ধারের বিষয়ে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিমল চন্দ্র মজুমদার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, দুষ্ট লোকের প্ররোচনায় আমি মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া কাগজ দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলাম। বর্তমানে আমি সেই তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে আবেদনও করেছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (মুজিব বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান বলেন, বিমল চন্দ্র মজুমদার কখনোই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তখনকার সময়ে রাজনৈতিকভাবে তাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে। এখনো অনেক ভুয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন
লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত যুবকের মরদেহ হস্তান্তর
জনশক্তি, জ্বালানি ও বিনিয়োগে সহযোগিতা জোরদারে কাতারের আমিরের সফর: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
নওগাঁ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত আল আমিনের মরদেহ হস্তান্তর