November 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, September 3rd, 2024, 8:43 pm

ভরা মৌসুমেও চাঁদপুরে ইলিশের সরবরাহ কম, দামও চড়া

ইলিশের ভরা মৌসুমেও দেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ চাঁদপুর বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে (বড় স্টেশন মাছ ঘাট) বাড়েনি সরবরাহ। যার ফলে আড়তে ও স্থানীয় মাছ বাজারে পদ্মা-মেঘনা নদীর ইলিশের দাম এখনও চড়া। ১ কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১ হাজার ৭০০ টাকা।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর মাছ ঘাটে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম আড়তগুলো। ইলিশের পাশাপাশি আড়তগুলোতে অন্যান্য প্রজাতির মাছও বিক্রি হয়।

আড়তগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, নোয়াখালী, হাতিয়া, ভোলা, লক্ষীপুর, চরফ্যাশন ও বরগুনা থেকে আসা ইলিশ ট্রাক থেকে নামিয়ে স্তূপ করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় ইলিশসহ অন্যান্য মাছ পাঠানোর জন্য বক্স করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিক হাঁকডাক দিয়ে পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বতর্মানে এখানে প্রায় ১০০ মাছব্যবসায়ীর আড়ত রয়েছে বলে জানান প্রবীণ মৎস্য ব্যবসায়ী ও মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবেবরাত সরকার।

ঘাটের ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে জেলেরা পদ্মা-মেঘনা থেকে ধরে আনা ইলিশ বিক্রি করেন আড়তে। জেলে মুছা পাটওয়ারী ও সোলায়মান বলেন, ঋণ করে কেনা জাল এবং নৌকা মেরামত করে নেমেছি নদীতে। এখন ইলিশের মৌসুম কিন্তু নদীতে এখনও ইলিশ কম। তাবে দাম ভালো পাচ্ছি। আর একমাস পরে মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা দেবে। তাই আমাদের এখন চিন্তা কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবো।

চাঁদপুর শহরের বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘আমার স্বজনদের জন্য ঢাকায় পাঠাতে ইলিশ কিনেছি। পদ্মার প্রতি কেজি ইলিশ এখনও ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা। বেশি পরিমাণ ইলিশ কেনার ইচ্ছা থাকলেও বেশি দামের কারণে কিনতে পারিনি।’

নরসিংদী থেকে ইলিশ কিনতে আসা এসএম শাহীন বলেন, ঘুরাঘুরির ফাঁকে ইলিশের বাড়ি খ্যাত চাঁদপুর মাছঘাটে এসেছি কম দামে ইলিশ কিনতে। কিন্তু এখানে এসে দেখি ভিন্ন চিত্র। ইলিশের দাম অনেক বেশি। ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১৭০০ টাকা। কী কারণে ইলিশের দাম এত বেশি বুঝতে পারছি না।’

ভাই ভাই মৎস্য আড়তের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন ব্যাপারী বলেন, স্থানীয় ইলিশের আমদানি কিছুটা বেড়েছে। তবে দাম কমেনি। ইলিশের পাশাপাশি পোয়া, চিংড়ি ও দেশীয় চাষের মাছও ঘাটে বিক্রি হচ্ছে।

মেসার্স মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া আড়তের ম্যানেজার ওমর ফারুক বলেন, গত বছর এই সময় দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার মণ ইলিশ আমদানি হয়েছে। কিন্তু এবার তা কমেছে। প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। ছোট সাইজের ইলিশ প্রতিমণ ৩০-৩৫ হাজার টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ইলিশ প্রতিকেজি ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা। ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি ১৬০০ থেকে ১৭০০টাকা। আর ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি ২০০০ থেকে ২১০০টাকা। তবে দক্ষিণাঞ্চলের হাতিয়া ও আশপাশের জেলা থেকে আসা ইলিশ প্রতি কেজিতে ১০০ থেকে ২০০ টাকা কম।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবেবরাত সরকার বলেন, মাছঘাট এলাকার পাশে ত্রিনদীর (মেঘনা-পদ্মা-ডাকাতিয়া) মোহনায় বঙ্গবন্ধু পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত স্থান থেকে এখানে নারী পুরুষ ও শিশুরা লঞ্চে করে ঘুরতে আসেন। আবার ফেরার সময় ইলিশ মাছ কেনেন। অনেকে আবার টাটকা ইলিশ কিনে নদীর পাড়ে রেস্টুরেন্টে পরিবারের স্বজনদের নিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেন।

এখন প্রতিদিন ৫শ থেকে ৭শ মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক।

তিনি আরও বলেন, ইলিশের পাশাপাশি আড়তগুলোতে চিংড়ি, পোয়া ও চাষ করা মাছ বিক্রি হচ্ছে। এসব ইলিশ ট্রাকে করে দেশের উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন দূর-দূরান্তের জেলায় পাঠানো হয়। ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলা হয়ে সেই নেত্রকোনা পর্যন্ত যায় এই মাছগুলো।

—–ইউএনবি