খুলনায় নিখোঁজ রহিমা বেগমকে (৫৫) ময়মনসিংহে মৃত অবস্থায় পাওয়ার বিষয়ে পরিবার সন্দেহ প্রকাশ করেছে। রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি সন্দেহ করি এটা আমার মা।’ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), খুলনার দৌলতপুর থানা ও ময়মনসিংহ থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি।
নারী নিখোঁজের ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই। খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে মরিয়মের কথা হয়েছে।
মরিয়ম তাদের জানান, ময়মনসিংহের ফুলপুর এলাকা থেকে তার মায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়মনসিংহ পুলিশ জানায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে তাকে দাফন করা হয়।
তিনি বলেন, ময়মনসিংহে উদ্ধার হওয়া লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
মরিয়ম মান্নান তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানান, লাশের কাপড়ের ছবি দেখে মায়ের লাশ শনাক্ত করেছেন তিনি।
ফুলপুর থানা পুলিশ লাশের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মরিয়মকে শনিবার ফুলপুর থানায় যেতে বলেছেন। সেখানে তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে উদ্ধার করা লাশের ডিএনএর সঙ্গে মেলানো হবে।
এসপি মুশফিকুর বলেন, ‘ডিএনএ মিলে গেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
মহানগরীর দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়ায় গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে বের হন রহিমা খাতুন (৫৫)। দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি আর বাসায় ফেরেননি। পরে মায়ের খোঁজে বের হয়ে সন্তানরা মায়ের ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নেয়ার পর তাকে না পাওয়া গেলে সাধারণ ডায়েরি এবং পরবর্তীতে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন তারা।
গত ২০ দিনেও রহিমার খোঁজ মেলেনি। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের আবেদনে মামলাটি পিবিআইয়ের যাচ্ছে। এ পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ছয় জনকে গ্রেপ্তার করলেও কোনো তথ্য উদঘাটন করা যায়নি।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের আদেশ হয়েছে। কিন্তু ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নথি হস্তান্তর হয়নি। পিবিআই যেদিন চাইবে সেদিনই নথি হস্তান্তর করা হবে। এ জটিলতার কারণে এ মামলায় গৃহবধূর স্বামীর রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। পিবিআই মামলাটি বুঝে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। এ পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল এবং হেলাল শরীফ।
নিখোঁজ রহিমা খাতুনের মেয়ে মরিয়ম মান্নান বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ আমার মায়ের সন্ধান দিতে পারেনি। ফলে ১৩ সেপ্টেম্বর ১৮তম দিনে আমার ছোট বোন আদুরি আক্তার আদালতে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তরের আবেদন করে। শুনানি শেষে ওই দিনই আদালত মামলা পিবিআইতে হস্তান্তরের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক