ভেড়ার হাজতবাসের ঘটনা হয়তোবা আগে কখনো শুনেননি কেই। তবে আদালতের নির্দেশে যে ভেড়াকেও জামিন নিতে হয় সেটি আরও বিস্ময়কর। এমনি্টিই ঘটেছে খুলনা সদর থানা হাজতে।
আদালতের নির্দেশে তিনমাস পরে মুক্তি মিলেছে দু’টি ভেড়ার।
বুধবার দুপুরে খুলনা মহানগর হাকিম তরিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে ভেড়া দু’টিকে মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছরের ১৮ আগস্ট নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার খামার থেকে চারটি ছাগল ও দু’টি ভেড়া চুরি হয়ে যায়। ২১ আগস্ট ভেড়া দু’টি উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। চুরির ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়।
বিষয়টি জানতে পেরে আদালতে ভেড়া ফেরত পেতে আবেদন করেন শাহীন শেখ। কিন্তু আদালত আবেদন নামঞ্জুর করেন।
তিনি মাস অনেকবার আবেদন করেও ভেড়া ফেরত পাননি তিনি।
এদিকে ভেড়া চুরির ঘটনায় জামিন পেয়ে মুক্ত হয়ে যায় চোর। কিন্তু ভেড়া থেকে যায় সদর থানা পুলিশের হেফাজতে।
থানায় থাকলেও প্রতিদিন ১১ কিলোমিটার পথ দূরে গিয়ে ভেড়ার দেখাশোনা করতো শাহীন। এনিয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের দিন কাটিয়েছেন তিনি। থানার মধ্যেই ভেড়ার বাচ্চা প্রসব হয়ে মরে পড়ে ছিল।
এনিয়ে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। ওই দিনই খুলনার মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে ১৬ নভেম্বর ভেড়া ফেরতের আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেন।
বুধবার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদনটি গ্রহন করে ভেড়া দু’টি ফেরত দিতে নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেন। ওইদিনই খুলনা মহানগর হাকিম ভেড়া দু’টি মালিককে বুঝিয়ে দেন।
দুপুরে ভেড়া ফেরত পেয়ে আদালত চত্বরে কেঁদে ফেলেন ভেড়ার মালিক শাহীন শেখ।
তিনি বলেন, অনেকের কাছে গিয়েছি, আদালতে এসেছি কেউ ভেড়া দু’টি ফেরত দিতে পারেনি। থানায় থাকতে থাকতে ভেড়ার একটি বাচ্চা হয়ে থানাতেই মারা গেছে। সমকালের সংবাদ দেখেই সবাই বুঝতে পেরেছেন এদের মালিক আমি।
শাহীনের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম পান্না বলেন, দেরিতে হলেও ভেড়ার মালিক ন্যায় বিচার পেয়েছে। এই তিন মাসে তার যে ক্ষতি হয়েছে আদালতের উচিত তা প্রদানের ব্যবস্থা করা।
ভবিষ্যতে নিরীহ ব্যক্তিরা যাতে এভাবে হয়রানির শিকার না হয়-সেদিকেও দৃষ্টি দেয়া উচিত।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম