করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ভয় না পেয়ে জনগণকে টিকা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করবো, দয়া করে টিকা নিন… ভয় পাবেন না। এই টিকা অন্তত আপনার জীবন বাঁচাতে পারে। হয়তো আপনি কয়েক দিনের জন্য (ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হলে) ভুগবেন তবে আপনার জীবন রক্ষা পাবে। সেজন্য সকলের কাছে আমার অনুরোধ ভয় না পেয়ে টিকা নিন।’
রবিবার দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে মেডিকেল কলেজে ৪৬০ শয্যার সমন্বিত ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের মানুষের জন্য প্রায় ৩১ কোটি করোনার টিকার ব্যবস্থা করেছে। কেউই টিকা থেকে বঞ্চিত হবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, টিকাদানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নেতিবাচক প্রচারণার পাশাপাশি ইনজেকশনের সুই থেকে সৃষ্ট ব্যথার ভয়ে অনেকেই ভ্যাকসিন নিতে রাজি নন। আমাদের লক্ষ্য হল অপ্রাপ্তবয়স্ক বাদে মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া।
তিনি বলেন, করোনার নতুন ধরণে শিশুদের ঝুকি বেশি। তাই সরকার ১২ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা দেয়া শুরু করেছে। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে তারও কম বয়সীদের টিকা দেয়া শুরু করবো। এই সময়ের মধ্যে আমরা ডাবল ডোজসহ ১৩ কোটিরও বেশি টিকার ডোজ দিয়েছি। পাশাপাশি আমরা বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করেছি। আমি চাই দেশের মানুষ নিরাপদে থাকুক।
করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য শেখ হাসিনা সবাইকে আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘দয়া করে মাস্ক ব্যবহার করুন এবং জনসমাবেশ এড়িয়ে চলুন।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বক্তব্য দেন।
ঢামেক সংস্কার
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (ঢামেক) অনেক পুরনো প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে এর ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ, যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সেখানে একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি যাতে বিশেষায়িত রোগীসহ একসাথে পাঁচ হাজার রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া যায়। আশা করছি, খুব শিগগিরই আমরা নির্মাণকাজ শুরু করতে পারব। কিন্তু বাস্তবতা হলো, হাসপাতালটি পুরোপুরি বন্ধ করে তা করা যাবে না। এটি ধীরে ধীরে করতে হবে।’
বিনামূল্যে চিকিৎসা
এক বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি হ্রাসে সরকারের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন তা ১ দশমিক ৩৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এটা আর কমানোর দরকার নেই। আমাদের তরুণ জনসংখ্যা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম