April 16, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, December 21st, 2021, 8:25 pm

বেসরকারি খাতে চালু হচ্ছে বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারি ৫ পাটকল

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

লোকসানের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারি ২৬টি পাটকলের মধ্যে বেসরকারি খাতে ৫টি পাটকল চালু হচ্ছে। দেশের পাশাপাশি বিদেশি প্রতিষ্ঠান ওই পাটকলগুলো পরিচালনা করবে। চালু হতে যাওয়া পাটকলগুলো হলো ক্রিসেন্ট জুট মিলস, বাংলাদেশ জুট মিলস, হাফিজ জুট মিলস, জাতীয় জুট মিলস ও কেএফডি জুট মিলস। মূলত সোনালি আঁশ পাটের সুদিন আবার ফিরিয়ে আনতেই সরকার বন্ধ পাটকলগুলো বেসরকারিখাতে ছেড়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। সেজন্য দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ইজারার জন্য ৫টি প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী ২০ বছরের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে চুক্তির সময়সীমা বাড়ানো যাবে। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বন্ধ করে দেয়া সরকারি পাটকলগুলোর পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। লোকসানের ওই বোঝা বইতে না পেরে গত বছরের ১ জুলাই পাটকলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। তার আগে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী শ্রমিককে স্বেচ্ছা-অবসরে (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক) পাঠানো হয়। তারপর চলতি বছর এপ্রিলে বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশন (বিজেএমসি) সরকারি পাটগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। তারপর ৫৯টি প্রস্তাবনা থেকে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৫টি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, চলতি মাসেই দুটি কোম্পানি বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) সঙ্গে দুটি পাটকলের ইজারার জন্য চুক্তি সই করেছে। ওসব কোম্পানি ২৪ মাসের অগ্রিম ভাড়া বাবদ বড় অঙ্কের সিকিউরিটি মানি জমা দিয়েছে। আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই বাকি ৩টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই হবে। তারপরই ওসব প্রতিষ্ঠানকে পাটকলগুলো বুঝিয়ে দেয়া হবে। বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া ৫টি পাটকলের মধ্যে সবচেয়ে বড় খুলনার ক্রিসেন্ট জুট মিলস। ওই পাটকলটির ইজারা পেয়েছে মিমো জুট লিমিটেড। নরসিংদীর বাংলাদেশ জুট মিলসের ইজারা পেয়েছে বে ফুটওয়্যার লিমিটেড। চট্টগ্রামের কেএফডি জুট মিলস ও হাফিজ জুট মিলস নামে দুটি পাটকলও ইৎারার তালিকায় রয়েছে। ওই দুটি পাটকল ইজারা পেয়েছে যথাক্রমে ইউনিটেক্স কম্পোজিট ও সাদ মুসা গ্রুপ। আর সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুট মিলস ইজারা পেয়েছে যুক্তরাজ্যের জুট রিপাবলিক। ইজারার শর্ত অনুযায়ী ওই প্রতিষ্ঠানগুলো পাটপণ্য ছাড়া কারখানায় অন্য কোনো পণ্য উৎপাদন করতে পারবে না। তাছাড়া তারা শুধু কারখানার জমি, যন্ত্রপাতি ও কারখানা প্রাঙ্গণ সংলগ্ন জমি ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু পাটকলের ভেতরে খোলা অন্য জায়গা ব্যবহার করতে পারবে না। একই সঙ্গে পাটকলের সম্পত্তি বন্ধক রেখে ব্যাংক ঋণ নিতে পারবে না। কোনো প্রতিষ্ঠান ইজারা বাতিল করতে চাইলে অবশ্যই বিজেএমসিকে অন্তত ৬ মাস আগে জানাতে হবে।
সূত্র আরো জানায়, সিকিউরিটি মানি দেয়ার পর চুক্তি হয়ে গেলে ওই প্রতিষ্ঠানকে পাটকল বুঝিয়ে দেয়া হবে। তখন ইজারাদার প্রতিষ্ঠানগুলো কারখানায় উৎপাদনে যেতে পারবে। তবে আগামী মাসের মধ্যেই তাদের চুক্তি করতে হবে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে পাট ও বস্ত্রসচিব আবদুর রউফ জানান, বন্ধ পাটকলগুলো আবার চালু করার জন্যই বেসরকারিখাতে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। তাতে অনেক মানুষের কর্মসংস্থাান হবে। আগামী মাসের মধ্যে সবগুলো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই হবে। দীর্ঘদিন পাটকলগুলো বন্ধ ছিল। তাতে পাটকলগুলোর যন্ত্রপাতিগুলো মরিচা পড়ে গেছে। ওসব ঠিকঠাক করতে কিছু সময় লাগবে। আশা করা যায় স্বল্প সময়ের মধ্যে কারখানাগুলো উৎপাদনে যাবে। এখন ৫টি পাটকল বেসরকারিখাতে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে বাকি পাটকলগুলোর ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।