অনলাইন ডেস্ক :
পশ্চিম লন্ডনের বহুতল ভবন গ্রেনফেল টাওয়ার ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে এ সিদ্ধান্ত বলে জানা যায়। ভবনটির কাঠামো বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এটি এমনভাবে দাঁড়িয়ে আছে যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এটি খুব সতর্কতার সঙ্গে সরিয়ে ফেলা উচিত। দ্যা গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। ২০১৭ সালের ১৩ জুন বহুতল ভবনটিতে ভয়াবহ আগুন লাগে। ৪৮ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। এ অগ্নিকা-ে মৃত্যু হয় ৭২ জনের। দুর্ঘটনার চার বছর পর চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ভবনটি। সে কারণেই ভেঙে ফেলার এ সিদ্ধান্ত। ভবনটির সেক্রেটারি রবার্ট জেনরিক বলেন, পশ্চিম লন্ডনের কিংস্টন অলড্রিজ অ্যাকাডেমিসহ স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। হোয়াইট হলের শীর্ষ এক কর্মকর্তা সানডে টাইমসকে বলেন, ভবনটির কাঠামো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য প্রকৌশলীদের নেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ভবনটি নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া দরকার। সরকারি কর্মকর্তারা ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলে ভবনটি ব্লক করে দেবেন এ মাসে। দ্যা মিনিস্ট্রি অব হাউজিং অ্যান্ড লোকাল গভর্নমেন্ট (এমএইচসিএলজি) ২০১৮ সালে ভবনটির মালিকানা নিয়ে নেয়। তারা আশ্বস্ত করে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ২০২২ সালের জুনে, দুর্ঘটনার পাঁচবছর পূর্তির আগেই ক্ষতিপূরণ পাবে। গ্রেনফেল টাওয়ার মেমোরিয়াল কমিশনের পক্ষ থেকে ভবনটির সাইটে দুর্ঘটনায় নিহত, আহত ও বাসিন্দাদের জন্য একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার কথা জানা যায়। গ্রেনফেল ইউনাইটেড নামে ভুক্তভোগীদের একটি সংগঠন অভিযোগ করে বলেছে তারা বিস্মিত, ভবনটি ভবিষ্যতে কী করা হবে সে সম্পর্কে তাদের সঙ্গে পুরোপুরি কোনো আলোচনা করা হয়নি। তারা বিবৃতিতে আরও জানায়, সরকার মাত্র ১০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার শনাক্ত করেছে। কিন্তু কোনো আইনি সমাধান ছাড়াই কীভাবে ভবনটি সরানো হবে? আমাদের সবার জন্য ন্যায়বিচার হওয়া উচিত। চলতি বছর মে মাসে দ্যা অবজার্ভার প্রতিবেদনে জানা যায়, গ্রেনফেল টাওয়ারে অগ্নিকা-ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ভবনটি একটি ‘ভার্টিক্যাল ফরেস্ট’ করার প্রস্তাব করেছিলেন। ২০১৭ সালের জুনে অগ্নিকা-ে নিহতদের পরিবারের প্রত্যেক জনের হিসাব করলে ভবনটি ৭২ অংশে ভাগ করা হতে পারে। সরকারের তরফ থেকে একটি চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে যে, ভবনটির সম্প্রদায়ের মতামত জানার জন্য ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা হবে, যদি এটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলছেন, এ ভবনের সঙ্গে আমাদের অনেক স্মৃতি রয়েছে। আমরা এ ট্রাজেডি কখনো ভুলতে পারবো না। এমএইচসিএলজির মুখপাত্র জানান, আমরা জানি এটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও আবেগের। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। নিরাপত্তার কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমরা অবশ্যই ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলবো এবং ভবিষ্যতে গ্রেনফেল টাওয়ার কী হবে সেটা নির্ধারণ হবে। আমরা আগে শুধু একটি পরামর্শ প্রকাশ করেছি যে, যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের আরও অধিক তথ্য জানা দরকার। ভবনটির ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত পরে জানাবো।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু