নিজস্ব প্রতিবেদক:
চীনে পড়ুয়া ছয় হাজার শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে ছুটিতে এসে আটকা পড়েছেন। ভ্যাকসিন নিলেও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত যেতে পারছেন না। দ্রুত ভিসা চালু করার দাবিতে লাগাতর আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সহস্রারাধিক শিক্ষার্থী আন্দোলন যুক্ত হন। সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না এলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানান আন্দোলনকারীরা। তবে পরে স্বারকলিপি দেওয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে বাড়ি ফিরে যান চীনে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় দ্রুত চীনে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন থেকে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা করে ভয়েস অব বাংলাদেশি স্টুডেন্টস ইন চায়না। পরে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বারক লিপি দেয়। সেখান থেকে ফিরে এসে প্রতিনিধি দলের প্রধান ফজলে রাব্বি জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বারক গ্রহণ করেছে। তারা আশ্বস্ত করেছে দ্রুতই আমাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করবেন। প্রয়োজনে বিশেষ ফ্লাইটে চীনে যাওয়ার ব্যবস্থা করবেন। মন্ত্রণালয় সব সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে বলেও জানান তিনি। এর আগে শিক্ষার্থীরা জানান, চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছয় হাজার শিক্ষার্থী করোনার কারণে দেশে ছুটিতে আসেন। তারা প্রায় দুই বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করলেও এখনো চীনে ফেরত যেতে পারছেন না। তাদের তিন বছরের কোর্সের মধ্যে দুই বছর অতিবাহিত হতে চলছে। আটকা পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে পড়ালেখা করছেন। অনলাইন ক্লাস করে তাদের কোর্স শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস জরুরি হয়ে পড়লেও এখনো তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে ভিসা পাচ্ছেন না। তারা বলেন, চীনের শর্ত অনুযায়ী আমরা দুই ডোজ করোনা ভ্যাকসিন নিলেও ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করতে না পারায় আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পরবর্তী সেমিস্টার করতে না পড়ালে আমাদের পড়ালেখা ও ক্যারিয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। আন্দোলনের মডারেটর তানভির আহমেদ রোহেদ বলেন, চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি নিয়ে কেউ মাস্টার্স এবং পিএইচডি কোর্সে গবেষণার কাজে যুক্ত রয়েছেন। চীনে যেতে না পারায় বর্তমানে তাদের বৃত্তির ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে দিন পার করছেন। সমস্যার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ছয় দফায় আবেদন জানালেও তারা কোনো ধরণের পদক্ষেপ নেয়নি। তারা আমাদের বিষয়ে উদাসীন আচরণ করছেন। তিনি বলেন, পার্শবর্তী দেশ পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরা এক মাস আগে চীনে চলে গেলেও আমাদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় আমরা ঘর ছেড়ে রাজপথে এসে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম