নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর :
গত বৃহস্পতিবার রাতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের(বেরোবি) শিক্ষার্থী-স্থানীয়দের সংঘর্ষ। সংঘর্ষে ৪জন আহতসহ বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করা হয়।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসবে বান্ধবীকে উত্যাক্ত করা নিয়ে স্থানীয় একজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পার্কের মোড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে স্থানীয়রা আটক করে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আটক শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে প্রথমে কথা কাটাকাটি পরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোক জড়ো হওয়ায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে গভির রাত ১১টা পর্যন্ত চলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া।
এসময় স্থানীয়রা সালামের মোড় ও শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও পার্কের মোড় এলাকায় রণক্ষেত্র ও ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি হয়। উভয়পক্ষ ইটপাটকেল ছুড়ে ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহড়া দেয়। এ সময় পার্কের মোড় এলাকার বেশকিছু দোকান ভাঙচুর করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যগণ ও পুলিশ প্রশাসনের দীর্ঘ সময়ের চেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ‘মা-বাবা টি স্টোর’ এর মালিক আক্তারুজ্জামান বিপুল বলেন, সন্ধ্যার পর দোকান চালাচ্ছিলাম। এ সময় কয়েকজন লাঠি হাতে ছুটে আসে। দোকান বন্ধ করতে না করতেই দোকানের বাইরে রাখা সব টুল ভেঙে দেয়। যারা দোকানে চা-বিস্কুট খাচ্ছিল তারা টাকা না দিয়েই চলে যায়। আমার দোকান ভাঙচুরে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি এর ক্ষতিপূরণ চাই। এসময় অনেক ক্রেতা বিল না দিয়েই চলে যায় বলে জানা যায়। ‘ভাই-বোন টি স্টোর’ দোকান মালিকের স্ত্রী হালিমা খাতুন। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, পার্কের মোড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মারামারির সময় কয়েকজন লাঠি নিয়ে এসে দোকান বন্ধ করতে বলে। কিন্তু আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার দোকানের চেয়ার, টেবিল, বিস্কুটের বয়াম, এমনকি ফ্রিজ ও দোকানের পাশে থাকা মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। আমার দোকানের সবকিছু ভেঙে ফেলেছে। আমরা এখন কী করে খাব!
আরো কয়েকজন দোকানদার বলেন, আমাদের দোকান ভাঙচুরে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা এ লোকসান কীভাবে সামাল দেব? আমরা এর ক্ষতিপূরণ চাই।
পার্কের মোড় দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, পার্কের মোড় এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে এলাকার ১০টিরও অধিক দোকান ভাঙচুর করা হয়। এমনকি দোকানের পাশে থাকা যানবাহনও ভাঙচুর করা হয়। অন্যায়ভাবে চালানো এ হামলার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা দোকান বন্ধ রাখব এবং আইনের আশ্রয় নেব।
এদিকে বিশ^বিদ্যালয় প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, ঘটনার কথা শোনা মাত্র আমরা প্রক্টরিয়ালবডি ঘটনা স্থলে যাই। দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ফলে চার শিক্ষার্থী আহত হয়েছে তাদের মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসসহ এখানকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
এ ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, অনেক চেষ্টার পরে বর্তমানে এখানকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
এইচএসসির ফল প্রকাশ শিগগিরই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে: বেরোবি উপাচার্য
তিন মাস পর ক্লাসে ফিরলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা