অনলাইন ডেস্ক :
বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে আইপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি করলেন ট্রাভিস হেড। সঙ্গে বাকিদের অবদানে ফ্র্যাঞ্চাইজি এই টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড গড়ল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়ায় হাল না ছেড়ে লড়াই করল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। তাতে রান উৎসবের ম্যাচটি জায়গা করে নিল রেকর্ডের বিভিন্ন পাতায়। এম চিন্নাস্বামি স্টেডিয়ামে সোমবার জমজমাট লড়াইয়ে বেঙ্গালুরুকে ২৫ রানে হারায় হায়দরাবাদ। ২৮৭ রানের পুঁজি গড়ে স্বাগতিকদের তারা থামিয়ে দেয় ২৬২ রানে। হায়দরাবাদের এই রান আইপিএলে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। চলতি আসরেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ২৭৭ রান করে বেঙ্গালুরুর ১০ বছর পুরোনো ২৬৩ রানের রেকর্ড ভাঙে তারা। এবার নিজেদের রেকর্ডই ভাঙল দলটি। চোখে চোখ রেখে লড়াই করা বেঙ্গালুরু সম্ভাবনা জাগিয়েছিল রান তাড়ায় অবিশ্বাস্য কিছু করে দেখানোর।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা না হলেও তাদের আড়াইশ ছাড়ানো রানে রেকর্ডের পাঠায় উঠে গেছে এই ম্যাচ। ম্যাচটিতে রান হয়েছে ৫৪৯। আইপিএল তো বটেই, স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতেও এটাই এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রান। আগের রেকর্ড ছিল ৫২৩ রানের; চলতি আসরেই হায়দরাবাদ ও মুম্বাইয়ের ম্যাচে হয়েছিল সেটি। এই দুইবারই আইপিএল ম্যাচে দেখা গেল পাঁচশ ছাড়ানো রান। আইপিএলে এই প্রথম এক ম্যাচে দুই দলই করল আড়াইশ ছাড়ানো রান। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এমন ঘটনা দেখে গেছে আর কেবল দুইবার। দুই দলের ব্যাটসম্যানদের তা-বে এই ম্যাচে হয়েছে ছক্কা বৃষ্টি। হায়দরাবাদ তাদের ইনিংসে মেরেছে ২২টি ছক্কা, আইপিএলে যা সর্বোচ্চ।
পরে বেঙ্গালুরু মেরেছে ১৬টি। তাতে স্বীকৃতি টি-টোয়েন্টি ফের দেখা গেল ৩৮ ছক্কার বিশ্ব রেকর্ড। মুম্বাই ও হায়দরাবাদ ম্যাচেও হয়েছিল ৩৮ ছক্কা। দুই দল মিলিয়ে এই ম্যাচে চার হয়েছে মোট ৪৩টি। এতে ম্যাচে মোট বাউন্ডারি সংখ্যা দাঁড়ায় ৮১টি। টি-টোয়েন্টিতে এর চেয়ে বেশি বাউন্ডারি হয়নি আর কোনো ম্যাচে। ঠিক ৮১টি বাউন্ডারি এসেছিল গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে। এদিন বাউন্ডারি থেকে রান এসেছে ৪০০। আইপিএল তো বটেই, টি-টোয়েন্টিতে চার-ছক্কায় এই প্রথম চারশ রান দেখল কোনো ম্যাচ। আগের রেকর্ড ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের ৩৯৪ রান। সড়কের মতো উইকেটে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা হায়দরাবাদকে পাহাড়সম পুঁজি এনে দেওয়ার পথে ১০২ রান করেন হেড। ৪১ বলের ইনিংসটি ৮ ছক্কা ও ৯ চারে সাজান অস্ট্রেলিয়ান বাঁহাতি ওপেনার। ৭ ছক্কা ও ২ চারে ৩১ বলে ৬৭ রান করেন হাইনরিখ ক্লসেন।
দুটি করে ছক্কা-চারে ১৭ বলে ৩২ রান আসে এইডেন মারক্রামের ব্যাট থেকে। ৩ ছক্কা ও ৪টি চারে ১০ বলে ৩৭ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন আবদুল সামাদ। এ ছাড়া ওপেনার অভিষেক শার্মা করেন দুটি করে ছক্কা-চারে ২২ বলে ৩৪। বেঙ্গালুরুর রিস টপলি (৬৮), ইয়াশ দয়াল (৫১), লকি ফার্গুসন (৫২) ও বিজায়কুমার (৬৪) দিয়েছেন পঞ্চাশের বেশি রান। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে একই দলের চার বোলারের রান খরচের ফিফটি করার ঘটনা এটিই প্রথম।
রান তাড়ায় সম্ভাবনাময় শুরু করে বেঙ্গালুরু। ভিরাট কোহলি ও ফাফ দু প্লেসি দলকে এনে দেন ৮০ রানের উদ্বোধনী জুটি। ২ ছক্কা ও ৬ চারে ২০ বলে ৪২ রান করেন কোহলি। আরও কিছুক্ষণ দলকে টেনে ৪ ছক্কা ও ৭ চারে ২৮ বলে ৬২ রান করেন দু প্লেসি। এরপর দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ফেলে বেঙ্গালুরু। তবে খুনে ব্যাটিংয়ে দলকে আশার আলো দেখান দিনেশ কার্তিক। ৭ ছক্কা ও ৫ চারে ৩৫ বলে ৮৩ রানের ইনিংস খেলেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। কিন্তু তার এই রান বেঙ্গালুরুর জন্য যথেষ্ট হয়নি। হায়দরাবাদের হয়ে পঞ্চাশের বেশি রান দেন কেবল ভুবনেশ্বর কুমার। এই পেসার ৬০ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা