March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, June 6th, 2022, 8:56 pm

মধুখালীতে ২৫ বছর ঘরের অভাবে অন্যের ঘরে বসবাস কৃষ্ণা দত্তের

জেলা প্রতিনিধি, ফরিদপুর :
মানবতার বাতিঘর সাম্যতার প্রতিক উন্নয়নের আলো জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায় হাজার হাজার ভুমি ও গৃহহীন মানুষ জমি ও ঘর পেলেও ষাটোর্ধ্ব বয়সের ভারে নুয়ে পড়া কুষ্ণা দত্ত (কালি দিদি)র ভাগ্যে জোটেনি একটি নতুন ঘর। প্রচন্ড শীত ও বেগবান ঝড়ের মধ্যে মৃত্যুঝুকি মাথায় নিয়ে জরাজীর্ন হেলে যাওয়া পরের ভাঙ্গা ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছে সে।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের কামারখালী বাজারের দক্ষিন পাশ সংলগ্ন একটি ভাঙ্গা ঘরে তার বসবাস। ঘরের খুঠি ভেঙ্গে নুয়ে পড়া বেড়া নেই বললেই চলে, দরজা ভাংগা, জানালা পুরানো কাপড় দিয়ে মুড়ানো ঘরের চালা অধিকাংশ জায়গা ভাঙ্গা নিচ থেকে আকাশ দেখা যায় বৃষ্টিতে পানি পড়ে গায়ের উপর আর্বজনা স্তুপের জরাজীর্ন ঘরে কুষ্ণা দত্ত (কালি দিদি) বাস করে।
জানা যায়, বাগাট ইউনিয়নের উলুকান্দা গ্রামের রবীন্দ্র নাথ দের কন্যা কৃষ্ণা দত্ত (কালি দিদি)’র সাথে ঝিনাইদহ গ্রামের দিলিপ দত্তের সাথে বিয়ে হয়। একটি কণ্যা সন্তান জন্ম নিলে প্রায় ২৫ বছর আগে কন্যাসহ কৃষ্ণা দত্ত (কালি দিদি)কে ফেলে স্বামী দিলিপ কুমার চলে যায়।
কৃষ্ণা দত্ত জানান, স্বামী চলে যাওয়ায় পর সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা মাকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়ি। তখন সমাজের সৎ ও মহৎ হৃদয়ের মানুষ কামারখালী বাজারের মৃত. মোতাহারুল ইসলাম খোকন ভেন্ডার তার ঘরে বিনা ভাড়ায় থাকতে দেয়। বর্তমানে মেয়ে স্বামী সন্তান নিয়ে শশুর বাড়ী সংসার করে। আমার রান্না করার শক্তি নেই। মেয়ের অস্বচ্ছল সংসারে যা জোটে তাই দিয়ে যায়।
রোগ শোক আকড়ে ধরেছে। প্রতিদিন অনেক টাকার ওষুধ খেতে হয়। সারাদিন বিছানায় পড়ে থাকি। দু:চিন্তা কুড়ে কুড়ে খায়। মালিক যদি ঘর থেকে নামিয়ে দেয় তাহলে রাস্তায় পড়ে থাকা ছাড়া কোন উপায় হবেনা। শীতে রাতে পুরানো কাপড় দিয়ে ভাঙ্গা জানালা ঢাকা। এবার ঝড়ের মধ্যে বেচে থাকতে পারব কিনা জানিনা। বৃষ্টি এল ঘর জলে ভেসে যায়। সারারাত বসে থাকি। এত কষ্ট এ বয়সে আর সহ্য হয়না। তাই ভগবান নিয়ে গেলে বেচে যেতাম। কান্না জড়িত কন্ঠে কৃষ্ণা দত্ত বলেন, আমার খোজ কেউ নেই না। পুরানো ঘরে টিনে মরিচা ধরে খসে পড়ছে। বেড়া নেই বললেই চলে। যখন তখন কুকুর বিড়াল ঢুকে পড়ে। মল ত্যাগের কোন ব্যবস্থা নেই। এভাবে বেচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই ভাল।
তার কণ্যা ও জামাই বলেন, আমাদের তাকে ঘর দিয়ে দেবার সামর্থ্য নেই। যদি প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেন তাহলে আমার বাড়ির জমি তাকে লিখে দেব।
আশার সুরে কৃষ্ণা দত্ত বলেন, শুনেছি বঙ্গবন্ধুর কন্যা সবাইকে জায়গা আর ঘর দিচ্ছেন। যদি আমাকে একটি ঘর জায়গা দিত তাহলে জীবনের বাকি দিনগুলো নি:চিন্তায় কাটাতে পারতাম।
প্রতিবেশিরা জানান, কৃষ্ণা দত্ত কালি দিদির জীবন চিত্র জসিমউদ্দিনের আসমানী কবিতাকেও হারমানাবে। প্রতিবেশিরা ভূমি ও গৃহহীন কৃষ্ণা দত্তকে জমি ও ঘর দেবার জন্য সরকারের নিকট দাবী জানান।
কামারখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, বৃদ্ধ হওয়ায় কৃষ্ণা দত্ত আশ্রয়ণ প্রকল্পে যেতে রাজি হচ্ছেনা। আবার তার নিজের কোন জমি নেই। তার জামাইকে বলা হয়েছে তাকে কিছু জমি লিখে দেবার জন্য। দিলে সে যাতে জমি ঘর পাই আমরা সরকারের কাছে তার জন্য আবেদন করব।

শাহ্ মো. ফারুক হোসেন
মধুখালী পরিদপুর সংবাদদাতা
তাং-০৬.০৬.২০২২