April 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, October 12th, 2022, 7:13 pm

বোলারদের ব্যর্থতায় ফাইনালের আশা শেষ বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক :

টানা তিন হারে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফাইনালে খেলার আশা শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের। বুধবার (১২ অক্টোবর) ক্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪৮ রানে হারলো বাংলাদেশ। এই পরাজয়ে ফাইনাল খেলার আশা শেষ হয়ে গেল টাইগারদের। এ ম্যাচ জিতে পাকিস্তানকে নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করলো স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। আগামী ১৪ অক্টোবর ফাইনাল খেলবে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান। এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড ৪টি এবং পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ৩টি করে ম্যাচ খেলেছে। ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে নিউজিল্যান্ড। ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে পাকিস্তান। সবগুলো ম্যাচ হেরে খালি হাতে টেবিলের তলানিতে বাংলাদেশ। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে একাদশে তিন পরিবর্তন নিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে খেলতে নামে বাংলাদেশ। মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পান সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও এবাদত হোসেন। নিউজিল্যান্ড একাদশে ছিলেন না অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তার পরিবর্তে দলকে নেতৃত্ব দেন টম লাথাম। ব্যাট হাতে নেমে মারমুখী মেজাজে শুরু করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ে। ৪ দশমিক ১ ওভারেই ৪৫ রান তুলে ফেলেন তারা। তাতে ১৭ বলে ৩২ রান ছিলো আগের ম্যাচের হিরো অ্যালেনের। চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে অ্যালেনকে বিদায় করেন বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। মিড-উইকেটে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন ইয়াসির আলি। ১৯ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩২ রান করেন অ্যালেন। দলীয় ৪৫ রানে অ্যালেনকে হারালেও রান তোলায় ভাঁটা পড়েনি নিউজিল্যান্ডের। রানের চাকা সচল রেখেছেন কনওয়ে ও তিন নম্বরে নামা মার্টিন গাপটিল। ১১তম ওভারেই নিউজিল্যান্ডের রান ১শতে নিয়ে যান তারা। ঐ ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান কনওয়ে। এজন্য ৩০ বল খেলেন তিনি। ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাংলাদেশকে কাঙ্খিত ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার এবাদত হোসেন। এবাদতের ফুলটস বল লং-অন দিয়ে মারতে গিয়ে শান্তকে ক্যাচ দেন গাপটিল। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৭ বলে ৩৪ রান করেন গাপটিল। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৪ বলে ৮২ রান যোগ করেন গাপটিল ও কনওয়ে। গাপটিল ফেরার দুই ওভার পর থামেন কনওয়েও। ইনিংসের ১৭ ও নিজের তৃতীয় ওভারে কনওয়ে ও মার্ক চাপম্যানকে শিকার করেন সাইফুদ্দিন। পুল শটে স্কয়ার লেগে শান্তকে ক্যাচ দেন ৪০ বল খেলে ৬৪ রান করা কনওয়ে। ইনিংসে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন তিনি। একই ওভারের চতুর্থ বলে দারুন এক ডেলিভারিতে ৩ বলে ২ রান করা চাপম্যানকে বোল্ড করেন সাইফুদ্দিন। এরপর শেষদিকে বাংলাদেশ বোলারদের উপর ঝড় বইয়ে দেন গ্লেন ফিলিপস। ১৬তম ওভারে সাকিবকে পরপর দু’টি ছক্কা মারা ফিলিপস, সাইফুদ্দিনের করা ১৯তম ওভার থেকে ১৭ রান তুলেন। ঐ ওভারেই মাত্র ১৯ বলে টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি করেন ফিলিপস। শেষ পর্যন্ত এবাদতের শিকার হওয়ার আগে ২৪ বলে ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৬০ রান করেন ফিলিপস। তাই কনওয়ে ও ফিলিপসের ব্যাটিং নৈপুন্যে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের পক্ষে সাইফুদ্দিন ৩৭ রানে ও এবাদত ৪০ রানে ২টি করে উইকেট নেন। নিজের প্রথম ৩ ওভারে ২০ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন সাইফুদ্দিন। শেষ ওভারে ১৭ রান দেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে বল করা ছয় বোলারের মধ্যে একমাত্র সাইফুদ্দিন বাদে প্রত্যকের ইকোনমি রেট ১০ স্পর্শ করে। আর সাইফুদ্দিনের ৯ দশমিক ২৫ ছিলো। ২০৯ রানের বিশাল টার্গেটে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে আকাশে বল তুলে দিলেও, এ যাত্রায় বেঁেচ যান শান্ত। পরের দুই ওভারে ২টি করে চার মারেন লিটন ও শান্ত। চতুর্থ বলে প্রথম বলে সাউদিকে ক্যাচ দিয়ে আবারও জীবন পান শান্ত। ইনিংসের শুরুতে দু’বার জীবন পেয়ে পেসার এডাম মিলনের বলে ব্যক্তিগত ১১ রানেই বিদায় নেন শান্ত। এরপর উইকেটে আসেন ২০২১ সালের নভেম্বরের পর প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা সৌম্য। সৌম্য আসার পর পাওয়ার-প্লের সুবিধা নিতে ১টি করে চার-ছক্কা মারেন লিটন। কিন্তু পঞ্চম ওভারের ব্রেসওয়েলের তৃতীয় বলটি লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে গাপটিলকে ক্যাচ দেন লিটন। ১৬ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ রান করেন তিনি।
পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৫২ রান পায় বাংলাদেশ। লিটনের বিদায় ক্রিজে সৌম্যর সঙ্গী হন সাকিব। অষ্টম ওভারে সৌম্য ২টি ও সাকিব ১টি চার মারেন। দারুন শুরুর পরও দশম ওভারের শেষ বলে মিলনের বলে থার্ড ম্যানে বোল্টকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৩টি চারে ১৭ বলে ২৩ রান করা সৌম্য।। সাকিব-সৌম্য জুটি ২৭ বলে ৪৩ রান যোগ করেন। দলীয় ৯০ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে সৌম্যর আউটের পর বাংলাদেশের মিডল-অর্ডার ব্যাটাররা যাওয়া আসার মিছিল শুরু করেন। আফিফ হোসেন ৪, নুরুল হাসান ২ ও ইয়াসির ৬ রান করে ফিরেন। তাতে ৬ উইকেটে ১৩৫ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। সতীর্থরা সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হলেও নিজের স্টাইলে ব্যাট চালিয়েছেন সাকিব। মাঝের ওভারগুলোতে ঝড়ো ব্যাট করেছেন তিনি। ১৬তম ওভারে টি-টোয়েন্টিতে ১১তম হাফ-সেঞ্চুরিতে পা রাখেন সাকিব। ৩৩ বলে অর্ধশতক করা সাকিবের ইনিংসে ৬টি চার ছিলো। ১৮তম ওভারে জীবন পেয়ে, ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হন সাকিব। সাউদির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৪ বলে ৭০ রান করেন সাকিব। এই ইনিংস খেলার পথে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে টপকে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের মালিক হয়ে যান সাকিব। সাকিবের ঝড়ো হাফ-সেঞ্চুরি সত্ত্বেও ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬০ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মিলনে ২৪ রানে ৩ উইকেট নেন। ব্রেসওয়েল-সাউদি ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন নিউজিল্যান্ডের ফিলিপস। আজ বৃহস্পতিবার লিগ পর্বের ও নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। প্রথম পর্বে পাকিস্তানের কাছে ২১ রানে হেরেছিলো টাইগাররা।