September 8, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, August 18th, 2023, 8:30 pm

মক্কায় ৭ প্রস্তাবনা আল্লামা মাহমুদুল হাসানের

অনলাইন ডেস্ক :

গত রোববার সৌদিতে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক ইসলামি সম্মেলন। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের তত্ত্বাবধানে মক্কায় বিশে^র আলেমদের নিয়ে এ সম্মেলন শুরু হয়েছে। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ৮৫ দেশের দেড় শতাধিক আলেম ও মুফতি অংশ নিয়েছেন। সৌদি আরবের ইসলাম ও দাওয়াহবিষয়ক মন্ত্রণলায় ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে মধ্যপন্থা, সহাবস্থান জোরদার- সর্বোপরি ঐক্য ও সংহতি প্রসারের লক্ষ্যে ‘সারা বিশ্বের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, মুফতি, মাশায়েখ ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি’ শীর্ষক এ সম্মেলন আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ অথরিটি আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান।

সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ সূত্রে জানা যায়, সাতটি পর্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতির উদ্বোধনী বক্তব্য দিয়েছেন দেশটির ইসলাম ও দাওয়াহবিষয়ক মন্ত্রী শায়খ ড. আবদুল লতিফ আলে শায়খ। এরপর বিভিন্ন প্রতিনিধিদলের প্রধানরা বক্তব্য প্রদান করেন। সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি ও সিনিয় স্কলার্সের প্রধান শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়খ বলেছেন, সৌদি আরব সারাবিশ্বে ইসলাম ও মুসলিমদের সেবায় অনন্য অবস্থান অর্জন করেছে।

আন্তর্জাতিক এ সম্মেলন বিশ্বব্যাপী ইসলাম প্রসারে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। মক্কায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনটি ইসলামের উদার ও সহনশীল মনোভাব এবং সহাবস্থানের বার্তা বহন করে এবং ঘৃণা, সহিংসতা, উগ্রতা পরিহারের আহ্বান জানায়। আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের বাংলাদেশের প্রতিনিধি আল্লামা মাহমুদুল হাসান কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা পেশ করেন। প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে-

১। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দেশ জাঁতি ও ইসলামের জন্য ওলামা-মাশায়েখদের যে আত্মত্যাগ ও কুরবানি রয়েছে, সেগুলো মূল্যায়ন করে আরবি ও ইংরেজি ভাষায় একটি বিশ্বকোষ সংকলন করা।

২। চার মাজহাবের ইমামদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সৌদি সরকারের সুস্পষ্ট বার্তা প্রচার করা। প্রাচ্যবিদ ও তাদের এজেন্টদের পক্ষ হতে ইমামদের ব্যাপারে যেসব অপপ্রচার ও অপবাদ আরোপ করা হয়, চূড়ান্তভাবে তা খ-ন করা এবং নির্ভরযোগ্য চার মাজহাবের বিরুদ্ধে সব তর্কবিতর্ক নিরসনের লক্ষ্যে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কারণ অনুসরণীয় ইমামদের অসম্মান করার প্রবণতা একটি শ্রেণির মধ্যে ক্যানসারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে, যা উম্মাহর শরীরকে ক্ষত-বিক্ষত করে দিচ্ছে এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতির পরিবেশকে কলুষিত করছে।

৩। সমাজে নাস্তিকতা ও ধর্মহীনতার প্রচার-প্রসার ঘটায়- এমন সব প্রোগ্রাম এবং টকশো টেলিভিশন ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় প্রচার বন্ধ করা।

৪। সৌদিতে প্রতি বছর ‘যোগাযোগ ও সংহতি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করা এবং বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে স্থানীয় সম্মেলনের ব্যবস্থা করা।

৫। এই উম্মাহর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মধ্যমপন্থা। এ চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সব মুসলিম রাষ্ট্রে সেমিনারের ব্যবস্থা করা।

৬। বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের জন্য সৌদি সরকারের অর্থায়নে আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়ার অধীনে একটি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।

৭। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স সমমান স্বীকৃতি দিয়েছে। অতএব আমি প্রস্তাবনা পেশ করছি, বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার সনদ মূল্যায়ন করে মদিনা ইউনিভার্সিটিসহ সৌদির ভার্সিটিগুলোতে কওমি ছাত্রদের সরাসরি ভর্তির সুযোগদানে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।