পাবনা প্রতিনিধি :
আওয়ামীলীগের নারী কর্মির বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট ও শেয়ার করার অভিযোগে পাবনার বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবুসহ দু’জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়নের হরিনাথপুর গ্রামের শংকর কুমার শীলের স্ত্রী সীমা রানী শীল। মামলা নং ৩০পি/২১, তাং ২৬/০৯/২০২১ ইং। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পাবনাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
অভিযুক্ত দু’জনের মধ্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু জাতসাকিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তিনি আমিনপুর থানার নয়াবাড়ি গ্রামের মৃত জহুরুল ইসলাম মিয়ার ছেলে। অপরজন মোল্লা আরমান বিশ্বনাথপুর গ্রামের তোফাজ মোল্লার ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর একটি প্রতিবাদ সমাবেশে দ্বিতীয় অভিযুক্ত বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু তার বক্তব্যে স্বামীর নাম উল্লেখ করে ‘শংকরের স্ত্রী (মামলা বাদিনী) জনৈক ব্যক্তির সাথে রাত যাপন করেন’ উল্লেখ করেন। তার কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট শেয়ার হয়। তার প্রদানকৃত বক্তব্য মামলার প্রথম অভিযুক্ত মোল্লা আরমানের ফেসবুক আইডি দিয়ে ওইদিন সরাসরি প্রচার করেছেন। দ্বিতীয় অভিযুক্ত রেজাউল হক বাবু ওই বক্তব্য পরদিন ২০ সেপ্টেম্বর নিজ আইডি থেকে শেয়ার করেছেন।
মামলার বাদীর ভাষ্যমতে, প্রথম আসামী ফেসবুকে ধারণকৃত ও প্রচারকৃত বিষয়টি সম্পূর্ন মিথ্যা, মানহানিকর, উদ্দেশ্য প্রণোদিত, আক্রমনাত্মক, ভীতি প্রদর্শনমূলক ও সাম্প্রদায়িক শান্তি শৃংখলা বিনষ্ট করেছে। তিনি দাবী করেন, এই অসত্য, কাল্পনিক, মিথ্যা বক্তব্য তার পরিবার ও সমাজ এবং সম্প্রদায়ের কাছে মারাত্মকভাবে অপমানকজনক, মানহানিকর। এগুলোর কোন যাচাই বাছাই না করেই মামলার দ্বিতীয় অভিযুক্ত তার আইডি থেকে শেয়ার দিয়েছেন। সুবিচারের আশায় তিনি অভিযুক্ত দুইজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ধারা ২৫ এর ১ (ক), ২৯ (১), ৩১ (১) এবং ৩৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পাবনাকে তদন্ত করে আগামী ২৮ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী সীমা রানী শীল বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মনগড়া বক্তব্য শেয়ার করে সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতি করেছেন অভিযুক্তরা। তিনি ন্যায় বিচারের আশায় আইনের আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছেন। তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি।
এ বিষয়ে দ্বিতীয় অভিযুক্ত বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু বলেন, আমি গত রোববার সন্ধ্যার পর মামলার বিষয়টি জেনেছি। মামলার নকল কপি তুলে দেখি কি বিষয়। আর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করে দেখবে। যদি ঘটনার সত্যতা পায় তাহলে মামলা হবে। যদি মিথ্যা হয় তাহলে তো মামলা হবে না।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পাবনার পুলিশ সুপার ফজলে এলাহী মামলাটি তদন্তের নির্দেশনা পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবুসহ দু’জনের বিরুদ্ধে একটি মামলার তদন্তের নির্দেশনা পেয়েছি। ইতিমধ্যে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পঙ্কজ কুমারকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেবার চেষ্টা করা হবে। যদি না হয় আদালতের কাছে সময় বৃদ্ধির আবেদন করা হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি